ভাতঘুমে ও বেয়াড়া চুলের গলি-ঘুপচি । বায়েজিদ বোস্তামী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ৯:১২ পূর্বাহ্ণ, | ১৫৮৪ বার পঠিত
অপেক্ষা
অপেক্ষা মানে তো বসে থাকা নয় কেবল। যেমন বসে থাকা বাসস্টপে, নিশ্চিত জেনে, পরের বাসটা কখন আসছে; কয়েক মিনিটের হেরফের পার করে দেওয়া সিগারেট শলাকা পুড়িয়ে। অপেক্ষা আরোও দীর্ঘতর কিছু, গভীরতর কিছু। অপেক্ষার ভেতর আমরা ঘুমোই ও জেগে থাকি; বাজারহাট সারি, রুইয়ের কানকো তুলে দেখি—তাজা আছে কিনা; লিখি-পড়ি; ঘুরে আসি বিরিশিরি কি বান্দরবান; পার করি বর্ষা-বসন্ত। অপেক্ষা মরণভীতির মতোন জাগিয়ে রাখে অহর্নিশ। আমি তোমার জন্য অপেক্ষায় আছি, সোনা।
হাত জোড়া
হাত জোড়া নিয়ে বড্ডো বিপদে আছি। সারাদিন প্রেম-প্রতিবাদ-প্রার্থনাহীন অলস ও নিঃসঙ্গ হাত জোড়ার কোনো কাজ নেই। প্রেমে আঙুলে আঙুল জড়ানো নেই, প্রতিবাদে বজ্রমুষ্টি উত্থান নেই, প্রার্থনায় বুক-কপালে ছোঁয়ানো নেই। কলম, কাস্তে, প্ল্যাকার্ড কিংবা নারীর কটিদেশ যা কিছু থাকতে পারতো, হাত জোড়াকে ব্যস্ত রাখতে, সে-সবের কিছুই নেই। ফলে, হাত জোড়া কেবলই ভূমি বরাবর ঝুলে থাকে। ঝুলতে-ঝুলতে নিঃসাড় হয়ে পড়ে কখনো কখনো। তখন, একরকম বাধ্য হয়েই, হাত জোড়াকে পেছনে নিয়ে পরস্পরের সাথে বেঁধে রাখি।
ভাতঘুমে
ভাতঘুমের ঝিমুনিতে কীসব স্লাইড শো চলতে থাকে। তোমার মাখন নরোম বুকে ঠাঁই খুঁজে পায় আমার বিষ-ভারানত মাথা। চাঁপা কলির মতোন মসৃণ, সুশোভন তোমার আঙুল চষে বেড়ায় আমার বেয়াড়া চুলের গলি-ঘুপচি। ক্রমশ তলিয়ে যেতে থাকি আমি। জাদুকরের জাদুদণ্ডের মতোন আলতো ছুঁয়ে আসে আমার মধ্যমা তোমার কাজল-সোহাগী আঁখি পল্লব, কপোলের নীল শিরাগুলি। সুরাপাত্র হয়ে আমাকে মোহন ফাঁদে ফেলে তোমার কচি জলপাই পাতার মতোন অধরৌষ্ঠ। জাত মাতালের নিপুণতায় ঠোঁটের ছিপি খুলে পান করি সমুদ্র সমান গরল। তোমার আরক্তিম মুখের দৃশ্যপটে নাচে খুশির খঞ্জনা। স্লাইড শো চলতেই থাকে…।