পূর্বকর্মজাত এবং অন্যান্য কবিতা । সন্তর্পণ ভৌমিক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২:৩১ অপরাহ্ণ, | ৩০ বার পঠিত
দৃশ্যপটক্ষয়
রাত দেখি খণ্ড হয়ে আসে
যখন ঘুমোও তুমি উপপত্নীচরে
আষাঢ়ি বর্ষণ দেখি থেমে যায় হঠাৎ
বহুগামী হয়েছো কি? খুলেছে বরাত?
আমি নীলতরঙ্গের পূর্ণব্যাস দেখি
নীলের ডানায় ভর দিয়ে আজ নাচছে ব্যালেরাণী।
পাথর সহিস
নিরেট মন্দিরে তুমি
বহুকাল বসে আছো
পরান্মুখ নক্ষত্রের উচ্ছিষ্ট যেমন
দিন আসে রাত যায় দেবতার অপেক্ষা তোমার
বিকৃত হয়েছো তুমি
জল সব উবে গেছে কমণ্ডলু থেকে
হাতে কি শিকড় উঠে
পায়ে কি পাথর বাধা আছে?
জিভ নাকি খেয়ে গেছে নরকের সরীসৃপ এসে
এখানে বিশাল দাওয়ায় নরবলি হবে হবে শুনছি বহুদিন
আহা, যার সাথে কথা বলি সে তো দেখি মস্তকবিহীন।
এ কেমন, কেমন তুমি
তোমার মুদ্রাগতি স্থির হয়ে আছে
অবনত নক্ষত্রের পতনের মতো
কারা যেন ঈশ্বরের ঘাটে
খুন হয়ে থাকে রোজ দলিত বিকেলে
কোথায় বিশ্বাস যেন হারিয়েছে খেই
তাই তুমি শ্মশান–শর্তে, দাঁড়াও
আমার ঘোলা আঁখির ‘পরে
আমি খালি পায়ে বারান্দায় হাঁটি
আর দিনরাত গ্রহান্ত পেরিয়ে
নুলো কোনো ভিখারির অপেক্ষায় থাকি।
পূর্বকর্মজাত
ত্রিকাল প্রারব্ধ আসে
প্রত্যহ রোদের মতন (আমার নিদ্রা সুনিবিড়)
লাল নীল ফানুস উড়িয়ে
উড়ে গেল পূর্ব স্মৃতি
অদম্য বিহার আর উদোম দর্শন
অকালে শিশুর মতন পূর্ববৎ আচরণ করি
কেননা জনন ক্ষুধা সর্বগ্রাসী
আমি নাছোড় অতীতে
অতি নত ঘৃন্যতর পশুই ছিলাম
কদাকার, বিস্রস্ত যেমন
ত্যক্ত জনপদে, হেঁটে গেছি নম্রনগ্নপদে
কখনো অজান্তে কেউ তাকায়নি ফিরে।
এক ডিঙি
একগলা জলদুঃখে
একখানা ডিঙি ভেসে থাকে
কয়েকটি স্রোত ছুঁয়ে যায়
আর শুনি ফিসফাস বাতাসের সাথে
নিঃসঙ্গ ভ্রমর আসে
উবু হয়ে খুঁজে পালাগান
আয়না অস্পৃশ্যে দেখে
তবারক জলে ভিজে গেছে
আর, মৃতের ছায়ারা আসে
ছুরি নাড়ে রোদলাগা জলের উপর
কে আসে অত্যন্ত রাতের গভীরে
মৎসমর্ষের জায়া হঠাৎ কি
ভেসে উঠে পদ্মদল ছুঁয়ে
মৃতবৎ শকুনের বিষোদগার দেখে
অন্ধ ডিঙি জন্মে নীরব পুকুরে।
আসন্ন অতীত
তুমি অতিঅন্ধ অতীতের কথা ভাবো
যেখানে সুখের সাথে শোককল্প সময় নিহিত
আর থাকে অন্ধকারে সাপমগ্ন দীর্ঘ যাতায়াত
যেখানে অস্থির হয়ে থাকি
ক্রমশ কাপুরুষ জেগে উঠবে বলে
নদীগন্ধী স্থিরতা আসছে
অতিগূঢ় ধবল প্রবাহে
আমি বাণবেগে ভেসে যাই রহস্য দুয়ারে
খুঁজছি অমূল্য রত্ন পাথর প্রহারে।