মাস্টার মাইন্ড ক্রিমিনালের উপাখ্যান । মোঃ অনিকউজ্জামান
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ অক্টোবর ২০১৬, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ, | ২৮৬৪ বার পঠিত
আয়নাবাজি (২০১৬) একজন বহুরূপী, মাস্টার মাইন্ড ক্রিমিনালের উপাখ্যান… !!!
জীবন একটি রঙ্গমঞ্চ, যেখানে সকলেই নিজ নিজ চরিত্রে প্রতিনিয়ত অভিনয় করে যাচ্ছে। আর এই রঙ্গমঞ্চে যে তার নিজের চরিত্রের থেকে বেরিয়ে একের অধিক চরিত্রকে নিজের মাঝে ধারণ করতে পারে, সেই হতে পারে সব থেকে বড় মাস্টার মাইন্ড ক্রিমিনাল। আয়নাবাজির অদল বদল খেলায় সেই হয় পারফেক্ট ‘আয়না’। আয়নাবাজির গল্পটি এমনই এক মাস্টার মাইন্ড ক্রিমিনাল ‘সরাফত করিম আয়না’কে নিয়ে যে কিনা গিরগিটির রঙ বদলানোর মত করে নিজের চরিত্র বদলায়। মুহূর্তের মধ্যে এক চরিত্র থেকে অন্য চরিত্রে রূপান্তরিত হবার এক অদ্ভুদ ক্ষমতা আছে তার। যাকে কখনো পুলিশও পারেনি নিজেদের আইনের আওতায় আনতে। যারা তাকে ব্যবহার করে নিজেদের কার্যসিদ্ধি করতে চায়, তারাও জানে না তার শেষ চালটি কি হবে। এক কথায় বলতে গেলে ‘আয়না’র একটি ডায়লগ দ্বারাই ‘আয়না’কে একমাত্র বিশ্লেষণ করা সম্ভব, “আমি ‘আয়না’, একজনই” !
‘আয়নাবাজি’ সমসাময়িক বাংলা চলচ্চিত্রের গৎবাধা গল্পের মাঝে একটি বিশাল আকারের ভিন্নধর্মী কিছু করার এক্সপেরিমেন্ট। এটি এমন একটি পলিটিক্যাল স্যাটায়ার থ্রিলার গল্প যা দর্শকেরা বাংলা সিনেমার ইতিহাসে কোন দিনও দেখেননি, এমনকি এমন গল্পে যে বাংলা সিনেমা হতে পারে তা কল্পনাও করেননি। বেশ কিছু চমকে ভরপুর ‘আয়নাবাজি’র গল্প শুরুতে একটু স্লো হলেও আস্তে আস্তে ডালপালা মেলে গভীরে প্রবেশ করেছে ও সেই সাথে দর্শককেও সম্মোহনের মাধ্যমে গোটা সময় গল্পের সাথে জুড়ে রেখেছে। মুভির নির্মাণ নিয়ে বলার কিছুই নেই। ঢাকার পরিচিত-অপরিচিত অসাধারণ সব লোকেশনে শ্যুটিং করা মুভিটি দেখতে দেখতে মনে হয়েছে আমিও মুভির গল্পের সাথে সাথে গোটা ঢাকা শহরে বিচরণ করছি। ক্যামেরার কাজ অত্যান্ত যত্নশীল। কালার গ্রেডিং চোখে একদম আরামদায়ক। দেখে বেশ আরাম পাবার মত। ড্রোন থেকে নেয়া বেশ কিছু মাস্টার শর্ট আছে যা দেখে বিস্ময় জাগতে বাধ্য কারণ এমন ধরণের স্টাইলিশ শর্ট হলিউডের অ্যাকশন মুভি গুলোতে দেখা যায়। বৃষ্টির অনেক দৃশ্য আছে যেখানে পাশে পাশের পরিবেশকে কালার কম্বিনেশনের মাধ্যমে অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করা হয়েছে বিশেষ করে ‘চঞ্চল’ এর একটি কান্নার দৃশ্য। সব মিলিয়ে এত সুন্দর যত্নশীল মেকিং কোলকাতার আর্ট ফিল্ম গুলোতেও কখনো দেখা যায় না। এ বছরের শুরুতে ‘কৃষ্ণপক্ষ’ মুভির মেকিং মন কেঁড়েছিল, আর বছরের শেষে মন কাঁড়লো ‘আয়নাবাজি’। মুভির গান গুলো গল্পের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ণ ও মনকাঁড়া ছিল কিন্তু গান গুলোর দৈর্ঘ্য খুব বেশী না হওয়াতে হতাশ হয়েছি। ‘হাবিব’ এর কন্ঠে গাওয়া গানটি ভাল লেগেছে। ‘চিরকুট’ এর জেলখানায় দৃশ্যায়িত ‘দুনিয়া’ গানটিতে ‘চঞ্চল’ এর পারফরমেন্স পুরাই অস্থির ছিল। মুভির শেষে ‘লাগ ভেলকি লাগ’ গানটির তো কোন জবাবই হবে না। আর ‘আলু পেঁয়াজের কাব্য’ গানটিতে শাক-সবজী ও মাছের বাজারের মত এমন নোংরা জায়গাকে যে এতটা সুন্দর ও কালারফুল করে তুলে ধরা যায় তা এ গানটি না দেখলে কখনোই বোঝা সম্ভব নয়। কলকাতার বিখ্যাত ‘ইন্দ্রদীপ দাসগুপ্ত’ এর করা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও শ্রুতিমধুর ছিল। বাই দ্য ওয়ে, মুভিতে কিন্তু ‘চঞ্চল’ ও ‘নাবিলা’র একটি কিসিং সিন আছে যা তাদের পিছন থেকে এমন ভাবে শ্যুট করা হয়েছে যে দর্শক বুঝতে পারছে যে পর্দায় কি হচ্ছে কিন্তু তারা তা দেখতে পারছে না। ‘অমিতাভ রেজা’ ভালই ডিপ্লোম্যাটিক পারসন, কিভাবে সমালোচনা সামাল দিতে হয় সেটা সে জানে। এছাড়া মুভিতে তাদের দুজনের মাঝে রোমান্সটাও জমেছে অনেক সুন্দর।
অভিনয়ের ব্যাপারে বলতে গেলে ছোট বড় কোন চরিত্রেরই অভিনয়ে খুঁত ধরার মত কোন অবকাশ ছিল না। মুভিতে একটি ছোট বাচ্চার চরিত্র ছিল যা তার অল্প উপস্থিতি ও চতুর ডায়লগ দ্বারা দর্শকের মন জয় করে নিয়েছে, একদম ‘মুসাফির’ মুভির ‘বান্টি’ চরিত্রের মত। ‘পার্থ বড়ুয়া’, ‘লুৎফর রহমান জর্জ’ ‘গাউসুল আলম শাওন’, ‘বৃন্দাবন দাস’ এরা সকলেই অভিজ্ঞ অভিনেতা তাই এদের অভিনয় নিয়ে বলার কিছুই নেই। তারা প্রত্যেকেই নিজেকে ঢেলে দিয়েছে তাদের চরিত্রে। ‘পার্থ বড়ুয়া’র রুমমেট ছোট ভাইয়ের একটি ছোট চরিত্রে ‘মিরাক্কেল’ এর ‘জামিল’ কখনো ইমোশন আবার কখনো হিউমার মিলিয়ে অনেক সুন্দর অভিনয় করেছে। তাকে এমন ধরণের চলচ্চিত্রে নিয়মিত আশা করছি। মুভির শেষে একটি ছোট্ট এপিক চরিত্রে স্বয়ং ‘অমিতাভ রেজা’কেও দেখা গেছে। তাকে ঐ চরিত্রে দেখে হলের আমরা সবাই চরম মজা পেয়েছি। আর এ মুভির সব থেকে বড় সারপ্রাইজ আকর্ষন হিসেবে ছোট্ট ২টি দৃশ্যে ছিল এখনকার সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক ‘আরেফিন শুভ’। তার এন্ট্রি সিন দেখেই গোটা হল উল্লাসে ফেটে পড়েছিল। খুবই ছোট ঐ দৃশ্য দুটিতে সে পুরাই পাওয়ার প্যাকড পারফরমেন্স দিয়েছে। এবার যাকে নিয়ে না বললেই নয় সে হচ্ছে নবাগতা ‘মাসুমা রহমান নাবিলা’। একাধারে টেলিভিশন প্রেজেন্টার, মডেল, আরজে, টেলিভিশন হোস্ট ‘নাবিলা’র এটাই যে প্রথম মুভি তা দেখে বিন্দুমাত্র মনে হয়নি। তার ভুবন ভোলানো হাসি, মায়াবী চেহারা ও খুবই ন্যাচারাল অভিনয় দেখেই বোঝা গেছে, তাকে যদি নির্মাতারা (‘অমিতাভ রেজা’র মত নির্মাতা, ‘শামীম আহমেদ রনি’র মত নয়) যদি সঠিক মত কাজে লাগাতে পারে তবে ঢালিউড নিঃসন্দেহে একজন সুঅভিনেত্রী পেতে যাচ্ছে। এ বছর টিভি পর্দা থেকে দুজন নতুন মুখ ঢালিউডে নায়িকা হিসেবে নাম লিখিয়েছে। প্রথমে ‘বুবলী’ ও পরে ‘নাবিলা’। এই দুজনের মুভিতে তাদের অভিনয়ের মাঝে তুলনা করে দেখলেই বোঝা যায় কার ভবিষ্যত কেমন হতে যাচ্ছে। কে রক্ত-মাংসের মানুষ আর কে কাঠের পুতুল। কোথায় ‘শামীম আহমেদ রনি’/’রাজু চৌধুরী’ আর কোথায় ‘অমিতাভ রেজা’। কোথায় আমড়া আর কোথায় আম !
‘চঞ্চল চৌধুরী’ এমন এক শিল্পীর নাম, যার মাঝে যে আসলে কি ধরণের প্রতিভা আছে তা দর্শকদের কাছে আজ পর্যন্ত এক রহস্যই রয়ে গেছে। আমরা ‘মোশাররফ করিম’কে চিনি। তিনি তার লাইফে যত রকমের চরিত্র (বিশেষ করে একই ধরণের চরিত্র) আছে সবই নাটকে ও সিনেমায় করে গেছেন। ‘মোশাররফ করিম’ যেভাবে তার প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছেন, আমার মতে ‘চঞ্চল’ তা পাননি। তাকে নাটক গুলোতে ‘মোশাররফ করিম’ এর থেকেও বেশী বাজে ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সর্বদা একই ধরণের গ্রাম্য, ক্ষ্যাত ও হাবা-গোবা টাইপের চরিত্রের ভিতরেই ‘চঞ্চল’কে সকল নাট্য পরিচালকেরা আটকে ফেলেছেন। ‘গিয়াসউদ্দীন সেলিম’ একমাত্র প্রথম তাকে একটু ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করেন তার ‘মনপুরা’ মুভিতে, তবুও তিনি সেই মুভিতে ‘চঞ্চল’কে হাবা —গোবা ও গ্রাম্য চরিত্রের খোলস থেকে বের করেননি। অবশেষে, ‘চঞ্চল চৌধুরী’ যে আসলে কোন জাতের সেটা বের করে আনলেন ‘অমিতাভ রেজা’। ‘আয়না’ চরিত্রটি এতটাই ইউনিক ও অদ্ভুদ যে ‘চঞ্চল’ এর মত সর্বদা গ্রাম্য, হাবা-গোবা চরিত্রে অভিনয় করা কোন অভিনেতা যে এই চরিত্রে অভিনয় করবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করা সম্ভব নয়। আমি বলবো এটা ‘অভিতাভ রেজা’র অসাধারণ একটি সফল রিস্ক ছিল ‘চঞ্চল’কে দিয়ে ‘আয়না’ চরিত্রটি অভিনয় করানো এবং শুধু এই চরিত্রটি করতে গিয়ে ‘আয়নাবাজি’তে ৬টি ভিন্ন ভিন্ন পারসোনালিটির মানুষে রূপান্তরিত হওয়া ‘চঞ্চল চৌধুরী’ যে অভিনয় করেছেন তাতে তিনি যদি জাতীয় পুরষ্কার পেয়ে যান তবে আমি মোটেও অবাক হব না ও আশা করি এর পর নির্মাতারা ‘চঞ্চল’কে দিয়ে নাটক/সিনেমা বানানোর সময় তাকে তার প্রতিভা অনুযায়ী মূল্যায়ন ও চরিত্র প্রদান করবেন।
‘আয়নাবাজি’ গোটা মুভি একা টেনে নিয়ে গেছে ‘চঞ্চল চৌধুরী’ আর তাকে এ ব্যাপারে সফল ভাবে সাহায্য করেছে ‘পার্থ বড়ুয়া’ ও ‘নাবিলা’। মুভির প্রতিটি ডায়লগই পাওয়ার প্যাকড ও হিউমারে সম্মৃদ্ধ। চরম এঞ্জয় করেছি ‘চঞ্চল’ ও ‘পার্থ’ এর কমিক টাইমিং গুলো। এ সকল দৃশ্যে মন খুলে হেসেছি। মুভির কিছু কিছু ডায়লগ সেন্সর বোর্ডে পছন্দ না হওয়ায় বিপ করে দেয়া হয়েছে যা শুনতে খুবই খারাপ লেগেছে। আমার মতে স্ক্রিপ্টরাইটারের দরকার কি ছিল এমন এডাল্ট টাইপের শব্দ স্ক্রিপ্টে লেখার যেখানে জানা কথা সেন্সর বোর্ড এ নিয়ে ঝামেলা করবেই। একটি বাক্যের মাঝে বিপ শব্দটি যে কি পরিমাণ অসহ্যকর তা বলে বোঝানো যাবে না, বাক্যটির প্রতি দর্শকের মনযোগটাই নষ্ট করে দেয় এটি। যাই হোক, তবে অনেক ভাল লাগার পরেও মুভির কিছু কিছু নেগেটিভ সাইড আছে যা চাইলেও ওভারলুক করতে পারিনি। এ মুভির গল্পে একটি প্রধাণ প্লটহোল আছে, আপনারা ট্রেলারে দেখবেন ‘পার্থ বড়ুয়া’ একজন সাংবাদিক থাকে যে কিনা ‘চঞ্চল’কে সন্দেহ করে তার পিছনে লেগে থেকে তদন্ত করতে থাকে। অথচ মুভিতে কোথাও কোন ক্লু দেয়া হয়নি, কিভাবে ‘পার্থ’ ‘চঞ্চল’ এর সন্ধান ও ছবি পায়। একদম হঠাৎ করেই ‘পার্থ’ হাজির হয় ‘চঞ্চল’ এর এলাকায় ও তদন্ত শুরু করে। মুভির গল্পের এই বিষয়টি চরম মাত্রায় বিদঘুটে লেগেছে। এছাড়াও মুভিতে ‘চঞ্চল’ যখন প্রথম জেলে প্রবেশ করে, তাকে জেল গেটে নামিয়া দেয়া, ভি আই পি এর মত শার্ট-প্যান্ট-টাই পরে নিজে নিজে হেঁটে হেঁটে ‘চঞ্চল’ এর জেলে প্রবেশ করা, জেলের ভিতরে জলসা ঘরের মত অবস্থা ও ‘চঞ্চল’ এর নবাব এর মত জেলে ঢুকেই ডাইরেক্ট সেখানে আসন গ্রহণ করা এগুলো ছিল সম্পুর্ণ বাস্তবতা বর্জিত। একজন আইনের ছাত্র হিসেবে বলছি, বাস্তবে জেলে এমন এন্ট্রি ও পরিবেশ কখনোই সম্ভব নয়। সেখানে অনেক কড়া নিয়ন-কানুনের মধ্যে দিয়ে পার হতে হয়। ‘অমিতাভ রেজা’ এখানে একটু বেশীই কল্পনার আশ্রয় নিয়ে ফেলেছেন যা খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে। এই সব কিছু যদি বাদও দেই, তবুও সব থেকে বড় একটি সমস্যা ছিল এ মুভির ক্ল্যাইম্যাক্সে।
কিঞ্চিত স্পয়লার —
সকলেই জানে যে এ মুভির ক্ল্যাইম্যাক্সে একটি বড় আকারের টুইস্ট অপেক্ষা করে আছে এবং সকলের নানান রকম রিভিউ পড়ে আমার বেশ ভালই একটি এক্সপেক্টেশন ছিল মুভির এই টুইস্ট সম্পর্কে, কিন্তু এখানে আমি সম্পুর্ণ হতাশ। মুভিটির শেষে ‘চঞ্চল’ এর একটি প্রিজন ব্রেক দেখানো হয়েছে যা পুরোটাই ছিল যুক্তিহীন ও কাল্পনিক। আই মিন, সিরিয়াসলি ম্যান ! এভাবে কেউ জেল থেকে পালায় ? এভাবে ? এটা কি আদৌও সম্ভব ? আর কোন উপায় ছিল না ? ‘আয়না’র যে রকম পারসোনালিটি তাতে ‘অমিতাভ রেজা’ চাইলে আরো জটিল টাইপের প্রিজন ব্রেক পদ্ধতি দেখাতে পারতো যা মুভিটিকে হলিউড বা বলিউডের সমকক্ষে পরিণত করতে পারতো। কিন্তু আমি পুরোপুরি হতাশ। এটা কোন প্রিজন ব্রেকের পর্যায়েই পড়ে না। কোন পুলিশ কখনোই এতটা বেআক্কেল, দ্বায়িত্ব জ্ঞানহীন ও আবাল শ্রেণীর হতে পারে না যে কিনা তার অর্ধেক জীবন পার করে আসছে পুলিশের চাকরীতে। কখনোই না। বিলিভ ইট অর নট। এ ধরণের লেইম ও লজিকহীন প্রিজন ব্রেক একমাত্র তামিল-তেলেগু মুভিতেই দেখা যায় যা আদৌও কখনো সম্ভব নয়। এমন অসাধারণ একটি গল্পের শেষে এই ধরণের প্রিজন ব্রেক কখনোই মেনে নেয়া যায় না। এই একটি স্থানে আমি বলবো ‘আয়নাবাজি’র আয়নায় ফাটল ধরে গেছে।
স্পয়লার ফ্রি—
যাই হোক, ক্ল্যাইম্যাক্স আমার কাছে যতই লেইম ও লজিকহীন মনে হোক না কেন তবুও আমি সেটাও অনেক টান টান উত্তেজনা নিয়ে নিয়ে উপভোগ করেছি, থ্যাঙ্কস টু ‘লাগ ভেলকি লাগ’ গানটি। গানটি একদম শেষে ক্ল্যাইম্যাক্সে সঠিক সময়ে ব্যবহার করা হয়েছে দর্শকদের উত্তেজনার পারদ বৃদ্ধিতে। অবশেষে, কিছু ভুল ত্রুটি থাকার পরেও ‘আয়নাবাজি’ আমার দেখা অন্যতম সেরা বাংলা মুভি। মুভিটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পুর্ণ নির্মল বিনোদন ও টুইস্টে ভরপুর। এই মুভিটি বাংলা সিনেমাকে ও ‘চঞ্চল চৌধুরী’র ক্যারিয়ারকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। অন্তত ‘চঞ্চল’ এর অভিনয় দেখার জন্য হলেও এই মুভিটি দেখা উচিত। ‘অমিতাভ রেজা’ প্রমাণ করে দিলেন, একটি ভাল ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে সুনির্মিত মুভি তৈরী করলে তা দর্শক অবশ্যই গ্রহণ করবে। আশা করি, ‘আয়নাবাজি’ মুভিটি দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে এক নতুন ধারার মুভির ট্রেন্ড শুরু হবে যা বাংলা মুভিকে হলিউড-বলিউড না হোক অন্তত কলকাতা বাংলা আর্ট ও থ্রিলার ফিল্মের সমকক্ষে পরিণত করবে… !!!