এক গুচ্ছ কবিতা । খালেদ উদ-দীন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন ২০১৭, ২:০২ পূর্বাহ্ণ, | ১৩৭০ বার পঠিত
হাওয়া বাড়ি
ফু দিয়ে যখন উড়িয়ে দিয়েছি — সংসার, হিসেবি খাতা। তখন থেকে হাওয়াই আমার বাড়িঘর। হাওয়ায় ভেসে ভেসে যখন তোমার বাড়ির পাশ দিয়ে যাই—
ডানায় আর উড়ার শক্তি থাকে না।
ইচ্ছে করে নেমে যাই তোমার বাড়ির ছাদে, ছোবল দিয়ে তুলে নিয়ে যাই।
তোমার যদি কোনদিন বাতাসে ভাসতে ইচ্ছা করে, তবে এসো — আকাশে কোথাও ঘর বাঁধব। আবার সংসারী হবো।
পাখি ও যুদ্ধ বিমান
সিরিয়ার আকাশে একপাল পাখি উড়ছিলো। পাখিদের একটানা দলবেঁধে খেলা করার দৃশ্য খুব উপভোগ করছিল আনজুম ওলিন। ডানাওলা পাখিদের স্বাধীনতায় সেও মিশে গিয়েছিল অনন্তে। বাশার মিত্রদের পাখি আর শিশুদের পছন্দ নয়। তাদের প্রিয় রক্তখেলায় তখন যুক্ত হলো নতুন কেনা মিসাইল।
ফিনকী দিয়ে লাল পাপড়ির মতো ছড়িয়ে পরছিলো আনজুম ওলিনের রক্ত। আকাশে খেলাকরা দলের একটা পাখি খসে পড়া একটা ডানার অভাবে কাতরাচ্ছিল পাশে।
ওলিনের খুব ইচ্ছে করছিল পাখিটাকে অাকাশে উড়িয়ে দিতে।
আমি ও মহাকাল
স্বপ্ন শুয়েছিল স্রোতময় নদীর ভাসমান কচুঁরিপনার ওপর, ভাসছিল সে দূরে যাবে বলে — অচেনা নগরে। অচেনা নগরে কোনো নদী ছিল না। স্বপ্ন নিমজ্জিত হলো সাগরে,
উথালপাতাল ঢেউয়ে সে মিশে গিয়েছিল—
একটা পাখি উপর থেকে এই খেলা দেখছিল আর হাসছিল।
শিল্পসাহিত্য
কলাবউ আড়ালে থাকে; ইশারায় ডাকে,
কেবল দৌড়াই। খুঁজি—
কলাবউ এসো, ঘর বাঁধি।
সুনামি
আচমকা ফুসে ওঠা জলের ঝড়ে কাপলো ভোরের রোদ। জলের তীব্র স্রোতে ভাসতে থাকলো সব যত্রতত্র। মায়ায় ভরা ফুটানি — বাড়িঘর আসবাব, হরেক রকম গাড়ি।
চিত্রশালায় ব্যবহৃত রঙ ও রঙের প্রসাধনী।
শক্ত ইমারতের পানশালায় গতরাতে আটকেপরা কবির ঘুম ভাঙলে — কাঁচের ভিতর থেকে দেখা জলঢেউয়ের সাথে কবিরও ভেসে যেতে ইচ্ছা হলো খুব।
বৈষম্য আর অমানবিকে বড্ড পেরেশান লাগছে সময়।