উদ্ভাসিত বর্ণতরী । শিবলী মোকতাদির
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জানুয়ারি ২০১৬, ৬:০৯ অপরাহ্ণ, | ২২২৯ বার পঠিত

উদ্ভাসিত আলোর মেলায়
ঘটনাচক্রে ঘটনার আগে পিছনে দেখছি যাকে
অধিকাংশই কাহিনির কারা-দুর্ভোগে ভুগে ভুগে
এসেছে সেতুর বন্ধন দিতে সম্প্রীতি মৈত্রীর
সূচনা — বদ্ধ শুষ্ক পাতার পড়ন্ত বৈশাখে।
কেউ-বা তাদের দিক হতে আসা পূর্ব কি দক্ষিণে
সভ্যভব্য লক্ষ্মীছাড়া ত্যাগী আর জ্ঞানী আলোকহারা
একই বিশ্বাসে জমতে থাকে বাণিজ্য-বাতাসে
ভক্তে ভক্তে শক্ত সদয় আলোচ্য এই দিনে।
যত জাতি তার তত সংঘের সমাগম প্রাঙ্গণে
কমলা, কাফি, পীত-পাণ্ডুর তর্কে সু-পণ্ডিত
মানুষে মানুষে ছয়লাব মাতা-পিতা আর পড়শীতে
শাসনে আসনে ধর্মে-প্রথায় বাহিত আলিঙ্গনে।
কিছু কিছু তার দাঙ্গা দায়ী সমরাস্ত্রের ঝাঁপি
খুলেই ডাকছে অর্থ এবং যৌনশাস্ত্র যদি;
বিফল করে মাংসেই রাখুন নিত্য শাকাহারী
লতা-গুল্মের গুণের গুণীন জাগ্রত সংলাপে।
তারই পশ্চিমে হরেক রঙের ফলেই ফলাকার
শ্রুতিফল মুখে কষ্টা-কষা ভাগে-গুণে, যোগফলে
জলের জন্য কৃতজ্ঞ কেউ মদের মদিরাতে
বিনিময় প্রথা উগ্র, আজব চিনিবালি একাকার।
কেউ-বা রসের রপ্তানিকার আধো আধো গুলবাজ
খিস্তি দিচ্ছে লম্বা মোটা কুমিরের লেজে তা
হাতির মূল্য সাদা-কালো ভেদে একান্ন তেজপাতা
গুরু তো সদায় শূন্য অঙ্কে গেরুয়ায় ঢাকে সাজ।
তবু হচ্ছে চরকি-চোদন কামে জাগা এক মন
চামে চামে হাত দিচ্ছে যথায় অক্ষরে দিয়ে পা
পিছলে যাচ্ছে স্বাক্ষরহীনা উঁচুনিচু জ্ঞানীজন
মহিলা মাত্র ডাকে আর কাঁদে আলিফ-লায়লা শোন।
নানান ঢঙ্গে যাত্রা-ফাত্রা হেথা মাইকেল মিসিবাবা
চলছে গেলাসে বিক্রি-বাট্টা রক্তে লালিত ঘোল
পুঁজের মধ্যে মুক্ত পায়েস পুষ্পের মুখে ফলা
পূর্ব ডাকছে চিরকাল পিছে, পশ্চিমে গেলে কাবা।
এত এত সব মানবপীড়ন মেলাকে কেন্দ্র ক’রে
হেঁজিপেঁজি যত খর্ব-খাটো রূপেও তো ঠিক তত
ঘুরছে ঘোরের ভিত্তি এবং বাক্যবদ্ধ ছলে —
বাহিরে ডাকছে রবীন্দ্রনাথ ভিতরে যাসনে ওরে!
বেগের বর্ণমালা
‘পূর্ণ পলায়নের পরবর্তী পর্যায়’ — এমনই এক রসালো প্রবন্ধের
পাঠ-প্রকল্পের প্রদত্ত শিক্ষিকা তুমি —
উৎকৃষ্ট আলেয়ার আচরণে, ফাঁকি দেয়া জিনের জালিয়াতি ভেদ করে
ছুটে যেতে চাও — কেন তবে পূর্বদিবসের আগে;
দুই হাতে মদ ও মাল্যের উপঢৌকনে, পাহাড়ের প্রান্তে,
পলাশীপত্রে রচিত — নিষিদ্ধ আমার-এ পান্থ কারবারে।
যেথা উত্তমপুরুষে, মুণ্ডিত মস্তকে;
বজ্রের বন্ধনে বসে আছি আমি।
সারাদেহে তোমার বেগের বিলাসিতা,
তাদের সংকেত ও সংঘর্ষের ভোকাবুলি
আর কী আজবগন্ধী এক পলায়নপ্রার্থীর পথছায়া
তোমাকে আবিষ্ট করে রাখে — প্রত্যহ, প্রতিদিন।
অথচ আমার পরিত্যক্ত কাল,
নিভে যাওয়া সব উদ্দেশ্য-বিধেয়
শূন্যসজ্জিত এই তীরাঞ্চল —
ভগ্ন শাস্ত্র ও সংখ্যার চাপে, মনে হয়;
ভুয়া কোনো এক তৈলাক্ত, মলিন মানচিত্রের অধিকারী হয়ে আছে
অযথাই, আধুনিক এই কালে!
শিরোনামে সম্পাদিত
প্রচলিত অণুর ভিতরে অনুবাদে জেগে আছো
নিরীহ গানের সুরে
দক্ষিণে সে স্বরচিত নারী, পাশে — প্রশ্নে জর্জরিত
দ্বিধাগ্রস্থ সহকারী।
দিয়েছো শ্রাবণ সেই ফাঁকে — ঘটনায় শান্ত নদী
আর চেনা মুগ্ধ বাঁকে
বিপরীতে ভুল, মন্দভাবে ধেয়ে আসা ধৃত মেঘে
ছায়া তবু ভেসে যাবে।
যদি-না বাতাস সমর্থনে ঘিরে রাখে একতায়
করে মেঘ অন্য মানে
ফলে তারা দেহের পশ্চাতে দলে-দলে ভ্রাম্যমান
দৃশ্যায়িত আজ রাতে।
দূরে থাকে বাঁকা বনভূমি, শাদা ও শ্রাবণ রঙে
বিবিধ গঠনে তুমি
আলোচ্য আকাশে অকারণে তবু ডাকো স্নিগ্ধ-হাতে
বর্ষা ঋতু যার টানে।
রূপকে রূপের ভিন্ন মানে, আহা রূপ! যুক্ত দেহে
মৌন শত অভিমানে
শূন্যে রাখো, চিহ্নে — নারীগত, পূর্ব হতে পশ্চিমে সে
শিরোনামে সম্পাদিত।