রাশপ্রিন্ট শুভানুধ্যায়ী সম্মিলন ২০১৫
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জানুয়ারি ২০১৬, ৫:৩২ অপরাহ্ণ, | ২২৮৬ বার পঠিত
মাহি রহমান : বছরের অন্তিম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ওয়েবপত্রিকা ‘রাশপ্রিন্ট’ আয়োজিত শুভানুধ্যায়ী সম্মিলন। গত ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের অবকাশে দিনব্যাপী রাশপ্রিন্ট সম্মিলক কার্যক্রমসূচিতে একাধিক অনুষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল স্কুলপড়ুয়া কিশোরকিশোরীদের অংশগ্রহণে ক্যুইজ্ ও ক্রীড়াভিত্তিক প্রতিযোগ ‘কৈশোরকাকলি’ এবং নগরীর সুধীজন তথা রাশপ্রিন্ট-শুভানুধ্যায়ীদের সমবেত স্বতঃস্ফূর্ততায় বিশেষ আলোচনাবৈঠকী।
দিনের শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা জমায়েত হতে শুরু করেন বৈঠকভেন্যুতে। রাশপ্রিন্ট ডেস্কের কন্ট্রিবিউটরবৃন্দ ছাড়াও অডিয়েন্সগ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন জনা-বিশেক শ্রোতা, যারা আলোচনাকালীন মতামতচক্রে সক্রিয় হয়েছিলেন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে। মূল আলোচনাপর্বে অংশগ্রহণ করেন সিলেটের অগ্রগণ্য সাংবাদিক ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও দয়ামীর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত শাহ ফরিদী, বাংলাদেশের কবিতায় সাম্প্রতিক প্রতিষ্ঠাপ্রাপ্ত কবিদের মধ্যে স্বনামখ্যাত কবি জাকির জাফরান, কবি ও মহাবিদ্যালয়িক পদার্থবিজ্ঞানশাস্ত্রীয় প্রভাষক হাসান শাহরিয়ার, ‘দি ডেইলি সিলেট ডট কম্’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক কে. এ. রহিম সাবলু, সংবাদজীবী মারুফ হাসান, কবি ও গল্পকার দেলোয়ার হোসাইন, কবি অবনী নাজমিন, অসরকারি প্রতিষ্ঠানের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও জীবিকাকৌশল সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত পেশাজীবী-প্রতিনিধি জাহেদ আহমদ প্রমুখ। বৈঠকীর সূত্রধর হিশেবে দায়িত্ব পালন করেন রাশপ্রিন্ট ওয়েবম্যাগ-সঞ্চালক আহমদ সায়েম।
বৈঠকীর আলাপধারার ভিতর ঘুরেফিরে অনলাইনকেন্দ্রী মিডিয়া চালনার সাম্প্রতিক প্রবণতা, সার্বিক অগ্রগতিচিত্র, প্রকাশসৌষ্ঠবের উন্নয়নগত সম্ভাবনা, আঙ্গিকগত উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি পাঠকৃতিগত সমৃদ্ধি আনয়নের পন্থা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচকদের মনোযোগ দিতে লক্ষ করা যায়। বিশেষভাবেই অনলাইন প্রকাশনার সাম্প্রতিক হুজুগ, এর হুজ্জোতি, নির্বিচার ও নির্বক্তব্য কন্টেন্ট প্রচারের ভোগান্তি নিয়ে বক্তারা যার যার অবস্থান থেকে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। অতি সম্প্রতি অনলাইন পত্রিকা প্রকাশনার নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং এর সুফল-শঙ্কা প্রভৃতি দিক নিয়েও বৈঠকে বক্তারা আলোচনা করেন। ওয়েবম্যাগের ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক উৎসগত নিয়মিত যোগানের অপ্রতুলতা হেতু পত্রিকাবিকাশের সঙ্কট, সীমা ও উত্তরণগত সম্ভাবনা নিয়ে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল বৈঠকের একটি বিশেষ অংশ। অনলাইন পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে প্যাট্রন্-ক্লায়েন্ট রিলেশনশিপের ওপর ভর করে একটি পত্রিকা আদৌ সর্বাঙ্গ সচল থাকা সম্ভব কি না, অ্যামেচার কায়দায় পত্রিকা আপ্লোড করার বিবিধ অসুবিধা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠান-আনুকূল্যহীন ছোটকাগজের ন্যায় এর কিছু সুবিধার দিক নিয়েও বৈঠকে জোর আলোচনা হয়।
‘দি ডেইলি সিলেট ডট কম্’ পত্রিকা দফতরের অভ্যর্থনাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকীতে রাশপ্রিন্ট ওয়েবম্যাগের নিয়মিত প্রদায়ক মাহি রহমান, সুবর্ণ বাগচী, ইকরা ইশতিয়াত প্রমুখের সার্বিক তদারকি ছিল আদ্যোপান্ত। সম্পূর্ণ বৈঠকীর রেকর্ডকৃত অংশ অচিরেই রাশপ্রিন্ট কর্তৃক ট্র্যান্সক্রিপ্ট আকারে ম্যাগাজিনের ‘সবিশেষ’ বিভাগে প্রকাশ করা হবে বলে আয়োজক তরফ থেকে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ‘রাশপ্রিন্ট’ বাংলাদেশ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি ওয়েবপত্রিকা। সঞ্চালক-তরফ থেকে জানানো হয়, রাশপ্রিন্ট প্রথম পোস্ট জুলাই ২০১২ থেকে একটানা তিন বছর সঞ্চালিত হয়েছে লেখক-পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলের ঔদার্য ও প্রশ্রয় সম্বল করে। এই তিনটি বছরে যা-কিছু ভালো হয়েছে, যেটুকু যৎকিঞ্চিৎ উন্নত হয়েছে, লেখক-পাঠক-দর্শক ও অন্যান্য অবদায়ক সকলে সেই ভালোটুকুর প্রণেতা। রাশপ্রিন্ট তাদের সকলের কাছে দুই-বাহু-প্রসারিত সম্ভাষণ জানায় এই নবপর্যায়িক যাত্রাপ্রাক্কালে, কৃতজ্ঞতা জানায় পেছনের দিনগুলির সহযোগ স্মরণ করে, যেন সামনের দিনগুলি দ্বিগুণ সুরেলা সম্মেলক গানে ভরে থাকে এই মেলাপ্যান্ডেল সেই আশ্বাস ও বরাভয় চায় সকলের কাছ থেকে; — রাশপ্রিন্ট-সঞ্চালক ও বৈঠকী-সূত্রধরের এই বিনয়ভাষণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দিনব্যাপী সম্মিলনোৎসবের কর্মসূচি।