আত্মোপলব্ধি ও আত্মসমালোচনা । মাসুমা আক্তার রুমা
প্রকাশিত হয়েছে : 29 May 2016, 8:22 am, | ১৯৩২ বার পঠিত

আত্মোপলব্ধি
আমি একটি ছোট্ট পরগাছা, পথের ধারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা একটি শিমুল গাছের তলায় আমার বসবাস| শিমুলের বিশালতার কাছে আমি অতি ক্ষুদ্র| তবুও পরমানন্দে দিন কাটে আমার| গ্রীষ্মের তপ্ত রোদ আমার শরীরে লাগে না, বৈশাখের উৎশৃঙ্খল বাতাস আমার মাথা নোয়াতে পারে না, শীতের শিশির আমাকে ছোঁয়ার অবকাশ পায় না। শিমুল তার ছায়ায় আমায় আগলে রাখে। শিমুলের রূপ, রস, গন্ধ এক একটি শিমুল ফুল হয়ে আমার দৃষ্টিকে আকর্ষণ করে| আমি অবাক হয়ে সে সৌন্দর্যকে ইচ্ছে মতো উপভোগ করি| তার সৌন্দর্যকে নিজের সত্ত্বায় ধারণ করার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে পড়ি| আজকাল নিজেকে আর অবহেলার পাত্র মনে হয় না| আকৃতিতে ছোট হলেও আমার মনের বিশালতা, জানার অসীমতা বেড়েই চলেছে| নিজেকে আর একা মনে হয় না| প্রকৃতির মাঝে খুঁজে পাই ভালবাসা, ভালোলাগার সীমাহীন উৎস| ফুল, পাখি, মেঘ, বৃষ্টি সব কিছুই ভালো লাগে| ভালো লাগে আমার মতো আরও পরগাছাকে| ভালো লাগে নতুনের মাঝে হারিয়ে যেতে, অজানাকে খুঁজতে| এক জোড়া কাকের শরীরে পাই কষ্ট নিংড়ানো পবিত্রতা| সময় বয়ে যায়| আমার বয়স বাড়ে, বাড়ে উচ্চতা,বাড়ে অভিজ্ঞতা| অন্যদিকে শিমুল আরও ডালপালা ছড়িয়ে নিজের জগত টাকে বিস্তৃত করে| আরও শেকড় ছড়িয়ে বীর-দর্পে মাটিকে আঁকড়ে ধরে| আমি স্বপ্ন দেখি-একদিন আমিও এভাবেই মাথা তুলে দাঁড়াবো, নিজের অস্তিত্বকে পরিপক্ব রূপে প্রতিষ্ঠা করবো| হয়তো শিমুল হয়ে নয়, অন্য কোনো রূপে| রূপ, রস,গন্ধকে চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিপ্রায়ে ।
আত্মসমালোচনা
মাঝে মাঝে যখন অবসর পাই একজন
পাঠক-রূপে নিজের লেখাগুলোই আওড়াতে
থাকি,মূল্যায়নেরও চেষ্টা করি| কবিতা মাধ্যমেই
লেখার জগতে আমার অনুপ্রবেশ,আত্মপ্রকাশ| তাই চাইলেও কবিতাকে বেশিদিন ভুলে থাকতে কিংবা দূরে রাখতে পারিনা, তা হোক সে যেমনই| এরপর ছোট গল্প, প্রবন্ধের যাত্রা শুরু| নিজের কাছে মনে হয়েছে-আমার প্রবন্ধের ভাষা ছোট গল্প আর কবিতার ভাষা থেকে অনেক বেশি জোরালোআমি আমার চিন্তা-চেতনাকে যখন কবিতায় রূপ দিতে যাই তখন মনে হয়-চেতনার আংশিক প্রকাশ ঘটলো, বাকিটা পড়ে রইলো নিজ সত্ত্বায় |অথচ যখন প্রবন্ধ লিখতে বসি তখন চেতনার সবটুকুই ছড়িয়ে দিতে পারি,