ঈশ্বরের কাছে নালিশ । জিয়াউদদীন আহমেদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ, | ৩২৮ বার পঠিত
বসন্ত আসেবেই জানি
পাতা সব ঝরে গেছে বহু দিন
একাকী গোলাপ শীতল থাবায় ছিন্ন ভিন্ন আহা ।লুটিয়ে পড়বে নাকি ?
তবু প্রানপনে উচু রাখে মাথা । কেউ কি মশাল নিয়ে আনবে কোন উষম বারতা?
কত রক্ত গংগা বয়ে যায়
গাজায়।
ভেসে যায় প্রানহীন শিশুদের লম্বা মিছিল
কোথায় হারায় কখন কে জানে।
মায়েরা সব দল বেধে
আহাজারি করে কোন খানে ।
জানতে ইচ্ছে করেনা
মাথার উপর শুধু শুন্য আকাশ
আহারে তোমরা কত দিন উপবাস
কি হবে এরপর জান নাকি আর ?
কেউ বলে উঠলো দৃঢ়কনঠে
বসন্ত আর বেশী দেরী নয়
আবার ফুটবে গোলাপ ।ঈশ্বরের কাছে নালিশ
যুদ্ধাহত শিশু অভিমান করে
একদিন বলেছিল জল ভরা চোখে
আমি ঈশ্বরকে সব বলে দিব তোমাদের কথা।
শিশুটি বাঁচেনি বেশিক্ষণ আর।
তার নালিশ কি পৌঁছেছিল
ঈশ্বরের কাছে- কে জানে ?
ফেরেশতার মত শিশুরা যখন
শয়তানের গুলির আঘাতে
লুটিয়ে পড়ছে অহরহ, আহা!
অসহায় মায়েরা জানে না কার কাছে যাবে?
ঈশ্বর এখন কোন ধ্যানে মগ্ন?
অথবা শূন্য সিংহাসন,
ঈশ্বর যেন বাড়ি নেই।
গাজার হাজার রক্ত মাখা শিশুরা
আজ করবে তাই মানব বন্ধন
বেহেশতের রাজপথে
বন্ধ হবে সব চলাচল।
ঈশ্বর কি আর বসে থাকবেন চুপচাপ!
বেরিয়ে আসবেন জানি- দৃপ্ত পদক্ষেপে।একাকী দাঁড়িয়ে আছে
একাকী দাঁড়িয়ে আছে
একটি লাল গোলাপ।
চারদিকে ঝরে যায় পাতা
সবুজকে সরিয়ে
হলুদ, লাল আর কমলা রঙের বিদায়ী
রঙিন দুঃখ নিয়ে বুকে।শূন্য গাছ, শূন্য ফুল,
ঘাসের উপর শুয়ে থাকে মৃত সব পাতার শরীর।
গাজার শিশুদের মত
বৃন্তচ্যূত পড়ে থাকবে তারা
কেউ তাকাবে না, আহা।
ভিতরে বাইরে যুদ্ধ ক্ষেত্র।
সমস্ত পৃথিবী বিবর্ণ
হয়ে যায় তবু পারে না রুখতে।অস্ফুট আর্তনাদে বৃক্ষরাজি
বুক খালি করে বেঁচে থাকবে নাকি ?
কোথায় চলে গেল পাখিগুলি
শুধু নীরবতা গ্রাস করে যেন চারিধার।
এ কোন হিম শীতল স্থবিরতা
অনবরত আকাশ ফাটানো বোমারু বিমান
যদিও মৃত্যুর জানান দিতে থাকে ।
কি সুখ তোমার ওহে বোমারু মানুষ?ঈশ্বরও বিষন্ন নির্বাক
একাকী পাতা ঝরার মাঠে
আহারে কি বিপন্ন মানবতা!তবুও একটি লাল গোলাপ
দাঁড়িয়ে আছে এখনো পাতা ঝরা গাছে।
কী সুন্দর আর ঋজু ভঙ্গীতে নিঃসঙ্গ একাকী।
কিছু কী বলতে চাও আজ দুঃসহ প্রহরে?