রাসুনাহ মার্সডেনের কবিতা । ভাবানুবাদ : শাহানা আকতার মহুয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মার্চ ২০১৬, ১০:৪৯ অপরাহ্ণ, | ১৯৮৫ বার পঠিত
রাসুনাহ মার্সডেন ম্যানিটোবায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বৃটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের সাইমন ফ্রেজার ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজিতে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং ইউনিভার্সিটি অব বৃটিশ কলাম্বিয়া থেকে ক্রিয়েটিভ রাইটিঙে এমএফ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮২ সালে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকালে তাঁর মনের অন্য দরজা খুলে যেতে থাকে। ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে সাত বছর ইন্দোনেশিয়ায় থাকাকালীন নিজেকে বিভিন্নভাবে ব্যাপ্ত এবং ব্যস্ত করেছেন। শিক্ষা এবং বাণিজ্য বিষয়ক নানা বিষয় তিনি উম্মোচন করেছেন — যার কারণ হিসেবে উত্তর-রোমান্টিক নিউরোটিক ধারণাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টাকেই প্রধান ভেবেছেন। ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে ডিজাইনের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে কানাডা ফেরার পর থেকে বৃটিশ কলাম্বিয়ার পেন্টিক্টন শহরে En’Owkin International School-এ ত্রিয়েটিভ রাইটিং পড়াচ্ছেন। রাসুনাহ-র ভ্রমণ নিশ্চিতভাবেই তাঁর লেখালেখিতে প্রভাব ফেলেছে। জাকার্তায় রাসুনাহ ১৯৮৭ সালে Voices নামে Chapbook প্রকাশ করেন। ২০০২ সালে প্রকাশিত গদ্যসংকলনের জন্য তিনি Aboriginal Arts Award লাভ করেন। ২০০১ সালে আদিবাসীদের ননফিকশন সংগ্রহ Crisp Blue Edges তাঁর এক অনন্য কীর্তি।
পিতা
আলোর বিশাল জলাশয়ে
একটিমাত্র শাদা রেখা
এবং তারপরেই গভীর অন্ধকার
বছরে একবার বাবার সাথে ভ্রমণে যেতাম
উত্তরে, আরো উত্তরে…
গ্রীষ্মের ছুটিতে
শীতল রাতে পিছনের সিটে বসে
দীর্ঘরাতে দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রা
এভাবেই পথের চিহ্নগুলি চিনতে শিখেছিলাম।
‘সামনে ৩টি বাঁক’
‘ধীরে চলুন’
আচমকা ঝাঁকুনি: পেছনের সিট থেকে কথা
বললে জেগে থাকাটা সহজ হয়
জেগে থাকা এবং জাগিয়ে রাখাতে
তিনি খুব আনন্দ পেতেন,
ওখানে এখন শুধুমাত্র একটি শাদারেখা
আলোর বিশাল জলাশয়
এবং তারপরেই গভীর অন্ধকার
ম্যারিয়স’র জন্য শোকগাথা
তোমাকে জানানো উচিত ছিলো, ম্যারিয়স
পাহাড়ে এখন তুষারপাত হচ্ছে
এইজন্যই চারিপাশটা ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে আসছে কোমলভাবে
তুমি যেভাবে স্বপ্ন দেখতে
কেই-বা এমনভাবে আকাঙ্ক্ষা করে বলে ভাবো, ম্যারিয়স?
আহা! কী অপরূপ, পুরুষ্ট তুষারকণা!
মনে আছে? তোমাকে বলেছিলাম যে কেবলি মনে হচ্ছে
এ বছর তুষারপাত হবে খুব
তুমিও আমার সাথে একমত হয়েছিলে, একদিন আগে
তুষারপাত আরো গভীর হবে
ঢেকে দেবে তোমাকে, কোমলভাবে।
তিনটি বস্তু
একপাশ পুরুষের
খরখরে দীর্ঘ দাড়ি
অন্যপাশটি নারীর
পরিপূর্ণ মুখশ্রী
দু’জনের হাতেই আয়না অথবা পানপাত্র
একই আসনে বসে থাকা দেহের মতো
মুখোমুখি
খোদাই করা বাঁকা দীর্ঘ আলখেল্লা
অসমান পাথর কেটে কেটে
এমন কি ওপরের সবুজ পাথরটিও
নিখুঁতভাবে কাটা।
কিম্ভূতকিমাকার
এই রক্ষক
রাজকীয়
বাঁকানো দাঁত খিঁচিয়ে
আগুনে নিঃশ্বাস উদ্গীরণ করে
মিশরীয় ঘন কেশরে তরঙ্গ তোলা
পুচ্ছধারী এই সিংহ
গুচ্ছ গুচ্ছ আয়তাকার হাড়ের
প্রতিটির শেষে বাঁকা
প্রাচীন হাতির দাঁত এবং
কালো
মাঝখানে ডোরাকাটা
প্রলেপ লাগানো লাল লাল শব্দ, গ্রাম…পর্বতমালা
অন্যদিকে
একশ সরু দাঁত।
বিশ্বাসীদের উপত্যকা
এইভাবে বলা যেতে পারে:
দেখো তারা গভীর থেকে আরো গভীর বনে হেঁটে যাচ্ছে
এটা যেন ব্যবচ্ছেদ শেষে এক রূপান্তর, তারা আনতে যাচ্ছে
অণুবীক্ষণ যন্ত্র ও গ্লানির নমুনা
তারা অনুসন্ধান করবে
মদ ও রুটি যা আমি ভাগ করে নিয়েছিলাম তোমার সাথে
কিংবা অন্যদের সাথে। পাতার মধ্যে তারা জুটিবদ্ধ হয়
আর নোংরা দাগগুলো লিপিবদ্ধ করে
ও হ্যাঁ, তারা লাশ পাবে এখানে সেখানে
বিশ্রী সংঘর্ষ, বিভ্রান্তি, রক্ত এবং ফোঁপানি
(তারমধ্যে কিছুটা আমারও) ও তারা
স্বর্ণ-পান্না ও জায়গা দখল করে নেবে, অপবিত্র করবে
আমার পবিত্র ভূমি
একটি জিনিস ছাড়া:
এসময়ের মধ্যে, তুমি আমার গায়ের গন্ধ নিতে সক্ষম হবে
আমিও স্পর্শ করতে পারব তাদের, যে অশ্রু উপত্যকায়
আমরা ইতোমধ্যেই এক হয়ে গেছি।