তেল ও গ্যাসহীন গাড়িটি আর আলোর মুখ দেখবে না! (ভিডিওসহ)
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫, ৬:৫৯ অপরাহ্ণ, | ৩৫৩৪ বার পঠিত
মাহি রহমান : পর্যাপ্ত শিক্ষা নিয়ে যে দেশে এখনো কোনো গাড়ি তৈরি করবে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেই দেশে একজন আবিষ্কার করে বসে আছে তেল ও গ্যাস-হীন গাড়ি। অবাক হওয়ার মতো গঠনাই বটে। আমির হোসেন, যার বাড়ী হচ্ছে বগুড়া। প্রকৌশল বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উনার যাতায়াত হয়নি কোনো দিন, স্বশিক্ষিতই বলা যায়। বগুড়া শহরের কাটনার-পাড়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক তিনি। অন্যের গাড়ি ঠিকঠাক করতে করতেই উনার এই শিক্ষিত হয়ে ওঠা। তবে আরো বেশি অবাক হতে হয়, এই মানুষটার কোনো খবর রাখেনি দেশের সরকার। তার তৈরি করা প্রযুক্তি বা নতুন একটি পণ্যের আবিষ্কার কোনো রকম গুরুত্ব পায়নি এই দেশে। রাশপ্রিন্ট
.আপনি গাড়ি তেল এবং গ্যাস ছাড়া চালানো সম্ভব হবে শুনে হয়ত আপনি বিস্মিত হবেন, কিন্তু গল্প না সত্য। বগুড়ার আমির হোসেন আশ্চর্যজনক উন্নত একটি তেল ও গ্যাসহীন গাড়ি আবিষ্কার করেছেন, যা 80 কিমি বেগে চালানো সম্ভব। তিনি পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। ইতিমধ্যে বগুড়া ও রাজশাহী শহরে পরিবেশ বান্ধব গাড়ি চলছে বিভিন্ন মডেলের। আমির হোসেন বৈদ্যুতিক গাড়ি টারবাইন সিস্টেম উন্নত করে এই গাড়িটি আবিষ্কার করেছেন যার নাম “ROFH-ROFH TAHIAA”, বাংলায় “দ্রুততম সুন্দর”।
.
ধীরে ধীরে জ্বালানি ও পরিবেশ দূষণ বৃদ্ধির ফলে, তিনি বেশ দীর্ঘ সময় ধরে চিন্তাশীল মনোভাব নিয়ে একটি জ্বালানী-সঞ্চয়ী গাড়ী আবিষ্কারের কথা ভাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও গবেষণা থেকে তিনি অবষেশে সিদ্ধান্তে আসেন যে একমাত্র তেল ও গ্যাসহীন গাড়িই সবচেয়ে উপকারী হবে বায়ুদূষণ কমিয়ে পরিবেশ রক্ষায়। টানা এক বছর তাঁর আপ্রাণ প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের পর তিনি সফল হন।
.
তাঁর উদ্ভাবিত ৫ টি আসন বিশিষ্ট এবং ২৫০ কেজি ওজন ক্ষমতা সম্পন্ন গাড়িটি চালাতে কিছুই লাগে না। না মবিল তেল, না গ্যাস। বিশেষ করে গাড়িটির ব্যাটারী মাত্র একবার চার্জ দিলেই পরিপুর্ণভাবে সম্পুর্ণ হয়ে যায় এবং গাড়িটি চালিত অবস্থায়ও চার্জ হতে থাকে। সবমিলিয়ে, মাত্র ২৫ টাকায় ৮ ঘণ্টা চলার খোরাক হয়ে যায় এই গাড়িটিতে। গাড়িটির গতিশক্তির উৎস হিসাবে 60 ভোল্ট বৈদ্যুতিক টারবাইন মোটর ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িটি চালানো খুবই সহজ। গাড়িটির যাবতীয় বিষয়াদি যেমন, গাড়ির গতি ও অন্যান্ন অনেক কিছুই দেখা যাবে চালকের সামনে অবস্থিত মনিটরে।
.
কোন জটিল প্রকৌশলী-বিদ্যা বা দুরূহ কোন প্রযুক্তির ব্যবহার না করায় গাড়িটি একদম ঝুঁকিহীন। ইতিমধ্যেই গাড়িটির ৩টি মডেল বের হয়েছে, ২টি গাড়ি এবং ১টি বাস। সাধারণ একটি ৫ আসন বিশিষ্ট বিদেশী গাড়ি কিনতে হলে অন্তত ১০ লক্ষ বা ১৩,০০০ মার্কিন ডলার প্রয়োজন পড়ে, অথচ মাত্র ২ লক্ষ টাকা বা ২৫০০ মার্কিন ডলার খরচ করেই আমির হোসেন তৈরী করেছেন এই গাড়িটি।
.
বর্তমানে আমির হোসেন নতুন একটি ৪৫০-সিসির ৪-সিলিন্ডারযুক্ত সিএনজি মোটরসাইকেল তৈরী করছেন। কেবলমাত্র সরকারের সহায়তা পেলেই এখন সম্ভব আমির হোসেনের স্বপ্নপূরণ। বাংলাদেশের ছোট একটি মফস্বল শহরই প্রমাণ করে দিলো যে আমরাও পারি একটি অত্যাধুনিক ও আকর্ষনীয় গাড়ি তৈরী করতে এবং এ গর্ব আমাদের বিশ্বজুড়ে হবে তখনই, যখন সরকারের সার্বিক সহায়তা ও সহযোগিতা পাবেন আমির হোসেনের মত অটোমোবাইল উদ্যোক্তা।
সূত্র : দি ডেলাইফ