পাপোশ । বাশিরুল আমিন
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৪২ অপরাহ্ণ, | ২৩০৪ বার পঠিত
ভাবনামাফিক কাজটা করতে পারছেন না নিরঞ্জন বাবু। পুরো সপ্তাহের পরিকল্পনাটা ভেস্তে যাবে মনে হয়। কী একটা মনস্তাত্ত্বিক লড়াইটাই না করেছেন নিজের সঙ্গে এ কয়টা দিন। নৈতিকতা বিষয়ক সকল ভাবনাকে বিদায় দিয়ে আজ যখন গাঁটবেধে কাজে নামার নিয়ত করলেন তখনই পড়ে গেলেন অদ্ভুত আড়ষ্টতায়। অচেনা-অজানা এক সত্ত্বা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার পথে। কাজটা এমন নতুন কিছু নয়। বছর বছর দেখে আসা নৈমিত্তিক কিছু। বড় সাহেব, সিনিয়র কলিগ এমনকি নতুন আসা জুনিয়রদের কাছে তো প্রতিনিয়ত অনেক কিছুই শিখছেন তিনি। তবে এটা কেন আয়ত্ত করে নিতে পারবেন না তাদের কাছ থেকে। আজ তাকে পারতেই হবে। এবং তিনি পারবেন।
তার বস কাজটা এতো সুন্দর করে করেন মনে হয় পৃথিবীর সবচে আনন্দদায়ক কাজ এটি। টাকার খামটা হাতে নিয়ে মিহি একটা হাসি দেন উপপরিচালক জফির সাহেব। তার হাসি থেকে অন্য রকম একটা দ্যুতি ঘরময় ছড়িয়ে পড়ে। উদ্বেলিত হয়ে ওঠে অফিস কক্ষের প্রতিটা আসবাবপত্র। হাকিমপুরী জর্দার ঘ্রাণে মৌ মৌ করা পানের খিলিটা মুখে চালান দিয়ে অনন্য এক উচ্ছলতায় ভেসে যান তিনি। টেবিল থাপড়ে ক্লায়েন্টকে আশ্বস্ত করেন, কাজটা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। না হইলে টাকা ফেরত নিয়া যাইয়েন, নো চিন্তা। এই ঘুসগ্রহণে কোন রাখঢাক নেই, ইতস্ততা নেই। তার এমন আচরণে ঘুষদাতার সংকোচ ও দ্বিধা কেটে যায়। স্বস্তি পায়।
লাঞ্চে সবাইকে চা নাস্তা খাওয়ান জফির সাহেব, হাসতে হাসতেই অধস্তনদের বলেন, বুঝলেন ভাইলোগ! ঘুষের টাকা একা খেতে নেই। ঘুষের ধর্মই হল ভাগ করে খাওয়া। অন্যরা যেখানে গিফট, খরচা, ইনসেন্টিভ বা স্পিডমানি বলে তাবিল করতে চায়, জফির সাহেব সেইক্ষেত্রে স্পষ্টবাদী। ঘুষতো ঘুষ-ই। এতো প্যাঁচানোর কি আছে।
কিন্তু সরকারী একটি পরি-দফতরের হেডক্লার্ক নিরঞ্জন বাবু কিছুতেই পারতেছেন না। জফির সাহেবের কথা চিন্তা করেও কাজ হচ্ছে না। অথচ তার কলিগরা কতো হেসে খেলেই কাজটা করে, এই যে সেদিন জয়েন করলো জবাফুলের মতো মায়াবী চেহারার মেয়েগুলো তারা কতো নিপুণভাবে মক্কেল ধরে, মুরগা বানায়, অফিস শেষে রোজ শপিং করে, আটা-ময়দা মেখে জগত-জুড়ে হেসে-খেলে বেড়ায়। আর তিরিশ বছর সরকারি অফিসে কেরানীগিরি করা নিরঞ্জন এ ব্যাপারে কিছুতেই কিছু করতে পারেন না।
সকাল সকাল অফিসে এসেছেন আজ। তার কাছে সুদ-মুক্ত ক্ষুদ্র ঋণের আবেদন নিয়ে এসেছিলেন এক শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। আবেদনপত্র গ্রহণ করার পর এই সেই জিজ্ঞেস করলেন, আলাপ জমিয়ে পরিবেশটা হাল্কা করার পর টাকার কথাটা কিভাবে তুলবেন বুঝতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে সংকোচ কাটিয়ে বলেই ফেললেন, ঋণ পেতে হলে খরচ লাগবে ভাই! কথাটা বলে স্বাভাবিক হতে পারছিলেন না অহেতুক ফাইলপত্র নাড়ছিলেন, কেবিনেটের ফাইল এখান থেকে ওখানে সরাচ্ছেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিটি যখন ম্যাড়মেড়ে গলায় জিজ্ঞেস করলো-কত দিতে হবে দাদা? তিনি তার দিকে তাকালেন। প্রথমে তার চেহারায়। তারপর আরেকটু গভীরভাবে তার চোখে। ছলছল চোখ দুটি দেখে যথেষ্ট রকমের দুর্বল হয়ে যাচ্ছিলেন নিরঞ্জন বাবু। নিজেকে কিছুটা শক্ত করে অস্পষ্ট স্বরে বললেন ‘দেন, যতো পারেন’। আবেদনকারী ব্যক্তিটি তার লুঙ্গির পাড়ে হাত ঢুকিয়েছে, সেখান থেকে বের করলো শ-খানেক। মলিন-ছেড়া পকেট থেকে বের করলো আরো শ-দুয়েক। এমতাবস্থায় আর পারলেন না, হাল ছেড়ে দিয়ে বললেন- থাক এখন লাগবে না। এভাবেই তার প্রথম শিকার হাত ছাড়া হয়ে যায়।
দ্বিতীয় মক্কেলকেও বাগে আনতে পারলেন না তিনি। ফাইলপত্রে ভুল ধরলেন, আবেদনকারী ও তার বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, চেয়ারম্যান-কাউন্সিলরের সত্যায়ন সহ আরো সতের পদের কাগজপত্র চাইলেন। হাল্কা ঝাড়ি দিয়ে বললেন এইভাবে সরকারি অফিসে কোন কাজ হয়? তারপরও টাকার কথাটা স্পষ্টভাবে বুঝাতে পারলেন না তাদের। শেষতক ভাবলেন বড় কোন পার্টি ধরতে হবে।
যথারীতি শহরতলী থেকে অফিসের পথে পয়দল রওয়ানা হলেন নিরঞ্জন বাবু। চারপাশ কেমন বিবর্ণ। রাস্তায় মানুষগুলি হাঁটছে অথচ মনে হচ্ছে হেঁটে যাচ্ছে লাশ। তবে কি তিনিও লাশ হয়ে গেছেন। সকাল সকাল অফিসে আসা তার অভ্যাস কিন্তু এতো সকালে আসেন না সচরাচর। নাইট-গার্ড ছাড়া অফিসে আর কেউ নেই। এমন-ই ঘনঘোর সকালে পাপোশ নিয়ে অফিসে ঢুকলেন তিনি। নাইট-গার্ড রিয়াজুলকে দিয়ে ভালো করে অফিসের ফ্লোর ঝাট দেওয়ালেন ।
অফিস শেষে আজ দুই-কেজি খাসির মাংস আর তিনটা পাপোশ নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে। পাপোশটা চাই-ই। এ নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গেল নিরঞ্জন বাবুর ঘরে। তার স্ত্রী সুদীপ্তা রানী নতুন বিছানা চাদর কিনেছেন। ঝাঁ তকতকে চাদর। সাদা জমিনে লাল লাল বুনোফুল। বালিশের চাদরও পালটেছেন ম্যাচিং করে।
দাদার আমলের চার রুমের একটি হাফওয়াল টিনের-ঘর। শহরতলীর এই বাড়িটা যেন তারই মতো কোন সরকারি অফিসের ক্লার্ক। বৈশিষ্টহীন। ২৮ শতাংশের বাড়িতে এই একটামাত্রঘর। সামনে উঠানের মতো কিছু জায়গা খালি পরে আছে। কাঁটাতার আর বাঁশের বেড়া দিয়ে বাউন্ডারিঘেরা। বাড়ির একমাত্র ঘরে চরিত্রে-বৈশিষ্ট্যে বেডরুম আছে একটি। রুমের ভূগোলে আছে কাঁঠাল কাঠের একটি আলমারি, সাধারণ দুটি আলনা আর সেই দাদার আমলের সুন্দি কাঠের এই বিশাল খাট, যেখানটা এখন চকচক করছে নতুন গিলাফে। বেডশিট নয় যেন মাজারের রঙিন সালু। জীর্ণ-শীর্ণ শয়নকক্ষের সকল মলিনতা উবে গেছে এই চাদরের ঔজ্জ্বল্যে। এমন হালতে অফিস ফেরত নিরঞ্জন বাবু পা না ধুয়ে, না মুছে যখন সোজাসাপ্টা বিছানায় ওঠে বসলেন। সুদীপ্তা রানীর মেজাজ দেখে কে? পুরো বাড়ি মাথায় তুললেন তিনি। নিরঞ্জন বাবু ও তার দু পয়সার চাকরির চৌদ্দ-গোষ্ঠী উদ্ধার করলেন যুদ্ধংদেহী অর্ধাঙ্গিনীটি তার। গাধার মতো খেটেও এই জীবনে যে কিচ্ছুটি করতে পারেননি এই মহাসত্যটি কান বরাবর গিয়ে বললান শতেকবার। একতরফা যুদ্ধের শুরু থেকেই ঝগড়ার অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়ায় পাপোশ নামক আসবাবটি।
তার বাসার এমনই করুণ অবস্থা যে সদর দরজা তো সদর দরজা এমনকি পূজার ঘরের দরজায়ও একখানা পাপোশের চিহ্নটি মাত্র নেই। ফলে ঢালাই করা রুমের সব ময়লা গিয়ে একত্রিত হয় বিছানায়। ফি সপ্তাহ তাকে এসব ধৌত করতে হয়। এমনকি ভাঙ্গা বাথরুমের দরজায় পর্যন্ত কোন কিছু নেই। গোসলের সময় পানির ছিটা এস পড়ে প্যাসেজে। মাঝে মাঝে ঘর ভেসে যায়। বাথরুমের দরজার কাছে লুটিয়ে থাকা যে ন্যাকড়াটি পুরো ঘরময় পাপোশের প্রতিনিধিত্ব করছে তা হল নিরঞ্জন বাবুর পুরনো ধুতি। আর পুজোর ঘরের দরজায় মাঝে-সাঁঝে ব্যবহার্য বস্তুটি হল তার ছেড়া শার্ট।
সারাটি জীবন এরকম পাপোশের প্রতিনিধিত্ব করা শত আদর্শবান কেরানী সম্প্রতি বুঝে গেলেন যে এভাবে শত হয়ে বাঁচা যায় না। যারা শত হয়ে বাঁচে বা বাঁচতে চেষ্টা করে তাঁরা এই পুরনো ধুতি আর ছেড়া শার্টের মতোই পায়ে পায়ে দলিত হয় জীবনব্যাপী।
এই ঘটনার দু-দিন পরই ঘটলো গুরুত্বপূর্ণ ও হর্ষময় একটি ঘটনা। নিরঞ্জন বাবুর বড় মেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। এ খবর যে কেবল আনন্দের নয় কিছুটা চ্যালেঞ্জিংও বটে তা বুঝতে দু-দিন সময় পার করতে হয়েছিল। ভালো জায়গায় ভর্তির চিন্তা, বাড়তি যত্ন নেয়ার অতিরিক্ত চাপ তার জন্য চ্যালেঞ্জিংতো বটেই। এতো-বড় একটা সুসংবাদের পরও যখন তিনি মিষ্টির প্যাকেট বা ভালো কিছু নিয়ে ঘরে ফিরলেন না এমতাবস্থায় তার মেয়েটি কান্না না করে পারলো না। আর এ কান্নাই হয়ে গেল তার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর সমরঘন্টা। শুরু হল বাক্যবাণ, কেরানীগিরি চৌদ্দ-গোষ্ঠী উদ্ধার। চলমান-গৃহযুদ্ধ যেন নতুন করে বেগ পেল। নিজ থেকেই সন্ধির প্রস্তাব করলেন তিনি। দু কেজি খাসির মাংস ও পাপোশ আনার ওয়াদা ব্যক্ত করেন। আর আগামী উৎসব-ভাতা পেয়ে ঘরে আনবেন নতুন সোফা এমন কথা বলার সাহসটাও করে ফেলেন। এবার ঘরে একটা দারুণ মচ্ছব না হয়ে যায় না।
কিন্তু এখন যে মাসের শেষার্ধ! পকেটে দারুণ খরা। পাপোশের কথা চিন্তা করতে করতেই ভেবেছিলেন- আর নয় এবার তিনি অন্য পথে হাঁটবেন। সবার যে পথ সে পথেই। এখন খাসির মাংসের প্রয়োজনটা তাকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল সে পথে।
লাঞ্চ আওয়ার পর্যন্ত কোনোরকম সুবিধা না করতে পেরে ভাবলেন আজ যেহেতু হল না তাই বসের কাছে গিয়ে ধার চাইবেন। প্রোক্ষণে চিন্তা এলো এতদিনের এই রেকর্ডডা ভাঙ্গবেন কী করে। চাকরি নেয়ার পর তো বিশ পঞ্চাশ টাকার উপর কোন কলিগের কাছ থেকে ধার নেননি তিনি। অতি জরুরী হলে আত্মীয়স্বজনের কাছে খুঁজেছেন, যখন যেখানে চেয়েছেন কেউ হতাশ করেনি। ধারের চিন্তাটাও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললেন। কাল নিশ্চয় পারবেন ফলে আর কোন ঝামেলা হবে না। জফির সাহেবসহ একে একে সবাই চলে যাওয়ার পর নিজের রুমের খাতাপত্র গুছিয়ে টিফিনটা হাতে নিয়ে অফিস থেকে বেরুবেন এমন সময় একটি সমিতি নবায়নের কাজ নিয়ে আসলো দু-জন। মোক্ষম সময়, সুবর্ণ সুযোগ। শেষতক কাজটা সারতে পেরেছেন। যদিও টাকার অংকটা খুবই নগণ্য। পাঁচহাজারের মতো।
অফিস থেকে বের হয়ে মূল রাস্তায় কচুরিপানার মতো ভেসে যেতে যেতে আবিষ্কার করলেন হাতের টিফিনটা বেশ ভারী হয়ে আসছে আর পেটের ক্ষুধাটাও বেশ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তার মানে দুপুরের খাবারটা আজ আর খাননি তিনি, অথবা খাওয়ার ফুরসৎ হয়নি। সারাদিন এতোটা দুশ্চিন্তা আর অনিশ্চয়তায় কাটিয়েছেন ভাতের কথা মগজে আর উঠতেই পারেনি। মাথাটা একটু ঝিম ধরে আসলেও মানুষের স্রোতে হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে না তার। এক পর্যায়ে মনে হল তিনি উড়ছেন। তার শার্টের হাতা বাতাসে পতপত করছে। ছোট হয়ে আসছেন পতঙ্গের মতো।
ভয়ংকর সুন্দর আর দামী তিনটা পাপোশ কিনলেন, বাসার জন্য। সাথে অফিসের জন্যও কিনলেন একটি। বড়সড়ও। অফিসের মূল দরজায় ফেলবেন এটি। খাসির মাংস কিনলেন। সাতকড়া কিনলেন। বহু বছর পর সুদীপ্তা রানীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে কিছু প্রসাধনীয় কিনলেন। মোদ্দা-কথা পাঁচ হাজারে যা পেরেছেন, কিনেছেন।
বাসায় ফেরার পর আজ এতোটাই আদর আপ্যায়ন পেলেন মনে হল বহুদিন পর জীবনের স্বাদ খুঁজে পেয়েছেন। স্ত্রীর আহ্লাদ। সন্তানের সম্মোহনী ডাক। রকমারি রান্নার ঘ্রাণ তাকে ব্যাকুল করে তুলে।নানাবিধ ভালোবাসায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠলেন বেডরুমের বিছানা চাদরটির মতো। সাদা জমিনে যেন লাল লাল বুনোফুল। পুরোটা রাত ঘুমোতে পারেননি তিনি। শেষ রাতে চোখ বুজে এলেও তিনি যে ঘুমিয়েছেন এটা বলা যাবে না। ঘড়ির কাঁটায় কদম-ফেলা লোকটি খুব দ্রুতই অবিন্যস্ত হয়ে গেলেন। একটি রাত যেন তাকে বদলে দিয়েছে হাজারগুণ। নাস্তা-পানি না নিয়েই বিধ্বস্ত চেহারায় ঘর থেকে গলে পড়েন রাস্তায়। অফিসের দিকে…
যথারীতি শহরতলী থেকে অফিসের পথে পয়দল রওয়ানা হলেন নিরঞ্জন বাবু। চারপাশ কেমন বিবর্ণ। রাস্তায় মানুষগুলি হাঁটছে অথচ মনে হচ্ছে হেঁটে যাচ্ছে লাশ। তবে কি তিনিও লাশ হয়ে গেছেন। সকাল সকাল অফিসে আসা তার অভ্যাস কিন্তু এতো সকালে আসেন না সচরাচর। নাইট-গার্ড ছাড়া অফিসে আর কেউ নেই। এমন-ই ঘনঘোর সকালে পাপোশ নিয়ে অফিসে ঢুকলেন তিনি। নাইট-গার্ড রিয়াজুলকে দিয়ে ভালো করে অফিসের ফ্লোর ঝাট দেওয়ালেন । অতঃপর ঠাকুরঘরে পুঁজও দেয়ার মতো করে পাপোশটাকে ফ্লোরে সশ্রদ্ধ বিছাতে গিয়ে আকিস্কার করলেন তার পুরোটা শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে। তিনি লুটিয়ে পড়তেছেন। শীতল পাকা ফ্লোরে পাপোশে রূপান্তর হয়ে যাচ্ছে তার পুরো শরীর।
হ্যাঁ, সত্যিই তিনি পাপোশ হয়ে যাচ্ছেন প্রথমে পায়ের নখগুলি নারিকেরৈর ছোবড়ার মতো খসখসে হতে শুরু করলো। ধীরে ধীরে পা দুটি লইট্টামাছের মতো লুটিয়ে পড়ে জমিনে। হাড়শুন্য হয়ে যান নিরঞ্জন বাবু।
জীবনভর ঘুষ-খাওয়া জফিরুল সাহেব তার নোংরা জুতা জোড়া নিয়ে এগিয়ে আসছে তারদিকে। এখুনি নিরঞ্জনের নাকে মুখে ঘষবেন পথের সমস্ত ধুলা, জগতের সব নোংরাবর্জনা।