রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে… । ঋতো আহমেদ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুন ২০১৯, ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ, | ১০২৩ বার পঠিত
সংক্ষিপ্ত সংবাদ
সব সড়ক খানাখন্দে ভরা
সেবা, নেই বললেই চলে
নির্মাণের আট মাসের মধ্যেই ফুটপাত দখল
বাড়িতে বাড়িতে ডাকাতি
ছিনতাইয়ের অভিযোগ
আধিপত্য বিস্তারের উত্তেজনা, ক্যাম্পাস বন্ধ
নেতা পরিচয়ে জমি দখল
স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শিকার
গণশৌচাগার পরিণত হয়েছে ভাগাড়ে
ধাক্কাধাক্কির বিবাদ, সেই ক্ষোভে খুন
গ্যাস সংকট, নগর জুড়ে দূর্ভোগ
ইয়াবাম্যান আমিন হুদা
বন্দুকযুদ্ধে নিহত আরও আট
পতনের শেষ কোথায়
২৪.০৫.২০১৮
সুবেহ সাদিকের পর
লাশটা নিভে গেছে অনেকক্ষণ
এখন শুধু দীর্ঘশ্বাস, ধোঁয়া—
শেষ রাত অব্দি জেগে থাকবার পর
মেয়েটিও উঠে যায় ঊষর উদল
তারপর শোনা যায় জলের শব্দ—
ফ্ল্যাস.. বারবার
লাশটাও নিভে যায়— নির্জীব— হাওয়া
উদ্ভ্রান্তের মতো উড়ে যেতে গিয়ে
রাতকে শুনিয়েছ আগ্নেয় গান
ও মেয়ে
ও মেয়ে
এমন লাশের বুকে ঝুঁকে-পড়া রক্তিম কৃষ্ণচূড়া
আহত আগুন আগুন
খানখান
২৪.০৫.২০১৮
উভচর
জলের ভেতর পাঠিয়েছি প্রসূন
জলের মধ্যেই মুক্তি
তবেই-না পৃথিবীর তিন ভাগ জল আর এক ভাগ
আবাদ।
জলের ভেতর সাজিয়ে রেখেছি প্রশ্বাস
সাজিয়ে রেখেছি বিস্ময়
রক্তজবার মতো টকটকে
প্রেমিকের মৃত্যুর মতো অতলস্পর্শী— অন্বয়
এখন বলো, কী চাও তুমি
আবাদ ও আজাদের মধ্যে ডুবে, আশ্চর্য তোমার যাপন—
আশ্বাস
বিশ্বাস
এবং
নাভিশ্বাস
০৭.০৬.২০১৮
আশু সাক্ষাৎ বিষয়ক
ভাবছি কোন মুখে যাবো?
যে মুখ পাথরের ছিল, সে মুখ ভেঙে গেছে। আর
যে মুখ জন্মান্ধ, তার চোখে রক্তবীথি—
কোন মুখে যাবো আমি?
যে মুখে পাহাড় আছে
যে মুখে নদী
নিয়ত ক্রান্তীয় ঝড়ে যে মুখ ঢাল হয়ে সয়ে গেছে সব
সেই মুখ ?
নাকি সেই মুখ
যে মুখে রাজপথ—
যে মুখ ইট-কাঠ-কংক্রীট / জঙ্গল?
কোন মুখে যাবো?
হে আমার অন্তর্যামী, হে আমার অগ্নি, আমাকে বলো—
আমাকে দেখাও আলো..
১২.০৬.২০১৮
‘পথ’ ও ‘জল’ বিষয়ক
আবারও সেই পথ, এই পথে এলে—
দমকা বাতাস আঁকো; এঁকে ফ্যালো আস্ত কোনো মঠ;
অরণ্যে আবীর আঁকো; অগোছালো ঈশান
আর,—
একবার
আঁকো নৈঋত ।
কে আছে ঔষধি
কে আর পরম পুরুষ এইবার—
মানুষ মিথ্যে হ’লে ভালো হবে ঈশ্বর— ভালো হয়ে উঠুক
বেহুঁশ—
নামাও অর্ঘ্য— নামাও হে বিষম বিশ্বাস—
আবারও সেই জল, এই করতলে; ফিরে এলে—
কে আর পূণ্য পূত, কে আর পূজ্য
কে আর আশ্রয়— আশ্বাস !
১৭.০৬.২০১৮
আগুন প্রহর
সাঁতরে কোথাও যাবো,—এই ভেবে নামিয়েছ
সময়-সমুদ্র-স্রোত । কিন্তু, কোথায় যাবো আমি !
গন্তব্যের কী নাম কী ঠিকানা কিছুই তো বলো নি;
জানি না সাঁতার কাটার কোনো মন্ত্রও। আমাকে—
দৌলত দিয়েছ
বিদ্যে দিয়েছ
দিয়েছ হাড় ও হাভাত;—
এখন আর নিঃশর্ত নই আমি ।
সাঁতরে কোথাও যাওয়ার,—এই-যে প্রকল্পের কাজ কল্পনায় নিয়েছ,—
হয়েছ ঈশ্বর; আর, শর্ত সাপেক্ষে আমিও তো ঈশ্বর-কণা; অতএব,
এমন বিন্দু বিন্দু নিরবিচ্ছিন্ন স্থান-কাল—নেটওয়ার্ক—
এইসব আগুন প্রহর—
ডুবাও, পোড়াও— এবং ভাসিয়ে দাও হাল
ও আমার প্রণয়-সমুদ্র-কাল, .. ও আমার প্রণয়-সমুদ্র-কাল
১৮.০৬.২০১৮
একটি অঙ্গীকার
দ্বিধা
সংকোচ
সন্দেহ
সংশয়
কুণ্ঠা
লাজ/লজ্জা
ভয়
শঙ্কা
এই-সব আগাছা, পরিষ্কার করো—
এই-সব সব পুড়িয়ে দাও—
এই-সব তুষে বৃষ্টি নামুক আজ—
প্রণয়ের মেঘেরা মিছিল নিয়ে আসুক শহরে
ঝলকে ঝলকে আকাশ উন্মাদ হোক বজ্র-বিদ্যূতে
ভালোবাসার দিব্যি করে বলছি— ইট/কাঠ/কংক্রিটের এই জঙ্গলে ফুল ফুটবে— ফুটবেই
২০.০৬.২০১৮
পাথর, পাগল পারা
কাল রাতের অস্থির ঈর্ষারা এখন আর নেই,—
হয়তোবা উপায়ান্তর না পেয়ে শেষে
চোখের জলের দাগ
হয়েছ;
চোখের মধ্যেই নিজেকে ডুবিয়ে—
নিভিয়ে দিয়েছ প্রপঞ্চ—ও, প্রহেলিকাদের ।
এখন অনেকটাই স্নিগ্ধ,
অনেকটাই শান্ত ও নিরাপদ তোমার দৃষ্টিরা—
আমি দেখতে পাচ্ছি,—তোমার চোখের ধূপ ও ধূন
আমি দেখতে পাচ্ছি ছাই, পোড়া মন ও মনন
দেখতে পাচ্ছি—বুকের বাঁ পাশ খুলে—খুলে রাখা লাল টীপ, আর—
কালচে-নীল
পাথর
বিধ্বস্ত,—পাগল পারা সব পাথর..
২৪.০৬.২০১৮
দ্বৈরথ
ভাঙো; ভেঙে ভেঙেই
ভ্রান্তি আনো ।
এখন লগ্ন এমন; এমন-ই
বিরহে চেনো
আগুন শ্রাবণ ।
উঠো;
এ-ই-ভাবে—এভাবেই
বেড়ে উঠো,—
ভ্রান্তি ভেড়াও নিমগ্নের তান-এ
উষ্ণ হও
প্রবল হও
প্রগলভ হও পথে
এমন সুরঙ্গের পর পৃথিবী অচিন হবে
অগ্নির দ্বৈরথে ।
০৫.০৬.২০১৮
সূর্য উঠুক এবার
আমার মাথায় সূর্য উঠুক এবার।
রাতের রৌদ্রে খোলা পরে থাকা অতৃপ্ত ভোর—অমল বাসনারা,
তোমাদের ধ্যানের ছায়ায় একদিন খুন হয়ে গিয়েছিলাম এই
পৃথিবীতেই;
শেষ কয়েকশত যুগ দেখিনি আলোর মুখ,— তারপর
আলো,, সহ-সমুদ্দুর জল ভেদ করে এসে ভিজিয়ে দিয়েছিল ভুল ও ভূমি—
বদলে দিয়েছিল
আমাদের মাটির রঙ
আমরা এখন উড্ডীন ঘোড়া
আমরা এখন পবন
আমাদের মাথায় সূর্য উঠুক এবার,—খুলে যাক চোখ
ভেসে উঠুক সাপ—শাল—পিয়াল
আর,
মেহগনির সুখ।। আমাদের মাথায় সূর্য উঠুক সূর্য উঠুক
২৯.০৮.২০১৮
পুড়ে যাচ্ছে আগুন
আগুন পুড়ে যাচ্ছে
আধো অন্ধকারে আমার বুকের রক্তের সে আগুন—
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দূরে,
তোমাদের ঘুমের ঘোরে
তোমাদের রিপুর নিপুণ তালে
পুড়ে যাচ্ছে আগুন
পুড়ে যাচ্ছে আমার গোপন মৃত্যুর শ্বাস।
আমাকে ভালোবাসো।
ওঃ আমার দম্ভ, ওঃ আমার আত্মশ্লাঘার ঘাম—
বিদগ্ধ প্রজ্ঞার মতো এসো
দুর্দান্ত দুঃখেরা, এসো আমার দুর্গত সূর্যের নীচে
নীলাভ সবুজ জ্বলজ্বলে জলের শব্দের সাথে
কেঁপে ওঠা অগণন ক্ষুধিত মুখের শব, বিষণ্ণ অস্পৃশ্য মহাদেবও, এসো—
পুড়ে যাও; পুড়ে যাচ্ছে আমার বুকের রক্তের সে আগুন—আহ্ !
২২.১০.২০১৮
ভ্রমরের ডানা
সরীসৃপের মতো বুকে ভর দিয়ে
পুরো একটি শতাব্দী অতিক্রম করে এসছি
এইখানে
একটি উদগ্রীব ফুলের প্রস্ফুটিত পল্লবে
ও আমার চোখ
ও আমার প্রিয়তম চোখের মণি
ফুলের নাম কখনো বেশ্যা হয় না— এই কথা জেনে
বুকের ভেতর শূন্যকে দ্যাখো
আর দেখো
পৃথিবীর দোদুল্যমান মাচায় অদ্ভুত ও সুন্দর ওই ঝিঙে ফুল
আমার পাপ আমার প্রয়াণ—
আমাকে পান করতে দাও আকণ্ঠ
এই পল্লবে
সরীসৃপের পীঠেই আজ গজিয়ে উঠুক ডানা