তিনটি কবিতা । কামরুল হাসান
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জানুয়ারি ২০১৪, ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ, | ১৯৪১ বার পঠিত

আমাদের উদ্ভট পাঠশালে
আমাদের উদ্ভট পাঠশালে তোমরা কে কে এলে নতুন?
বসেছো ভুল এলোমেলো বেঞ্চীতে রোলনাম্বারহীন,
. তোমাদের নেই বুঝি ক্রমিক পতন?
এখানে সরল চালে তোলা হয় মৎস্য জটিল
একটি নধর মাছ বসে আছে তৃতীয় সারিতে
শিকারীর তপস্যা ঘুম, বেড়াল গোঁফের নিচে
আদর্শস্থানীয় হাসি, সে বিলায় প্রবল কৌতুক
আমাদের বর্ণশেখা, বহুবর্ণশেখা উতরোল পাঠশালে।
আমাদের উদ্ভূত পৃথিবীতে তোমরা কে কে এলে দুধশিশু?
ভুল দুগ্ধউৎসবের পাশে পড়ে থেকে অনাহারী রয়ে গেছ,
. তোমাদের নেই বুঝি মাতৃতামাশা?
এখানে সুঢৌল স্তন নিয়ে সরে গেছে যুবতী মায়েরা
রূপচর্চার বাহারী খোঁপায়, পাখিপ্রাণ পেয়ে গেছ
তাই আজো বেঁচে আছ আমাদের পুষ্টিহীন বাড়িঘরে
ধূলির পুরীষ আর বায়ুপিঠা ভাগাভাগি করে খেয়ে।
দ্বিধাময় জাগি
যেমন স্বপ্নে ভূমধ্যসাগরে গিয়ে আমি চিমটি কেটে
. দেখেছি এটা স্বপ্ন কিনা
এটা সত্যি ভূমধ্যসাগর কিনা, কোন ভূয়ের মধ্যে রয়েছি
. আদিগন্ত বিছানা সাঁতারে…
প্রাগৈতিহাসিক এই বল্কলে আজো লেগে যায় চিতা
সর্ণিবন্ধ দৌড়ে এসে সেঁটে যেতে চায়
আশ্চর্য তারার সংঘ থেকে তাঁর অমোঘ পতন
কি কুতূহলে আজো অরণ্যে জাগে ঋষিপাতা।
যেমন জলের মধ্যে নেমে আমি জলের শরীরে
. কাতুকুতু দিয়ে দেখেছি
কি মাৎসনায়নে ভাষা বাৎসায়ন
আদি বিন্যাসে আর কি কি জোড় দেয়া ছিল হাড়ে…
অনাঘ্রাত যে কবন্ধ জোড়ামনি চিতায় পুড়েছে
তাহার আলোর আয়নায় জনপদের মুখ
দ্বিধান্বিত বিষয় লুকানো পথে সহসা নামিনা
জেগে থাকি দ্বিধাময় শালপ্রালংশু মাতৃবিবরে।
প্রান্তরের অলৌকিক ঘণ্টাধ্বনি
কুম্ভিরাশ্রু বর্ষিত হচ্ছে, আজ সভা শেষ হবে না,
প্রস্তাববিহীন বৈঠকের পাট ফুরাবে এখনি।
. বরং হাওয়ার দিকে যাই,
প্রান্তরের কোন এক স্কুলে ঘণ্টা বেজে ওঠে
ঘণ্টা বেজে চলে—
অলৌকিক শব্দযানে উড়ে চলেছে সমগ্র প্রান্তর।
গোলাপী ফিতের অবাধ্য নিশানা উড়িয়ে
বেপরোয়া বয়সের যুবতীরা বাড়ি ফিরে যায়
. সূর্য প্রহরায়
গাছেরাও একটু হিসেবহীন হয়ে উঠে,
ভুল করে কোন কোন প্রগলভ গাছ
. দু-এক পা এগিয়ে আসে
ভুল বুঝে ফিরে যায় শেকড়ের মুখে,
গাছ নিশ্চল-এ প্রতিপাদ্যই প্রমাণিত থাকে।
কি করে ভুলি, শেকড় ছেঁড়ার আহ্বান প্রান্তরের ঘূর্ণিতে!