মহামারী ও বসন্তের চিঠি । দেবপ্রিয়া দাস বারিক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৪৩ অপরাহ্ণ, | ৪৪০ বার পঠিত
বসন্তের চিঠি
যখন তোর জানলা থেকে নীল আকাশ এমনই শান্ত,
আমার বিছানা বিরহ জ্যোৎস্নায় অর্ধ স্নাত।
যতবার দৃষ্টি অভিসারি চাঁদের অপেক্ষায়,
ততবারই স্ট্রিটলাইট জ্বলে ওঠে বিরহ বেলায়।
বিরহ বেচে আজ আমি অমরত্বের আশায়,
বাক্স বন্দি করে তোর স্মৃতিদেরকে ভাসায়।
জ্যোৎস্নায় গলে যাওয়া কাব্যগ্রেন্থর অভিসারিকা,
শুক্লস্নিগ্ধতায় মগ্ন বৈশাখের উগ্র তপ্ততা।
লাইব্রেরিতে এক অনন্তকালের উৎকন্ঠা ,
বোঝা হয়ে ওঠেনি কখনো কীসের মুগ্ধতা।
সময় বয়ে চলে শতাব্দী অতিক্রমে দুই মলাটের মাঝে,
অমিত্রাক্ষর ছন্দ আর অলংকারের ফাঁদে।
কলেজ মাঠে ফুচকা আর চোরকাঁটা,
গল্প লিখে চলতো পৃথ্বীরাজ চৌহান আর ব্রজবুলি ভাষা।
ছয়টি শীত, পাতা ঝরা গোধূলি গোছানো সুবাস ,
বুক চিরে কেঁদে ওঠে নিয়ন আলোর গোপন ছায়াপথে ।
বুকের ভিতর শঙ্খচিল আলোক ধাঁধার পথে,
শব্দবিহীন কাব্য রচি সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে ।
চোখের জলে আকাশ ভেজে হৃদয় হাতের ভাঁজে,
পলাশ গুঁড়ো কুড়িয়ে রাখি বসন্তের চিঠির ভাঁজে।
মহামারী
দূষণ মুক্ত আকাশ জুড়ে কল্পনার মুগ্ধতায়
ব্যস্ত জীবন ,জট খোলা সুতোর মতন কাটছে বেশ!
সকালের কলঘর থেকে দুপুরের স্নানের আবেশ।
তীব্র ভাতের ঘ্রাণে চোখ জুড়ে নেমে আসে শান্তি,
বিবেক নামক বস্তু থেকে উঠে আসে ভেদবমি।
নিত্যদিনের উপাচার ছয় সাত খাটে এলিয়ে দিয়ে দেহ‐
চিতার কাঠ বয়ে চলি, শ্মশান দহনে শবদেহ অনামী।
একটা দুটো চিল উড়ে যায় , কাকগুলো ডেকে চলে কোনো এক হারানো গল্পের সাক্ষী রেখে।
যে ছেলেটা কাল বাবার কাঁধে চেপে বেলুনের বায়না করত ,
আজ ক্লান্ত জিভে ভাতের বায়না অবিরত।
সহস্র শ্রমিকের পায়ের ছাল ওঠা রক্ত মাংসে –
রাজপথ ইতিহাস লিখে চলে নিঃস্তব্ধে।
প্রাপ্তবয়স্কা নীলা যবনিকা দিয়ে গেছে সহস্র কালের ইতিহাস গল্পে ।
সারারাত খুবলে খেয়ে গেল শরীর মাংস রক্ত,
নীল ঘুমে রাতপরীর গল্প দেবো এসো।
চোখ জুড়ে শ্রান্তি নিয়ে গল্প লেখা বাকি !
চাঁদমণি আর মুন্সীলাল পেল কি ঘরের ঘ্রাণ ?
বলেছিল, বোশেখ মাসে খোঁপা জুড়ে ঝুমকো লতা ,
হাঁড়িয়া আর মাদল তালে ঘিঝিং ঝিনা ধিনতা।
বোশেখ গেল তপ্ত রোমে শীত এলো
পলাশ ফুলে ভ্রমর এসে স্তব্ধ হলো।