প্রথম কবিতার বইয়ের পাঁচটি কবিতা । এহসান হায়দার
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১২:৪২ অপরাহ্ণ, | ২৬২৮ বার পঠিত
আধুনিক কবিতায় কোনো দেয়াল নেই, সূত্র নেই, কোনো রাস্থা একে দেয়া নেই যে আমার গীর্জর দিন গুলো কেমনে আঁকা হবে তা মহল্লা-বাসির কাছ থেকে জেনে দিতে হবে। কবিতার রঙ যেনো এমনই হয় সন্ধ্যায় পাখিদের রঙ যেমন হয়, পাখির শব্দ কী করে আঁকা যায় তার একটা লিস্টি জেনে রাখা ভালো। এবার পড়ে নেয়া যাক এহসান হায়দার’র কবিতার দু একটা লাইন— সরিসৃপ প্রেমিক গণ আমাকে ঢোকায়/ সবুজ বনে — শৃঙ্খলে, জিহ্বার রঙ লাল/ তোমার মুগ্ধ রূপ জলে ভাসে/ জ্যোৎস্নায় পরি হয়ে যায়/ পরি এখন মানুষ/দিগন্তে দিগন্তে এই খবর রটে গেলে/ আমি রাত্রিকালে জোনাক জ্বেলে বসে থাকি/ তারারা নেমে আসে উঠোনে/ বলে যায় পরি হারা বার দিন… — রাশপ্রিন্ট
পরি বিষয়ী
অরন্যে তোমার সঙ্গে দেখাহলো— পরিচয়হলো
ছিলেপরি, ডানাছিঁড়েমানুষহয়েছ…
সাজ্জাদ শরিফ
এই সব দিগন্ত প্রতিবেশ আলোকছটা
হিরক পাখিটার গায় লেগেআছে
ভোরের চোরাবালি সদৃশ মেঘ
তমালের ডালছিঁড়ে আছড়ে পড়ছে
মৃত জ্যোৎস্নার করতলে;
সরিসৃপ প্রেমিক গণ আমাকে ঢোকায়
সবুজ বনে — শৃঙ্খলে, জিহ্বার রঙ লাল
তোমার মুগ্ধ রূপ জলে ভাসে
জ্যোৎস্নায় পরি হয়ে যায়
পরি এখন মানুষ
দিগন্তে দিগন্তে এই খবর রটে গেলে
আমি রাত্রিকালে জোনাক জ্বেলে বসে থাকি
তারারা নেমে আসে উঠোনে
বলে যায় পরি হারা বার দিন…
গত দিনের
ধূসর পাথর তোমার আশ্চর্য নিরবতা,
আমার ব্যাথা বিহঙ্গ
দীর্ঘ অভিমানের শীতকবে শেষ হবে
গোলাপের মৃত্যু
রোদ ওঠে বাগানে
মৃত মাছ নিয়ে আসে আলোউষ্ণতা
ডানায় হয় নাওড়া
ক্রুশ বিদ্ধ রঙ
গোলাপ শঙ্খের কাঁটা
বাবার চশমা বিষয়ে
গীর্জার দিন গুলো শৈশব
রাস্তার ওপাশে খড়ের বাড়ি
বাঁশ ঘেরা সবুজ ক্ষেতে দুলছে হেলেঞ্চা
লাউয়ের ডগায় ঝিঁঝিঁ
আমের মুকুল
ভালোবাসে সকলেই। চকোলেট রঙ য়েরপ্যান্ট
আর স্কুলশার্ট মাঠ জুড়ে বসে থাকতো
একদল শিশু —এই সকল শিশুরাই মাঝরাতে
ডুমুরের পাতা নাড়তো আর পেঁচার
ডানায় হন্যে হয়ে ঘুরতো
দিগন্ত মহাকাশ
এখন তাদের মৌরি ফুলের ঘ্রাণে পেয়েছে
দীর্ঘ রাত্রি পার হয়ে সূর্যের কাছাকাছি
কখনও পৌঁছানো যায়না—তাই হয়তো
আলো রঙ কিছুই বাবা মাজানেনা
সত্যি যদি বাবার চোখে একটা চশমা থাকতো
বাবা কেবল তেহতোনা— সবুজ রঙ কী
আরমাকে ও বলতে পারতাম কীভাবে চমকায়
বির্দীণ আলো
উদ্ধার পর্ব
রাতে — সকল ঋতুর সাথে কাটলো আমাদের। এখন আমরা অলস হবো— ক্ষনিক দেরিতে
যাবো পরি আর আমি— আমরা দু’জন। ফুসফুসের বাতাসের মতো বেরুবে ফসল— যা
আমরা অনেক কাল আগেই পেয়েছিলাম মধ্যদুপুরে। তাপু নরায় ফিরে…
আচ্ছা দুপুর কি ততোটাই নিরীহ— যখন জ্যোৎস্নায় বিড়ালের পোষা চোখ ভিজেছিলো
সব টুকু জানার মুহূর্তে রঙ নিভেযায়। বেদনার মতো কতো সুন্দর নিকষ ছিলো চোখ
পরির গ্রীবার নিচেত খন ঝুলছে আঠাশ বসন্ত— যদিও তখন গ্রীষ্মকাল আসেনি
রাত ছিলো আকাশে আকাশে— বকুল ফুলের তলাটা ছিলো কোঁকড়া চুলে মোড়ানো।
সামান্য হাওয়া আর উজ্জ্বল ফসিল নিয়ে দূরবর্তি নাবিক আসে — পরি চোখে ঘুমজল
আমাদের কাঁধ ও বুক জুড়ে একটামুখ। একটা মুখশ্যাম কমলার। আমাদের নিকট
ডানা ঝাপটে উড়ে যায়— একটা পাখি, একটা মাছ, একটা নদি।
অথচ উদ্ধার পর্বে পরি থাকে শান্ত আমাদের বুকে — অনন্য মুগ্ধ মন্ত্রের তীর্থযাত্রী