পরদেশী রোদ ও বৈশাখী কবিতা । মুজিব ইরম
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুন ২০১৯, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ, | ১৩৫৭ বার পঠিত
মানুষ ভজন
আমার শৈশব রাঙ্গা ছিলো পূজা পার্বণ ঈদে, আমার শৈশব গীতল ছিলো বাউল গান আর গীতে। আমার শৈশব শীতল ছিলো কাদা জলে পানিতে, আমার শৈশব ভরা ছিলো জিকির দরুদ কীর্তনে। উলুধ্বনি শাখের ধ্বনি ঘণ্টা আজান মাতমে, আমার শৈশব ভরা ছিলো সালাম আদাব প্রণামে। মাসি পিসি মায়ে বোনে মন্ত্র দোয়া পড়ে, আমার শৈশব রাঙ্গিয়ে দিলেন মানবতার বরে। আমার শৈশব কাটলো ঘুরে গির্জা মন্দির মসজিদে, বাউল গজল পীরমুর্শিদি ভজন সাধন কীর্তনে।
সেই যে আমার হুরুবেলায় দোতারা এক বাজিয়ে, কোন এক বাউল নৃত্যগানে মন দিলা যে সাজিয়ে! মানুষ ভজো মানুষ ভজো বাউল কবি কৈলা, তাই তো ইরম মানুষ খুঁজে পদের অধীন হৈলা।
পরদেশী রোদ
বার্লিক্ষেতে রোদ পড়ে আছে। পরদেশী রোদ!
এই রোদ চিরচেনা। এই রোদ হৃষ্টপুষ্ট। গোলগাল। হাসিখুশি। ফর্সা দেহ। ফর্সা করা মন। কিছুটা অচেনা তুমি। কিছুটা আপন। ভিনচেনা। ভিনভাষী। নির্ধনিয়ার ধন।
বার্লিক্ষেতে রোদ পড়িয়াছে। ভিনদেশে মন পুড়িয়াছে।
বৈশাখী কবিতা
বৈশাখ এলেই আমি একটি কবিতা লিখি। সেই শাড়ি পরা পুঁটি মাছগুলোর কথা মনে পড়ে। সেই নীল নীল খৈয়া মাছগুলোর কথা মনে পড়ে। তারা সব নয়া জলে উজানের পথ ধরেছিলো। সেই রূপসী মাছের কথাও মনে পড়ে, লাখাইয়ের ক্ষেতে, চোরা স্রোতে, নিমেষেই যে হারিয়ে গিয়েছিলো।
বৈশাখ এলেই এই সব মনে পড়ে, আর আমি একটি কবিতা লিখি। শব্দগুলো সাঁতার কাটে উজানের স্রোতে, যেন চেলা মাছে খেলা করে নয়া পানি পেয়ে। আর আমার সংসারী পিতার কথা মনে পড়ে, একদিন যিনি উজাইয়ের মাছ হতে চেয়েছিলেন, ঝড়বাদলের দিনে, পীরমুর্শিদী গেয়ে।