অনন্ত গান । অনন্ত সুজন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫, ২:৪৫ অপরাহ্ণ, | ৩০১৯ বার পঠিত
জলধি তোমার রূপের কথা
. ছড়ালো বারোমাসে
দিন চলে যায়,রাত চলে যায়
. আমূল সর্বনাশে ।।
চাঁদটা তোমার তিল ছিলো
তিলের মাঝে বিল ছিলো
বিলের ভেতর উড়ছে পাখি
. দেখে শিকারি ।।
এখন আমি অন্য মানুষ
. অন্ধ ভিখেরি ।।
. খোঁপার মুদ্রা খোলো
. সমুদ্রে ঢেউ তোল
ঢেউয়ে ঢেউয়ে হারায় নাবিক
. ভেবে নিরুদ্দেশ ।।
এখন আমি বালুকা বেলার
. সূর্যাস্তের রেশ ।।
২.
কিছু ভুল ফুল হয়ে ফোটে
কিছু দূরত্ব গুরুত্ব বাড়ায়
কেউ পড়েছে ধরা-যদি রটে
অনুভবে কেউ সামনে দাঁড়ায়
তাকেই প্রেম বলে
প্রেম তাকেই বলে ।।
ভাবতে পারো—
তুমি-আমি ভাসছি জলহীন সমুদ্রে
জড়তার রেখা মুছে লাল আবেগে
একই অসুখ আর না বলা কথা নিয়ে
যেন হঠাৎ মুখোমুখি ঘুমের অভিযোগে
তাকেই প্রেম বলে
প্রেম তাকেই বলে ।।
ধরে নাও—
সবুজ শিহরণে বিনা বর্ষায় ভিজে ব্যাকুল
আবার কখনো বাস্প হয়ে ওড়ছি চন্দ্রতারায়
যেখানে নেই দিন,নেই কোন রাত
নিখোঁজ হবার অভিপ্রায়ে মেতেছি রিরংসায়
তাকেই প্রেম বলে
প্রেম তাকেই বলে ।।
৩.
মেঘ তুমি নীলিমার নাও
মাঝি ছাড়া আকশগঙ্গা
কীভাবে পাড়ি দাও ?
আমিও তোমার মতো
ফেরি করি কথা যতো
নিজেরই অজান্তে হচ্ছি উধাও ।।
বাতাস ছাড়াই দোলে উঠি
ফুল না হয়েও সুগন্ধ ছড়াই
যেন পৃথিবীতে একটাই ঋতু
অনুভব জুড়ে বসন্তের বাড়ি
হাত বাড়ালেই দিতে পারি
আমার উষ্ণতা ধার নিয়ে
অবিরাম করছে আলোর বড়াই
ঐ যে দূরের সৌর লড়াই ।।
প্রণয়ের জলে সবই রঙ্গিন
ইচ্ছের ঢেউয়ে ভাসছে রঙধনু
যেন ছড়ানো আমারই কণ্ঠহার
বহুপ্রেমে থৈ থৈ অবাক বাহার
সন্ধ্যা এসে তুমুল উসকে দেয়
আঁচল থেকে উড়ে যায় জোছনা
রাতের শোভাকর চন্দ্রের আহার ।।
৪.
থাকো তুমি প্রতিবেশী বাড়ির
. দো’তলা জানালায়
যাকে একদিন না দেখলে
. দু’দিন আয়ু কমে যায়
আমি যে পড়েছি লাল ভালোবাসায় ।।
ছুঁতে পারো মেঘের কোলাহল
দূরের সবুজে চিত্রিত ঝর্ণাজল
অধরা আকাশের সবটুকু নীল
রঙধনু হয়ে আনন্দ দেবো
উসকে দিয়ে কথার মিছিল ।।
একহাতে জোছনা,অন্যহাতে গোধূলি
বাতাসে পাঠাই বাসনার অহি
দাবীতে অনড় পিপাসা পরিবাহী
মানবোনা না পাবার দীর্ঘশ্বাস
তোমাকে ঘিরেই জেগেছে সন্ত্রাস ।।
৫.
আমি আগুনের সাথে খেলা করা
. —রঙ্গিন যুবক
জলের আঘাতে পুড়ে যাওয়া
. —অবুঝ কুহক
আমাকে তাই দেখিওনা আগুনের ভয়
কিছু কথা থাকে এমন বুঝাবার নয় ।।
আয়না দেখেও যায় না চেনা এই আমাকে
বিষাদরেণু ফুটেছে ঐ সিঁথির সিঁদুরে
রাতের যাতনা সব জমছে ভোরে
দেখি তাকিয়ে,বিষণ্ণ বাতাসে উড়ছে খবর
অচেনা ছায়ার কাছে তুমি লুণ্ঠিত
অনিচ্ছার কাছে সপেছ ইচ্ছের কবর ।।
ভুলেও কখনো চাইনি এমন করুন বিভাজন
দুই মেরুতে একই বিরহ ছিলনা প্রয়োজন
বড় নিঃসঙ্গ-বধির আমি,চেয়না হিম
আমাকে তাই একাই থাকতে দাও
বেদনার পাহাড় শুধুই আমার
পারলে আরও কিছু দাও ।।
৬.
সেই পথে চেয়ে থাকি
যে পথে তোমার বাড়ি
বহুদিন দেখা নেই,যেন
চাঁদের সাথে জোছনার আড়ি
বসন্ত ঘিরেছে,দক্ষিণের বাতাসে
আর নয় লুকোচুরি খেলা
এসো,ছায়া বিনিময় করি
দু’জনে ভাসাই আনন্দের ভেলা ।।
অভিমান সব শুষে নেবো
ফিরিয়ে দেবার আগুণগুলো
কথার মহিমায় ভিজিয়ে দেবো
অবহেলার আঘাতে হৃদয়ে যদি
থেকে যায় বরফের হিম
রৌদ্র হয়ে দেবো হানা
আজ মানবো না কোন মানা
তোমাতে অস্ত যাবো
কেউ খুঁজেও পাবে না ।।
দেখো,দ্বিধার পাহাড় গুঁড়িয়ে
আলিঙ্গনের দু’হাত বাড়িয়ে
নিজেকে করেছি উজার
একটু না-হয় হয়েছে দেরি
. তোমাকে বোঝার
চুল খুলে মুছে দেবো ভুল
হয়েছি ব্যাকুল সেই অধরার ফুল
চোখের জলে ধুয়ে দেবো ক্ষত
আমাকে ঘিরে তোমার বিরহ যত ।।
বসন্ত ঘিরেছে,দক্ষিণের বাতাস
আর নয় লুকোচুরি খেলা
৭.
মেয়ে তোর বয়স কত বল ?
অঙ্গভরা লাজুক লতা
হাজার রঙয়ের ছল
কোমরেতে গাঙয়ের নাচন
ওড়নায় ঢাকিস নজর
আমার ভেতর রোদ উঠেছে
দেহে বইছে ঝড় ।।
ইশারাতে নবীন আলো
দিবাকরও বলে ভালো
পাড়া-পড়শি কয়
সকাল,দুপুর বিকেল বেলা
রূপের নদী বয়
তোর বেণীতে ফুলদানি
অচিন ফুলের ভীড়
জানতো যদি গ্রহ-তারা
ভিক্ষা চাইতো নীড় ।।
যে চোখেতে তোরে দেখি
সওয়াব বাড়ে বান্দার
সেই চোখটা সরাই যদি
জগৎ জুড়ে আন্ধার
তোর পরাণের মন্দিরা
প্রাণ বন্দরে বাজে
নোঙ্গর ফেলতে যুবকদল
পরম যত্নে সাজে
তোর প্রেমেতে পাগল হইয়া
মন বসে না কাজে ।।
৮.
দুনিয়াটা আজব মেলা
৫২ তাসে ৫৩ খেলা ।।
কোনটা ভালো,কোনটা মন্দ
. চেনা ভীষণ দায়
কোনটা আন্ধার,কোনটা আলো
. কে দেখাবে হায় ।।
যেই জলেতে লবণ নাই
সমুদ্র তারে বলে না
বিবেকেতে জং ধরিলে
মানুষ সে আর থাকে না ।।
সর্পরূপে খোলস বদলায়
. এ কি বেহাল ক্ষয় !
অচল হয়ে সচল থাকতে
. ধরছে অভিনয় ।।
দিকে দিকে বাতাস কালো
. চক্ষুতে সংশয়
দূরবীন দিয়া মানুষ খুঁজি
. হইয়া নিরাশ্রয় ।।