একগুচ্ছ কবিতা । সৈয়দ শিশির
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ নভেম্বর ২০১৬, ১১:২০ অপরাহ্ণ, | ৪৮৬২ বার পঠিত
জন্ম ও বিশ্বাস
এ পৃথিবীতে আসবো এমন কোনো ভাবনা
কখনো আমার ছিলো না;
অর্থাৎ, আমি জন্মগ্রহণ করিনি। বলা যায়—
বিশেষ কোনো পরিস্থিতি অথবা প্রক্রিয়ার শিকার;
যেমন— সুইচ টিপলে ঘুমন্ত বাতি জ্বলে ওঠে।
জীবনের খেলাঘরেও কাউকে বিশ্বাস করতে চাইনি।
ফুটন্ত গোলাপ, প্রস্ফুটিত গোলাপ কিংবা পদদলিত গোলাপ
কোনোটাতেই আমার বিশ্বাস ছিলো না। বলা যায়—
বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েই বিশ্বাসহারা হয়েছিলাম।
মনে হয়
মনে হয় :
স্নেহভূমিতে আজকাল খুব সহজেই
হানা দেয় নরকের কীট,
হায়রে কীট! মায়া হয়। অকৃত্রিম মায়া।
কেন অকারণ হানা?
মনে হয় :
অবুঝ আর মৃতপ্রায় কীট
হাতিয়ে নিতে চায় স্বর্গভূমি,
অগ্রজের ছায়া করুণায় উল্লসিত। বেপরোয়া।
পারলে আয়নার সামনে দাঁড়া।
মনে হয় :
নর্দমার জলেই পবিত্র হবে কীট
তবে পদ্মের বুকে কাদা ছিটিয়ে,
করুণার হাত সরে গেলে অন্ধকার! গলিপথ।
কিছুটা সময় মাতলামি।
মনে হয় :
কীট হাসে, কীট উড়ে; কখনো-বা ঝিম ধরে।
ভূমিজুড়ে হাসি ঝরে; কীট তবু নড়েচড়ে।
প্রিয়জন
প্রিয়জন পাওয়া সহজ কথা নয়, আরও কঠিন
কারও ভাবনায় প্রিয় হয়ে ওঠা,
তেমন কঠিনেরে ভালোবেসেই আজ শুধু শূন্যতা।
অপমানের জ্বালা ভুলি কেমনে বলো, কিছু জ্বালা থাকে
হৃদয়ের অতলে, ক্ষণে ক্ষণে জ্বলে—
যে জ্বালা দিলো দেবী ভালোবেসে আমাকে, সে তো মহাদামি।
প্রিয়জন আমার জীবনের ডায়রি, থেমে থাকা চোখ
লাজুক সময়ের উড়ন্ত ডানায় হেঁটে চলা চিতা
যে চিতা না চিনলে বুঝে নেয় নগদে— আপন খোরাক।
বোকার প্রিয়জন, হাঁটি হাঁটি ভাবনা— সবকিছু আজ
মোহের আদালতে আহত সময়
বেদনার চিতায় মুখ টিপে হাসি; হায়! প্রিয়জন…
ঈর্ষা আমার
ঈর্ষায় জ্বলি… ঈর্ষায় জ্বলি
আমার আগে তিমির যখন
পরখ করে তোমায়।
ঈর্ষায় পুড়ি… ঈর্ষায় পুড়ি
আমার আগে দীপিকা যখন
তোমার চোখে তাকায়।
ঈর্ষায় কাঁদি… ঈর্ষায় কাঁদি
আমার আগে অনিল যখন
তোমার দেহ জুড়ায়।
ঈর্ষায় থামি… ঈর্ষায় থামি
আমার আগে বাদল যখন
কদম দিয়ে হাসায়।
ঈর্ষায় ভাবি… ঈর্ষায় ভাবি
আমার আগে কোন সে হৃদয়
ভাবনা কিছু শেখায়?