অনুপল (প্রথম প্রবাহ) । আহমদ মিনহাজ
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৫৯ অপরাহ্ণ, | ১৯১৭ বার পঠিত
অনুপল–১ : হরিৎ বিস্ময়
বেশি দূরে নয়
সাঁকোটা পেরুলে
পেয়ে যাব হরিৎ বিস্ময়!
অনুপল–২ : সরে বসো
সরে বসো:
দীর্ঘকাল বড়ো বেশি কাছাকাছি ছিলে।
অনুপল–৩ : ঘুড়ি ও নাটাই
আকাশে উড়ে ঘুড়ি
নাটাই হাতে পাক খাই মাটিতে।
অনুপল–৪ : ঝড়
ঝাউবন কাঁপে ঝড়ে
ব্যস্তবাগিশ
কম্পিত রমণী পুলকে।
অনুপল–৫ : মুখোশ
মুখোশের দোকান:
আমিও কিনে ফেলি গোটা ছয়
ঝটপট মিশে যাই ভিড়ে।
অনুপল–৬ : অকথিত
সময় হবে?
কেন…?
তোমায় অনেক কথা বলার ছিল!
অনুপল–৭ : লোবান
ফুলশয্যা শেষ
লোবানের গন্ধ
রাতের বাসরে।
অনুপল–৮ : ভিতর–বাহির
বাহির আলোয় রঙবাহার
ভিতর খা খা অন্ধকার।
অনুপল–৯ : অভিনয়
অভিনেতা রঙ্গমঞ্চে
দর্শক…
নিবিষ্ট অভিনয়ে।
এ কি তবে ভানুমতীর খেল?
হাজার চেষ্টায় পড়ে না মনে
কে আমি! কী আমার পরিচয়!
অনুপল–১০ : জোনাকি
জোনাকির পিছু নিয়ে
পড়ে গেছি খাদে।
অনুপল–১১ : গুলবদন
গুলবদন চাঁদ আকাশে:
অ্যায় জানেমান বলে চুমুক বসাই
তেতো কফির পাত্রে।
অনুপল–১২ : সোনালী মধ্যবিন্দু
জীবন সোনালী মধ্যবিন্দু:
এরিস্টোটল বলে গেছে কাল রাতে
কানে-কানে ফিক করে হেসে।
অনুপল–১৩ : বাইশ গজ
মেরেকেটে বাইশ গজ গিয়েছি
তেরেকেটে আরও বাইশ গজ যাব
ল্যাংচি মেরে উঠে পড়ি বাসে।
অনুপল–১৪ : লালা ও রেজিন
হাড্ডিসার চাঁদ আকাশে
অধর চন্দ্রাহত প্রেমিকার
লালা ও রেজিনে।
অনুপল–১৫ : শরাবি
কিছু টিকবে না জেনে গালিব শরাবি
বফাদার মন জানে ইশকের পেয়ালা ভারী।
অনুপল–১৬ : ভরা কটাল
ভরা কটালের চাঁদ:
ক্রমে ভারী হচ্ছে
বিষের পেয়ালা।
অনুপল–১৭ : বোধিবৃক্ষ
নামে ধীরে
বোধিবৃক্ষের ডাল হতে
শীত-বিকল অজগর।
অনুপল–১৮ : ভানুমতীর খেল
এ কি তবে ভানুমতীর খেল?
হাজার চেষ্টায় পড়ে না মনে
কে আমি! কী আমার পরিচয়!
অনুপল–১৯ : বিশ বাও জল
রাস্তায় নেমে
ঝপ করে পড়ে গেছি
বিশ বাও জলে।
অনুপল–২০ : পাশাপাশি
পাশাপাশি বসে আছি
তবু দূরত্ব সুদূর!
অনুপল–২১ : প্রেম–১
প্রেম নির্মম পাথর
মসৃণতা দাবি করে।
অনুপল–২২ : আত্মহত্যা
এভাবে চলে যেতে নেই:
বেশ…! তবে কী করে যেতে হয়,
কীভাবে যাওয়া সমীচীন?
অনুপল–২৩ : মানুষ ও মৌচাক
সে এক মৌমাছি:
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে
মাথা ঘুরে পড়ে
নিজের মৌচাকে।
অনুপল–২৪ : অসম্পূর্ণ
অংকের বিচারে জগৎ অসম্পূর্ণ, মহানভে বস্তুরা আপেক্ষিক:
বৈকালিক পদব্রজে তর্ক করে আইনস্টাইন ও গডেল।
বার্চ গাছে শীতের তুষার ঝরছে…
দূর জারুল বন মুখরিত বসন্তের কোকিলে।
অনুপল–২৫ : মিথ্যা
“যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য বৈ মিথ্যা বলিব না”
আদালতে হলফনামা দিয়েছে সাক্ষী।
ভর্তৃহরি হাসে, “আমি যাহা কহি সকলই মিছে।”
মোল্লা নাসির উদ্দিন চললেন
গাধার পিঠে চড়ে…
সাচ্চা মানুষের খবর নিতে।
অনুপল–২৬ : তামাম শোধ
কান পেতে শোন এ বয়েত:
মুমিনের অর্থ জানে সেই জন
তামাম শোধ জিকিরে যার ভরিছে অন্তর।
অনুপল–২৭ : ডিসপেপসিয়া
জানি তোমার ত্বক নবনী
শিরায় উজান লাবণী
তবু তোমার ডিসপেপসিয়া-
ওষুধে সারে না।
অনুপল–২৮ : অবরুদ্ধ
বর্ষায় অবরুদ্ধ ঘরে:
ঢং ঢং ঘণ্টা কারাগারে
বসন্ত মুখর কোকিলের গানে।
অনুপল–২৯ : গুলরুখ
হাওয়া ধীরে বহে গুলনার বনে
শরমে রঙিন চাঁদ…অসভ্য চুম্বন
দিশেহারা গুলরুখ।
অনুপল–৩০ : গন্তব্য
ঠিক করেছি যাব না
শেষমেষ…
যেখানে যাওয়ার কথা সকলের।
অনুপল–৩১ : ইশক
নিঠুর চাঁদ দিয়েছে ফাঁকি:
গালিবের মনে বিষাদ
ইশকের পেয়ালা খালি।
অনুপল–৩২ : পাখি
খাঁচা ছেড়ে পাখি উড়ে গেছে
কে জানে কোথায়!
অনুপল–৩৩ : ম্যানহোল
প্লেটোর গুহা থেকে বেরিয়ে লোকটি
পা পিছলে পড়ে খোলা ম্যানহোলে।
অনুপল–৩৪ : ইতিহাস ও পাতিহাঁস
হাইডেগার বুঝেছেন সঠিক:
ইতিহাস ও পাতিহাঁস উভয়ের এক পরিণতি
দুজনেই সাঁতরায় জলশূন্য নদী।
অনুপল–৩৫ : রোমন্থন
পরিত্যক্ত গাড়ির কাচে মাকড়সার জাল:
“জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুঁড়ি কুঁড়ি বছরের পার-”।
অনুপল–৩৬ : মোল্লা নাসির উদ্দিন
মোল্লা নাসির উদ্দিন চললেন
গাধার পিঠে চড়ে…
সাচ্চা মানুষের খবর নিতে।
অনুপল–৩৭ : বয়স
এখন পরিজে মতি:
সুস্বাদু পায়েসান্ন বিস্বাদ ঠেকে।
অনুপল–৩৮ : পটলডাঙার মাঠ
ভুবনডাঙার মাঠ দেখব বলে বেরিয়েছিলাম:
হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেছি পটলডাঙার মাঠে।
অনুপল–৩৯ : হিসেবি জীবন
হিসেবি জীবন ভাল লাগে না বুঝলি:
কথাটি বলে হিসেবি বন্ধু চটপট
অফিসগামী বাসে উঠে পড়ে।
অনুপল–৪০ : তারা
কোনোকিছু যথেষ্ট নয় এই শোক ঢাকা দিতে…
আকাশের উজ্জ্বল তারাটি দপ করে নিভে গেছে।
অনুপল–৪১ : নিঃসঙ্গতা–১
ঘুম ভেঙে দেখি কেউ নেই:
রাতের শেষ ট্রেন চলে গেছে,
পরিত্যক্ত পড়ে আছি বাতিল স্টেশনে।
অনুপল–৪২ : চিরহরিৎ
তোমার অন্তর্বাসে মরা ত্বক লেপটে রয়েছে
খোঁপায় বাঁধা কদমফুল গিয়েছে শুকিয়ে।
আফসোস ওরা কেউ চিরহরিৎ নয়!
অনুপল–৪৩ : তাজা খবর
রোবট এনেছে সকালের তাজা খবর:
নিখোঁজ জীবনবাবুর খোঁজে বেরিয়ে
যন্ত্রবাবু নিজেও নিখোঁজ।
অনুপল–৪৪ : E=Mc2
অধ্যাপক চকখড়ি দিয়ে লেখে E=Mc2
মনোযোগী ছাত্র পড়ে L=Mc2।
অনুপল–৪৫ : ইশক
শরমিন্দা চাঁদ উঁকি দিয়েছে গগনে
পরিন্দা দিল ঘায়েল ইশকি জহরে।
অনুপল–৪৬ : সিমুম
মুছে দিয়ে রাজ্যপাট এ মহানগর
দিকচক্রবালে দুরন্ত সিমুম ঘনায়।
অনুপল–৪৭ : নক্ষত্রের পতন
চা ছলকে পড়েছে পিরিচে
মহাকাশে নক্ষত্রের পতন ঘটে।
অনুপল–৪৮ : গুরুত্ব
ক্ষুদে পিঁপড়েও গুরুত্ব রাখে জগতে:
মানুষের গুরুত্ব শুধু তার নিজের কাছে।
পণ করেছি তোমার ঠোঁটে চুমু খাব না:
কি লাভ বলো? চুমুগুলো হারিয়ে যাবে নিরুদ্দেশে
সেই তো তুমি থাকবে না!
অনুপল–৪৯ : কীট
অজস্র কীট উঠে আসছে
হাজার ফিট মাটির নিচ থেকে…
নিজের গুরুত্ব জানান দিতে।
অনুপল–৫০ : পৃথিবী
শীতে জবুথবু পিতামহ
মুখে জটিল বলিরেখা…
পৃথিবী কিন্তু এখনও নবীনা!
অনুপল–৫১ : টাইরেসিয়াস
কথা বলতে ইচ্ছে করে না, যখন দেখি:
তোমরা এখনও কথা বলতে পারছ।
অনুপল–৫২ : মহাবিশ্ব
মাকড়সার জালে মহাবিশ্ব গিল্টি করা,
ওর কেন্দ্রটি কৃষ্ণবিবর, সুতো ছাড়ছে…
সবকিছু গ্রাস করে নিতে।
অনুপল–৫৩ : কৃষ্ণবিবর
হকিং বলেন কৃষ্ণবিবরে সকলই হারায়।
সাসকিন্ড জানালেন কিছু অবশেষ থেকে যায়
বিবরের দিগন্তরেখায়,-নতুন শুরুর খবর দিতে।
অনুপল–৫৪ : মজনুন
মজনুন মজনু লাইলির শানে:
খৈয়াম মজনুন সাকির তালাশে।
অনুপল–৫৫ : পণ
পণ করেছি তোমার ঠোঁটে চুমু খাব না:
কি লাভ বলো? চুমুগুলো হারিয়ে যাবে নিরুদ্দেশে
সেই তো তুমি থাকবে না!
অনুপল–৫৬ : বৈবাহিক
জীবনের গতি বড়ো বিচিত্র
বই-বাহিক কবিকে লিখতে হয়
কিছু বৈবাহিক পদ্য।
অনুপল–৫৭ : দাঁত
দাঁতগুলো অকারণ ঝরে গেল!
কোটি আলোকবর্ষ দূরে নক্ষত্র
স্ব-কারণ দোষে লোপাট কৃষ্ণবিবরে।
অনুপল–৫৮ : তুমি
নিঃশ্বাস থমকে আসে যখন ভাবি:
“তুমি আর নেই সে তুমি”!
অনুপল–৫৯ : ঈশ্বর
স্তব্ধ রঙ্গমঞ্চ
নীরব নটে-নটি, সকলে প্রস্তুত…
ঈশ্বরকে জায়গা ছেড়ে দিতে।
অনুপল–৬০ : চুপচাপ
চুপচাপ থাকাই ভালো।
জেনেই যখন গেছ-
কথায় আর চিড়ে ভেজে না।
অনুপল–৬১ : সুর্মাদানি
বদনসিব দিল!
সুর্মাদানি খালি:
ভালোবাসা শুরুই হয়নি এখনও।
অনুপল–৬২ : সাপ
মটকা মেরে পড়ে আছি সাপ,
সুযোগ বুঝে ফণা তুলি-
ছোবল মারার সাধ মেটাই।
অনুপল–৬৩ : স্থানান্তর
বলছি তো ভেব না:
শীত ফুরালে বসন্ত আসবে
গ্রীষ্মের খবর দিতে।
অনুপল–৬৪ : শহর
শহর সুন্দর নয়
সুন্দর এখানে দাঁড়াতে পারে না।
অনুপল–৬৫ : ক্ষত
চিকিৎসায় নিরাময় হয় ক্ষত
মনের অসুখ কখনও সারে না।
অনুপল–৬৬ : শামসুর রাহমান
“মেষরে মেষ তুই আছিস বেশ”
ভোটের দিনে সুখের ভাতঘুম…
জানি না শামুসর রাহমান কেন
দেখা দিলেন অকারণ!
অনুপল–৬৭ : নজরুল ও চড়ুই
চলন্ত গাড়ির ছাদে চড়ুই:
কাজী নজরুল নির্বাক তাকিয়ে থাকেন
ঠোঁট পানের রসে লাল!
অনুপল–৬৮ : আফসানা
দিল ভরে আছে দরদে:
গালিব শরমিন্দা
আফসানার সকাশে।
অনুপল–৬৯ : আশিক–মাশুক
আশিক সেজদায় মাশুকের তরে
মাশুক গরহাজির আশিকের ঘরে।
অনুপল–৭০ : চোট
পরহেজগার দিলে লেগেছে চোট:
বিভোর আলমপানা আপনা খেয়ালে।
অনুপল–৭১ : নিকাল যাও
ঝুটা গান্ধি হো তুম, নিকাল যাও ইহাসে:
গালিব হয়ত নিজেকে শুধরাতেন প্রতিদিন
আফসানায় ডুব দেয়ার ক্ষণে।
অনুপল–৭২ : ডাকাতি
ডাকাত পড়েছে ঘরে:
সব লুটপাট হয়ে গেছে
লণ্ডভণ্ড সাজানো বাসর।
অনুপল–৭৩ : আলিঙ্গন
সাষ্টাঙ্গে শুয়ে আছি মাটিতে
এবার প্রসন্ন হও…
অধমেরে জড়াও আলিঙ্গনে।
নিজের চোখে যা দেখেছো সেটা অন্যের ওপর চাপাও কেন হে,
ভুলে যেও না অন্ধের রয়েছে হাতিকে বর্ণনার অধিকার।
অনুপল–৭৪ : মনচুরি
মন চুরি গিয়েছি তো কি হয়েছে?
দেহখানি রয়ে গেছে,
জীবনের মধু চেখে নিতে।
অনুপল–৭৫ : পতন
এক ফোঁটা শিশির…
টুপ করে মাটিতে ঝরে।
শ্বাসরুদ্ধ নীরবতা ঘনাইছে দিকচক্রবালে।
অনুপল–৭৬ : আঁতেল
কথা দিচ্ছি-
মানবজাতির ভূত-ভবিষ্যত নিয়ে
টু-শব্দটি করব না।
অনুপল–৭৭ : পতন–২
এই ভালো:
দুজনে চুপচাপ বসে আছি অন্ধকারে,
বৃন্তচ্যুত রক্তজবা খসে পড়ছে মাটিতে।
অনুপল–৭৮ : গুহ্যদ্বার পরিমার্জনা
গুহ্যদ্বার পরিচ্ছন্ন রাখতে ফরমান জারি হয়েছে সরকারে।
বালবৃদ্ধবণিতা ব্যস্ত মলদ্বার পরিমার্জনে:
শিশু ও পাগল যথারীতি উদাসীন সরকারী ফরমানে।
অনুপল–৭৯ : কালা
কানে কালা হওয়ার পর থেকে নিজেকে কবি লাগছে:
তুমি বলছ একটা, আর আমি শুনছি অন্যটা।
অনুপল–৮০ : অন্ধের হস্তিদর্শন
নিজের চোখে যা দেখেছো সেটা অন্যের ওপর চাপাও কেন হে,
ভুলে যেও না অন্ধের রয়েছে হাতিকে বর্ণনার অধিকার।
অনুপল–৮১ : অসম্পূর্ণ
তুমি কে হে? যখন-তখন ঢুকে পড়ছ ঘরে!
একবার ভাবছ না রঙ্গ এখনও বাকি:
‘ভালোবাসি’ কথাটি বলাই হয়নি ঠিক করে।
অনুপল–৮২ : দিনবদল
বিলকুল বদলে গেল দিন!
চামে পেয়ে ভেংচি কাটে
লেজকাটা বান্দর।
অনুপল–৮৩ : জীবনের মানে–১
ধা তেরে কেটে ধিন
তেরে কেটে ধিন তা
তা ধিন্ ধিন্ তা।
বেশি বরফট্টাই করো না বুঝলে…
জানি কে তুমি, কার জোরে রোয়াব দেখাও।
অনুপল–৮৪ : জীবনের মানে–২
জীবনের একটাই মানে,-আপস:
মানি না…বলে ফুরুৎ করে উড়াল দিল চড়ুই।
অনুপল–৮৫ : শৌর্যগুপ্ত
চন্দ্রগুপ্ত কবে মরে ভূত হয়ে গেছে!
তার নখের যোগ্য নয়…
শৌর্যগুপ্তরা বেশ করে-টরে খাচ্ছে আজকাল।
অনুপল–৮৬ : জেল
সবাই বহাল তবিয়তে আছে:
জেল ফেরত লোকটি
আবার খুন করে বসে।
অনুপল–৮৭ : বিছাল
রাস্তায় রব ওঠে বিছাল…বিছাল…
নেতা বেরিয়েছে ভোট শোভাযাত্রায়।
অনুপল–৮৮ : অক্সিজেন মাস্ক
ভিড়, পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে কেউ:
ঘাড় ফিরিয়ে দেখি অক্সিজেন মাস্ক
শুয়ে আছি অচেনা হাসপাতালে।
অনুপল–৮৯ : খুনি কাস্তে
কাস্তে হাতে কৃষক নেমেছে ধানখেতে
খুনি কাস্তে ধানখেতের গভীর গভীরে।
অনুপল–৯০ : রোয়াব
বেশি বরফট্টাই করো না বুঝলে…
জানি কে তুমি, কার জোরে রোয়াব দেখাও।
অনুপল–৯১ : পিউ কাহা
কদম্ব ফুটেছে ডালে
সুরামত্ত পিউ কাহা কাঁদে
না জানি কার বিয়োগে।
অনুপল–৯২ : এ যুগের প্রেম
টোনা কহে-
টুনিরে, কী পিষ্টক খাওয়ালি!
ইষ্টক হইয়া বধিছে অন্তর।
অনুপল–৯৩ : প্যাঁচ
দুয়ারে ভোটপ্রার্থী কড়া নাড়ে,
ঘাসের ডগায় আটক ফড়িং
ছোটার চেষ্টায় প্রাণপণ।
অনুপল–৯৪ : লিপস্টিক
লিপস্টিকে রাঙা ঠোঁট
রাতের সড়ক গভীর
গণক ও গণিকায়।
অনুপল–৯৫ : বৃষ্টি
কাছেপিঠে বৃষ্টি হচ্ছে
বৃষ্টি ঝরে দূরে। বৃষ্টি নেই
বাক্সবন্দি রুপালি শহরে।
অনুপল–৯৬ : ঋতুচক্র–১
শৈশব:
লতানো লাউয়ের ডগা
একফোঁটা কোমল শিশির।
অনুপল–৯৭ : ঋতুচক্র–২
যৌবন:
ঘোড়ার খুরের শব্দ
চমকায় স্থবিরতা।
অনুপল–৯৮ : ঋতুচক্র–৩
প্রৌঢ়ত্ব:
রংবাজ কোকিল ডাকে তারস্বরে
যদিও ফাগুনে লাল পলাশবন!
অনুপল–৯৯ : ঋতুচক্র–৪
বার্ধক্য:
নখদন্তহীন বাঘ
এখন আর নিজেকে চেনে না।
অনুপল–১০০ : কারাগার
পাখিটি দক্ষিণে উড়ে…কারাগার।
উত্তরে ধায়…কারাগার।
পুবে ও পশ্চিমে ছুটে…দেখে কারাগার।