পালক ও অন্যান্য কবিতা । লায়লা ফারজানা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুলাই ২০২২, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ, | ৪১১ বার পঠিত
স্বপ্নেরা
ঝরা পাতার মতো ঝরে যাই আমি।
স্বপ্নে—
পড়ে থাকি অবহেলায়বিকেলের মেরুনে কিছু উদ্দেশ্যহীন নরম খয়েরি পাতা
মনমরা এক নদীর পাশে।
কনুইয়ের ভাঁজে মুখ, ঢুলুঢুলু চোখ
আবারও কিছু স্বপ্ন ভাসে —
অ্যাকুরিয়ামে!চোখের পিচ্ছিল রুপালি মাছেরা
ঝাঁপ দেয়। —
অনেকগুলো চোখ, অনেকগুলো স্বপ্ন
পিংপং বলের মতো —
কখনও সংঘর্ষ
কখনও চুম্বন। —
ভেসে ওঠে, কখনও ডোবে
এক বাক্সবন্দী থকথকে পিচিছল
গাঢ় মেরুন —
স্বপ্ন!সেই শহর ধরে হাঁটতে থাকি আমি
নদীর ধারে খয়েরি পাতায়
দুটো কথা
দুধারে গাছের সারি।
মজে যাওয়া গোলাপি সূর্য
উদ্দেশ্যহীন জীবনের ফাঁদ।
কুড়োতে থাকি
ঝরা স্বপ্ন
আবারও বাক্সবন্দী করি
দিনশেষে জেগে উঠে ভাবি
টিকে গেছি আমি
এবারও!শূন্যস্থান
বৃষ্টি পড়ছে দারুণ দূরত্বে, তাই বুঝি
এত সুন্দর এ বৃষ্টি—
দূরবর্তী চাঁদের মতো!
যে দূরত্ব সৃষ্টি করে না শূন্যতা
কেবল কাছে টানে ।
আমার ভিতরে এবং দূরে
তোমার ভিতরে এবং দূরে
ক্রমশ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া রাস্তার মতো—
কাছে আসার বা বিচ্ছিন্নতার।আর্দ্র থেকে আর্দ্রতর পাখির পালক—
যেন কোনো সদ্যস্নাত রমণীর ভেজা চুল
নিজেই নিজেকে জড়ায়
পরম মমতায়।
দূর থেকে চেয়ে দেখি আমি,
যত দূরে যাই
তত কাছে পাই
ঘিরে থাকি বাষ্পের মতো।পালক
তোমাকে হাসতে দেখিনি কখনও
কিন্তু ঐরকম একটা মুখ
আমার চোখে ভাসে
তুমি যখন হাসো
পালকের মতো হাল্কা হয়ে যায় পৃথিবী।—ধীরে ধীরে স্পেসশিপের মতো
ভাসতে ভাসতে
হঠাৎ দু ‘টো পা বের করে,
দাঁড়িয়ে যায় দূরের কোনো গ্যালাক্সিতে—আর তারপর ঐ পৃথিবীটার রং বদলাতে থাকে
গোলাপি থেকে গাঢ় গোলাপি
হাল্কা সবুজ আভার বিচ্ছুরণ ঘটতে থাকে
কক্ষপথে!কিছু তারা খসে,
কিছু বাদামি চাঁদও—
আমি দূর থেকে দেখি—
অদ্ভুত এক মায়া কাজ করে!তোমার মুখের উপর চুল—
কপাল থেকে গালে—
যেন সোনালি হরিণগুলো
বেগুনি ঘাসে মুখ ঘষে যায়,
আর আমার বুকের ভিতর শুরু হয়
কোষ বিভাজনের খেলা।হৃৎপিণ্ড এক থেকে দুই—
দুই থেকে চার—চার থেকে আট—
সবগুলো হৃৎপিণ্ড
একসাথে কাঁপতে থাকে
তুমি যখন হাসো!