রোদ্রবসনী ও প্রণয় কাব্য । মনিকা আহমেদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ নভেম্বর ২০১৬, ৭:১৭ অপরাহ্ণ, | ১৭৯৩ বার পঠিত
এসো নয়ানজুলি
কাছে থাকার কালে মনে হত
আহা রয়েছি’ই তো কত!
আমরা দূরবাসী হলাম
বেড়ে গেল ব্যাধি, অসীম ক্ষত
ঘুণ পোকা খেয়ে ফেলে বুক;
জোৎস্না রাতেও অমাবস্যায় জেগে ওঠে,থৈ থৈ কুপ।
দূরত্ব হয়ে গ্যাছে,সেই ৬৭০দিন হয়ত
অন্ধ হল চোখ
ছিঁড়েছি কত চিরকুট, উন্মাদ শোক
রিহার্সাল করে ডাকে অস্থির ডাহুক;
হারিয়েছ আমারে—,
এখন নদীর বুকে অসুখ?
এখানে হেমন্তও এসে গেল—
কাঁচা ধানের গন্ধম বেঁটে
আয়না খুলে দেখ্যো
শীতের আগে খোলস খুলে ফেলো
মানুষ যেমন জলের রেখায়
গহীন কথা বলে,
তুমি সাহস করে জলের কাছেই সত্যি বলে ফেল!
এসো আবার নয়ানজুলি,
এসো কোকিল প্রহর খুঁজি
শাওন রাতে চাঁদের রঙে ভিজি
শীতের শেষে বসন্ত স্নাণে ডুব সাঁতারে ডুবি?
এত দিনের বিরহ যত
সব ভুলে যাই, ভুলি!
তরুনী চোখ
একদিন জানালায় উকিঁ দিতো ফাল্গুনী চাঁদ, জোছনা ছড়ায়ে হাসতো নটবর। মোহনীয় কুঁঞ্চিত ভুরু তুলে চোখ মেলে তাকালেই মনে মনে বলতাম, তুমি কি জারুল বনের সবুজ পাতার একটুখানি সুগন্ধ ছড়াতে এলে! নাকি নিয়ে এলে অমরাবতীর মুকুল?
হয়ত তখন গাছেরা ঢেউ হয়ে যেত
নাচত নক্ষত্র খানিক চোখের তারায়। আমার কথারা হারাত…, আমি কিছুই বলিনি তোমায়।শুধু চোখের তারার ক্যানভাসে জল রং ছবি এঁকেছি কত।সুদূর অতীতের ছায়া গুলো ধূলো হয়ে উড়ে গেছে কবেই… কাছে যাওয়া হয়নি কোনদিন সীমানাও মাপা ছিল না কোথাও,
তোমাতে আমাতে;
ধূসরিত প্রবল বিচ্ছিন্নতা…
এটা ঠিক মনে আছে,
নকসীকাঁথায় মুড়ি দিয়ে তরুনী দুচোখ সূদূরে হারাতো কি বহ্বলতায়…আহা!
তখন স্বপ্ন বুঝত,হদয়ঙ্গম হত কত কিছু,
বুনো মেঘ উড়ত চুলে। খিল খিল হাসি তোমার সমুদ্রে—
মৃত্যুর হুইসেল ছাড়া সব শব্দ শুনত বুকের অচিন পাখি।তখন চোখ বন্ধ করলেই মৌসুমী ঝড়ো বাতাস বুকের ভেতরটায় উথালপাথাল কেন যে!
আজ শরতের বেহালায় বাজলো বৈরাগী তান
খোলা চুল উড়ল লেলুয়া বাতাসে—
কিছু উড়ো চিঠি নিয়ে এলো বাসন্তি রং
দিনের নিঃস্তব্ধতা ভেঙে,
চকিতেই—, চকিতেই— হারালো কি অপূর্ব গোধূলী অথবা হেঁয়ালী অন্ধকার।
আর লুকোচুরি হয়না চাঁদ কিংবা সবুজ পাতাতে
রাজকুমারের অভয় বাণী শোনা না পাখি,
বৈরাগী মন
পৌষের বাতাসই এমন!
রোদ্রবসনী ও প্রণয় কাব্য
১
তোমার সাথে আলাপ ছিল গত জন্মে—
এ জন্ম তো অবাধ্য, গন্ধমাদল।
ভেবেছিলে, সেই ভূবন মনোমহিনী হয়ে দৌঁড়ে যাব? সেই রোদ্রবসনী নই গো সে আর আমি
কিছু কিছু কষ্টবোধ মনে পড়ে গেলে, থামি!
২
শ্রাবণের বরিষণে প্রেম ছিল মনে মনে,
শরৎ এ উড়িল পবন ঐ জলে, বাতাসে
হেমন্তের হলদে রোদে পুড়ে পুড়ে সোনা
বসন্তে সবার নাকি প্রেম বাড়ে,
আমার তো বাড়ে না!
শীত রাতে খিড়কীতে
কাঁপে মন, জানোনা
গ্রীষ্মঋতু নিঃশব্দে শ্বাস ফেলে
তার শুধু বহু রূপী বায়না
আমার ছয় ঋতু যায় আসে;
প্রণয় হানা দেয় না