নাম তার ব্রতচারী আন্দোলন ( ভিডিও )
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ১০:৩০ অপরাহ্ণ, | ৩১৯০ বার পঠিত
উনিশ শ’ ত্রিশের দশক, ব্রিটিশ শাসন। তখন থেকে বছর ত্রিশেক আগে বাঙলা বিভক্ত হলেও, তখন যুক্ত, রবীন্দ্রনাথ জীবিত। দেশে লাগলো এক প্রবল ঢেউ। নাম তার ব্রতচারী আন্দোলন। সিলেট জেলার কুশিয়ারা নদী-পারের বীরশ্রী গ্রামের ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ গুরুসদয় দত্ত ১৯৩২ সালে এই আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনা করেন। ব্রিটিশ ভারতের নাগরিকদের মধ্যে দেশপ্রেম, জাতীয় চেতনা ও নাগরিকত্ববোধ তৈরী করা ছিলো এ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য।
ব্রতচারী আন্দোলনে ভুক্তির জন্য প্রথমে তিনটি উক্তি স্বীকার করে নিতে হতো, উক্তিগুলো হলো:
আমি বাঙলাকে ভালবাসি।
আমি বাঙলার সেবা করবো।
আমি বাঙলা ব্রতচারী হবো।
ব্রতচারী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিলো বাঙ্গালী ব্রতচারীদেরকে জ্ঞান, শ্রম, সত্য, ঐক্য ও আনন্দের সাথে জীবনযাপনের পথপ্রদর্শন করা। ব্রতচারীদের সত্যনিষ্ঠা, সংযম, অধ্যবসায় ও আত্মনির্ভরতা ছিলো এ আন্দোলনের অন্যতম বৈশিষ্ট। ঐক্যবদ্ধভাবে লোকনৃত্য ও লোকসঙ্গীত চর্চার মাধ্যমে মানসিক ও আত্মিক বিকাশ লাভ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা ছিলো এ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য। বিশ্ব মানব হওয়ার লক্ষ্যে শাম্বত বাঙ্গালী হওয়ার উদাত্ত্ব আহ্বান জানিয়ে এ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা গুরুসদয় দত্ত লিখেনঃ
“ষোল আনা বাঙ্গালি হ’
বিশ্ব মানব হবি যদি
শাশ্বত বাঙ্গালি হ’ ”
বাঙলার নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজস্ব শিল্পধারা, নিজস্ব কলা, নিজস্ব নৃত্য, নিজস্ব গীত, নিজস্ব ভাব, ছন্দ, ধারা ও রূপ- এমনকি বাঙলার পল্লীর ধুলিবালিকণা পর্যন্ত বাঙলার ব্রতচারীর কাছে পরম পবিত্র। বাঙলার ভূমি প্রেমের চেতনাকে প্রত্যেক বাঙালি বালক-বালিকা ও নর-নারীর প্রাণে জাগ্রত করে ব্রতচারী নাশ করতে পারে বর্তমান যুগের করাল সাম্প্রদায়িকতা রাক্ষসীকে। আর এই অনুচেষ্টায় সমান স্থান হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান, বৌদ্ধ এবং আদিবাসীদের।
এ দুর্ভাগা দেশের দুঃখের তপস্যা কবে শেষ হবে জানিনা। তবে যেদিন বাংলাদেশ সবদিক দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে সেদিন তারুন্যে দীপ্ত, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত, সাংস্কৃতিক প্রত্যয়ে বলিষ্ঠ, ব্রতের শক্তিতে বলীয়ান, আত্ম প্রত্যয়ে দেদীপ্যমান একদল সুয্যসৈনিক ব্রতচারীকেই হয়তো আমরা সামনে পাবো। আমরা আমাদের সম্পদ নিয়ে বেঁচে থাকবো। বেঁচে থাক আমার তাল, তমাল, নিম, অশ্বথ, বট। বেঁচে থাক আমার সোনালী ধানের ক্ষেত, সোনালী আঁশের পাট-ক্ষেত, নদী আর সুন্দরবন। বেঁচে থাক আমার খয়েরী হাঁস আর চালধোয়া হাত। বেঁচে থাক মেহনতি জনতা, বেঁচে থাক বাঙলাদেশ; জয় সোনার বাঙলা।
ব্রতাচারীর খুব ছোট একটা অংশ যা ‘নগরনাট’ পরিবেশন করে। পরিচালনায় থাকেন : অচ্যুত চক্রবর্তী বর্ষণ। নাটিকাটিতে অংশগ্রহণ করেন : বর্ষণ, রনি, হৃদয়, সপ্ত, প্রান্তর, জয়, আরিফ ও বিপ্র। আবহ সঙ্গীতঃ অরুপ,উজ্জল, তানভীর ও মিথিলা