রতিপুষ্প । অনন্ত সুজন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ আগস্ট ২০১৭, ১০:২২ অপরাহ্ণ, | ১৫৯৮ বার পঠিত

অস্তিত্বঝড়
সময়ের শরীরে হতে পারি সামান্য কোন শামুক-প্রাণ
ধীর, গম্ভীর, অনুমান ও অনুভবের সচল চাকা।
পিঠে রক্তক্ষত, অভিজ্ঞ শ্যাওলার পিচ্ছিলে যার
বহুখণ্ডের ইতিহাস। অনাত্মীয় গন্তব্য দূরগামী
জেনেও জলঘেরা সবুজ ঘাসের ডগায়
প্রণয়-চঞ্চল একাগ্র ফড়িং।
মুখভার সতীর্থদের ঈর্ষার চোখগুলো লাল রক্তকরবী
কাউকেই বলিনি, গদ্যময় পিপাসা-ভ্রমণের কথা —
পাহাড়, অরণ্যমেধা আর সমুদ্রের দক্ষ অভিলাষ
থেকে মাস্তুল তুলেছি। চন্দ্রগলিত জ্যোৎস্নার সাথে
তাই শিল্পের খেলা খেলি!
যাচাই-যন্ত্র বিকল হলেও অস্তিত্বের সাথেই কেবল
সহমরণে যাবো। পূবের নন্দন পশ্চিমের গোধূলিতে
চিরবিশ্রামে গেলে দেখবে, একটি নাম সপ্তর্ষিমণ্ডলের
জ্বলজ্বলে অধিপতি — ভূগোল রক্ষা করছে। যেমন,
স্তনের গোপনে অন্তহীন উদ্দীপক তিলের মহিমা!
বাংলাদেশ
দস্যু দিয়েছে ঝাঁপ, শতরঞ্জি ফুল-ঘ্রাণ
গতরগঞ্জে তোর! জন্মভূমি আমার একমাত্র
আদরের ছোট বোন। মসজিদ, মন্দির ও গির্জার
ছায়াতলে মৃত্যুর আগেই প্রস্তুতি নেয়া ভোরের
পবিত্র পাখি। ডানার পরতে পরতে বেদনাভরা
কাবার পাথর। শোভিত বেণীতে জলফড়িং, প্রজাপতি
নিয়ম করে প্রতি ওয়াক্তে কাঁদে রোজ!
বাতাসে চাপাতির শব্দ,মুখোশের আড়ালে
ফাঁদপাতা অসংখ্য মুখ! রক্ত ছড়ানো ভয়
ঘিরে আছে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল!
লাল-সবুজের পতাকায় সপেছি প্রাণ, নির্ঘুম
শংকা তবুও, বুকের ওড়না কেড়ে নেয় যদি!
রতিপুষ্প
ছায়া বিনিময় হয় নির্জন নিধুবনে — তাই
রাত্রির ক্যামেরা দৃশ্য শিকারে দক্ষ জাদুকর
অবশ্য নিবিড় রোমন্থন অনুরূপ ভ্রমণের
পুলক সঞ্চার ও প্রদানে প্রায় সমান উপভোগ্য!
আবার কখনো,ধারনার অনেক উঁচুতে
পৌঁছে গেলে মেঘের অন্তরালে নিখোঁজ হওয়া
বিমানের উদাহরণ তাসের আসর জমায়।
পৃথিবীর তিন ভাগ জল ঘুরে এসে দেখি —
স্থলের উপরিভাগে উড়ছে নিষিদ্ধ নিশান!
অবদমনের অস্ফুট আর্তিতে ব্যাকুল বিরহবাতাস
ঘামের সমুদ্রে ভাসে পারফিউমভর্তি জাহাজ।