নাগরিক জীবনের দুই কবি, ইমরুল আর ভাস্কর । আবু তাহের তারেক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ অক্টোবর ২০১৬, ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ, | ২৬৯৪ বার পঠিত
বাংলাদেশের কবি ইমরুল হাসান আর ভারতের বাংলা ভাষার কবি ভাস্কর চক্রবর্তী, দুজনেরই লেখালেখি শহুরে, মধ্যবিত্ত জীবনরে লইয়া।
ভাস্কর ভারতের অধীনস্ত, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের লোক। উনার কবিতায় বিবর্ণ, হতাশ মধ্যবিত্তদের নিত্য আসা যাওয়া। রুটহীন মধ্যবিত্তরে তিনি ন্যারেইট করছেন একঘেয়ে হারমোনিয়ামের সুরে, ওখানকার প্রচলিত সাহিত্যের ভাষাসম্পদ লইয়াই। ফলে তাঁর প্রয়োজন পড়ছে শব্দ হাতড়ানোর। যেমন তিনি বলেন : মুখগুলো যেন জাপানি অক্ষর। …
ইমরুলের শহর গড়ে উঠছে বিচিত্র পেশার ও এলাকার মানুষের সমন্বয়ে; স্বাধীন বাংলাদেশে। তিনি আপনার শহুরে চোখরে, রাইসরিষার মিহি দানার দিকেও ফিরাইতে পারেন অনায়াসে। .. তাঁর শহরের বর্ণনায় আধুনিক হইবার ডরভয় কম। ইসথেটিক্সরে কেয়ার করাকরি কম। ফলে তিনি চুদাচুদি থেকে শুরু কইরা জীবনের ব্রাত্য, লোকায়ত শব্দসম্ভারে তাঁর কবিতারে আঙ্গুরের মত টসটসা করছেন। সবজির মত সতেজ করছেন।
তাই, ভাস্করের কবিতা পড়তে গিয়া যে কারণে ক্লান্তি লাগে, ইমরুলে সে কারণে তেমন হয়না। ভাস্করের ফ্ল্যাট কবিতায় ইমেজ আর শব্দের আনাগোনাই মুখ্য, যেগুলো আপনার ভিত্রে একধরণের হাহাকার জাগায়। তাই ভাস্কর ডিফিনিটিভ।
ইমরুলে, হইছে কী; অভিভূত হইবার অবকাশ থাকে। আনপ্রেডিকট্যাবিলিটি থাকে। অতি অবশ্যই উইট এন্ড হিউমার/রসও থাকে।
ইমরুল বাংলাদেশের, নতুন; গড়ে উঠতে থাকা শহরের নাড়ীর স্পন্দনগুলো ধরতে চাইতেছেন তাঁর কবিতায়। ভাস্কর, বৃহত ভারতের একটি রাজ্যের, শহরের আশাহীন মানুষের জীবনের; ক্ল্যাসিক্যাল দুঃখের গান গাইছেন- উনাদের জীবনের স্পন্দনরে সাহত্যিক আল্পনায় রং মাখাইয়া। ..আমি উনাদের দুইজনরেই ভালোবাসি।