বউপাগলা ফাজুর অন্তিম রাত । নীহারুল ইসলাম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ৯:০৫ অপরাহ্ণ, | ৪১৮ বার পঠিত
কলি আজকাল সংসারের সব কাজকামের ফাঁকে সারাদিনে হাজার খানেক বিড়ি বাঁধে। সারাদিন মুনিষ খেটে আসার পর মরদ ফাজুকে সেই বিড়ি মহাজনের কারখানায় পৌঁছে দিতে হয় সন্ধ্যার পর।
বিড়ির মহাজনের নাম আফরোজ খাঁ। তার বিড়ির কারখানা বাজারে গুড়পট্টীতে। দিনোমানে কলি তার মরদকে শুধু এই কাজটাই করতে বলে। মরদ ‘না’ করে না, করতে পারে না। শরীরে সারাদিনের যতই ধকল থাকুক, খুশিতেই কাজটা করে। কলিও খুশি হয়ে তাকে বলে বিড়ি বাঁধার মজুরি থেকে পাঁচ-দশ টাকা খরচ করতে। চা-বিড়ি, দরকার হলে একটা বিস্কুটও খেতে পারে। কলির কথামতো সে বিড়ির মহাজন আফরোজ খাঁয়ের কারখানায় বিড়ি জমা দিয়ে নতুন বিড়ি তৈরির পাতা-মশলা আর মজুরি নিয়ে নেতাজী মোড়ে দুলাল ঘোষের চায়ের দোকানে এসে বসে। বিস্কুট খায়। চা খায়। বিড়ি টানে। আজকেও সে বিস্কুট-চা খেয়ে দুলাল ঘোষের চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে চুপচাপ বিড়ি টানছিল।
দুলাল ঘোষের চায়ের দোকানে এই সময় বেশ ভিড় হয়। দিনমজুর, রাজমিস্ত্রী, জোগাড়ী, কাঠ-ব্যবসায়ী, চাকরিজীবি থেকে বেকার যুবক- কে না আসে এখানে! চা খেতে খেতে কেউ নিজেদের মজুরী ভাগ করে। কেউ বিড়ি টানে। কেউ ধান্ধার কথা আলোচনা করে। কেউ গল্প করে। তাদের মধ্যে থেকে হঠাৎ কেউ ফাজুর নাম ধরে ডাক দেয়, কে জী ফাজুভাই নাকি! তা কেমুন আছো? কলিভানী কেমুন আছে? গাঁ-ঘরের খবর কী?
ফাজু ওরফে ফাইজুদ্দিন সেখ চমকে উঠল। কে রে বাপ! শুধু তার নাম-ই জানে না, তার বউয়ের নাম পর্যন্ত জানে!
ফাজু ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে। চিনতে পারে। পাশের পাড়ার আজাহার। ছোটবেলা থেকে ভিনরাজ্যে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে প্রচুর পয়সার মালিক হয়েছে। বর্তমানে সোনারপুরে বিশাল ইমারতির ব্যবসা তার। ফ্ল্যাটবাড়িতে বাস করে। চারচাকার গাড়ি চড়ে। সেই গাড়ি চড়ে মাঝেমধ্যেই দেশের বাড়ি বেড়াতে আসে। আজকেও তেমনই এসেছে বোধহয়।
ফাজু জিজ্ঞেস করল, কখুন এলি?
আজাহার বলল, এই তো এখ্নি। মা-র নাকি শরীল খারাপ! সকালে ছোটভাই ফোন করেছিল। শুনেই ছুটে আসছি। তা তুমি বাড়ি যাবা না? চলো- এক সুথে যাই।
ফাজু বলল, তুই যা। হামি একটু পরে যেছি।
আজাহার বলল, আগে ঘোষদার হাতের এক কাপ চা খেয়ে লিই। তারপর যেছি। আহা কতদিন ঘোষদার চা খাইনি! তা তুমিও খাবা তো এক কাপ চা? ঘোষদা দু-কাপ চা দাও।
ফাজু বলল, হামি এখ্নি খেনু। তুই খা।
আজাহার বলল, তাহলে একটা সিগরেট খাও।
ফাজু বলল, দে!
আজাহার তার ফুল-প্যান্টের পকেট থেকে কিংসাইজ সিগারেটের প্যাকেট বের করে তা থেকে একটা সিগারেট ফাজুকে দেয়। ফাজু সেটা হাতে নিয়ে যেমনকার তেমনি বসে থাকে। ভাবে, আর এক কাপ চা খেয়ে সেটা ধরিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা দেবে।
দুলাল ঘোষের চায়ের দোকানে নির্দিষ্ট একটি বেঞ্চে ফাজুর বসার জায়গা। সন্ধ্যাবেলা সাধারণত সেখানে কেউ বসে না। সবাই জানে ওটা বউপাগলা ফাজুর বসার জায়গা। কেউ ভুল করে বসলে দুলাল ঘোষ হাসতে হাসতে তা স্মরণ করিয়ে দেয়। দুলাল ঘোষ কেন যে হাসতে হাসতে একথা স্মরণ করায় অনেকেই তা বুঝতে পারে না। অবশ্য বোঝার চেষ্টাও করে না। দিনমজুর, রাজমিস্ত্রীরা চা খেতে খেতে নিজেদের মজুরী ভাগ করে। কাঠ-ব্যবসায়ীরা কাঠের হিসাব কষে। চাকরীজীবিরা চা খেতে খেতে খবরের কাগজ পড়ে। বেকার যুবকেরা নিজেদের মধ্যে গল্প করে। যেন সবাই খুব ব্যস্ত! অথচ ফাজুর কোনও ব্যস্ততা নেই। সে যেমনকার তেমনই বসে থাকে, চুপচাপ। একটা থেকে দু-টো চা খায়। ঘন ঘন বিড়ি টানে। তাকে দেখে পরিচিত মানুষেরা হাসে। আড়ালে ‘বউপাগলা’ বলে। এসব সে জানে। কিছু বলে না। বলবে কী, কলির সামনে যে সে সত্যি বোবা হয়ে যায়! কলির তাকে বিয়ে করা থেকে এতদিন পরেও কলির কোল ভরাতে না পারাটা মরদ হিসাবে তাকে লজ্জা দেয়। আর লজ্জা দেয় বলেই সে কলির কথার ওপর কথা বলতে পারে না। কলি যা হুকুম করে, সে চুপচাপ তামিল করে। এই জন্যই হয়ত লোকে তাকে দেখে হাসে। আড়ালে বউপাগলা মরদ বলে।
দোকানি মানুষের বেশি কৌতুহল ভাল নয়। দুলাল ঘোষ এই চায়ের দোকান করার পর সেটা বুঝতে শিখেছে। তাই সে আর কিছু বলে না। ভাল করে এক কাপ কড়া চা বানিয়ে দেয় ফাজুকে। ফাজু তৃপ্তির সঙ্গে খায়। তারপর আজাহারের দেওয়া সিগারেটটা ধরিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে শুরু করে।
বলে বলুক। কলিকে নিয়ে সে বেশ সুখেই আছে। কেউ না জানলেও সে নিজে জানে। এমন ভাবনা থেকে দুলাল ঘোষকে বলে, আর এক কাপ চা দে ভাই দুলাল। খেয়ে বাড়ি যাই।
দুলাল ঘোষ জিজ্ঞেস করে, আইজ এত জলদি কেনে জী ফাজুভাই? শরীল ভালো নাই নাকি!
ফাজু বলল, হ্যাঁ রে ভাই। মুনে হোছে শরীলটা ভালো নাই। আইজ সালাম বিশ্বাসের আলু তুলতে যেই ম্যাঘের পানিতে ভিজেছিলাম। তাতেই বোধহয় ঠাণ্ডা লেগ্যাছে। এখুন দেখছি জ্বর জ্বর ভাব। শরীল ম্যাজ ম্যাজ করছে।
দুলাল ঘোষ একটু অবাক হয়। ফাজুভাই তো এত কথা বলার মানুষ নয়! বিশেষ করে নিজের কথা! কিছু জিজ্ঞেস করলে ‘হ্যাঁ’-‘না’ বলেই দায় সারে। তাহলে আজ এত কথা বলছে কেন? কিন্তু দোকানি মানুষের বেশি কৌতুহল ভাল নয়। দুলাল ঘোষ এই চায়ের দোকান করার পর সেটা বুঝতে শিখেছে। তাই সে আর কিছু বলে না। ভাল করে এক কাপ কড়া চা বানিয়ে দেয় ফাজুকে। ফাজু তৃপ্তির সঙ্গে খায়। তারপর আজাহারের দেওয়া সিগারেটটা ধরিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে শুরু করে।
—
দুলাল ঘোষের চায়ের দোকান থেকে বেশ অনেকটা পথ পেরিয়ে নিজের গ্রামে ফিরতে হয় ফাজুকে। এক এক করে সব পেরিয়ে বাড়ির দিকে এগোচ্ছে ফাজু। আজাহারের দেওয়া সিগারেট কখন পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। বরগুঞ্জিতে কলির বিড়ি বাঁধার মজুরির টাকায় এক মুঠো বিড়ি। তবু তা থেকে একটা বিড়ি ধরাচ্ছে না। কতক্ষণে বাড়ি পৌঁছবে, ভাবছে। কিন্তু কিছুতেই বাড়ি আসছে না। তাহলে কি সে পথ ভুল করল?
না, পথ ভুল হওয়ার কথা নয়। ফাজু মনে করতে চেষ্টা করে, নেতাজী মোড় হয়ে সোজা হাঁটতে হাঁটতে ‘ভাই ভাই ইট ভাটা’র আগে ডান দিকের গণেশপুরের রাস্তাটা ধরেছিল। যেখানে সদ্য গড়ে উঠেছে একটা শনিমন্দির। যার সামনে একজন মাতাল মাতলামি করছিল। একটু এগিয়ে যেতেই দেখেছিল একটি বিড়ালকে রাস্তা পেরোতে। বিড়াল রাস্তা কাটলে কপালে কষ্ট থাকে। ফাজু যদিও এসব নিয়ে ভাবে না। বিড়াল রাস্তা কাটুক না কাটুক, কষ্ট তার জীবনের সঙ্গী- এটা সে জানে। আর জানে বলেই সে কোনও কিছুর কিংবা কাউকে তোয়াক্কা করে না। একমাত্র কলিকে ছাড়া।
পথ চলতে চলতে সামনের দিকে তাকায় ফাজু। সামনে মানে পশ্চিম দিকে। পশ্চিমাকাশের দিগন্তে তার চোখ পড়ে। দেখতে পায় সদ্য জন্মানো চাঁদের নিচে একটি উজ্জ্বল ফোঁটা।
পথ চলা ভুলে দাঁড়িয়ে পড়ে ফাজু। অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে পশ্চিমাকাশে ভেসে থাকা সেই অপূর্ব শোভা। খুব চেনা চেনা মনে হয়। মনে হয় কলির কানের দুল বুঝি ভেসে আছে ওই আকাশে। তার সঙ্গে বিয়ের আগে কলি এরকম দুল পরত কানে। ফাজুর মনে পড়ে সেদিনের কলিকে। পাড়ার মেয়ে। নজরালির বাগানে আম কুড়োতে যেত কলি এরকম দুল পরে। তাকে দেখে মনে হত চাঁদের কপালে সন্ধ্যাতারা। না, তখন সে তার বউ হয়নি। সামান্য মুনিষখাটা ঘরের সাধারণ একটি মেয়ে। মা নেই। বাপ উজির সেখ লোকের মুনিষ খেটে বেড়ায়। আর মেয়ে কলি চাঁদের কপালে সন্ধ্যাতারা হয়ে পাড়া চরে বেড়ায়। শুধু পাড়া কেন- মাঠঘাট, আগানবাগান, বনবাদাড় কোনও কিছুই বাদ রাখে না। পাড়াপড়শিরা উড়নচণ্ডী বললেও সেই কলিকে ফাজুর খুব ভাল লাগত। এতই ভাল লাগত যে কলিকে তার রঙিন প্রজাপতি বলে মনে হত। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারত না। বুকের ভিতর কষ্ট হত তার।
সেই কষ্ট নিয়ে একদিন ফাজু নজরালির বাগানে লকড়ি কুড়াচ্ছিল। কলি কোথায় ছিল কে জানে, পেছন থেকে এসে তার গলা জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ‘ হামিও তোকে খুব ভালোবাসিরে ফাজু। তুই হামার মরদ হবি? ’
ফাজু চমকে উঠেছিল। তার মনের কথা কলি জানল কী করে? যদিও সে কোনও কথা বলতে পারেনি। কেউ যেন তার মুখ সেলাই করে দিয়েছিল। তবে এই ঘটনা নিমেষেই চাউর হয়ে গেছিল গোটা গ্রামে। উজির সেখের কানেও পৌঁছেছিল। উজির সেখের তা সহ্য হয়নি, ফাজুর ওপর সালিশ ডেকে বসেছিল। এত বড় হিম্মত যে তার বিটিকে বেইজ্জ্বত করে সামান্য এক মিসকিনের বেটা!
ফাজু সত্যিকারেই মিসকিনের বেটা ছিল। মা হাজেরা বেওয়া ভিক্ষা না করলেও মিসকিনই ছিল। গেরস্থ বাড়িতে থালাবাসন মাজত। ঘরদ্বোর ঝাঁট দিত। যা পেত তা দিয়ে তাদের মা-ছায়ের পেট চলত। মাথার ওপর মরদ ছিল না। যেবার বাসুমাটির বাঁধ ভেঙে গ্রামে এমনকি ঘরেও বানের পানি ঢুকেছিল, ঘরের আমানত উদ্ধার করতে গিয়ে ঘরের দেওয়াল চাপা পড়ে মরেছিল মরদ। অগত্যা বাপ-মরা বেটার ওপর সালিশ বসবে শুনে তাকেই ছুটে যেতে হয়েছিল মোড়লবাড়ি। মোড়ল এস্রাইল সেখের হাত-পা ধরে বেটার জন্য মাফি-ভিক্ষা চেয়েছিল। মোড়ল এস্রাইল সেখ পাত্তা দেয়নি। তারপর উজির সেখের কাছেও গেছিল সে। উজির সেখ বলেছিল, ‘ এখুন হামার কিছু করার নাই। সব মোড়ল-সর্দারের হাতে। তাছাড়া তোর বেটা খালি হামার বেটির ইজ্জ্বতে হাত দেয়নি, হাত দিয়াছে গাঁয়ের সব মা-বহিনের ইজ্জ্বতে। মোড়ল-সর্দার ছেড়ে কথা বলবে নাকি? দ্যাখ কী হয়! ’
না, মোড়ল-সর্দার ছেড়ে কথা বলেনি। সালিশ বসেছিল মোড়ল এস্রাইল সেখের বাড়ির দূয়ারেই। ফাজুকে ধরে চ্যাংদোলা করে এনেছিল গ্রামের চ্যাংড়ারা। মোড়লের বাড়ির দূয়ারের সামনের জিয়ালাগাছে তাকে বাঁধা হয়েছিল হাত পিছুমোড়া করে। ওদিকে কলিকেও হাজির করানো হয়েছিল সেখানে। সে কী লজ্জা! কী লজ্জা! কী লজ্জা! যেন লজ্জার মাথায় হাত।
কলিকে যখন মোড়ল এস্রাইল সেখ জিজ্ঞেস করেছিল, ‘ ফাজু তোর সুথে কী কর্যাছে বোল! ’
কলি বলেছিল, ‘ কই- কিছুই তো করেনি। খালি হামাকে ভালোবেসেছিল। ’
‘ তুই কিছু বুলিস নি? বাধা দিস নি? চিল্লাস নি? ’
‘ বুলবো কী? বাধা দিব কী? চিল্লাবো কী? হামিও যে অকে ভালোবেসেছিলাম। ’
কলির কথায় সালিশসভা কেমন কেঁপে উঠেছিল। হয়ত রাগে কিংবা লজ্জায়! না হলে ওই সালিশসভায় ফাজুর শাস্তির বদলে কলির সঙ্গে তার নিকার বন্দোবস্ত হয়েছিল কী করে?
—
ফাজু দেখে পশ্চিমাকাশ থেকে কানের দুলটি হঠাৎ উধাও। উধাও হওয়ারই কথা। তার চারপাশে যে তখন জোড়া জোড়া ভয়ঙ্কর কিছু জ্বলছে। কী জ্বলছে ওগুলো? শেয়ালের চোখ নয় তো? আজকাল গাঁ-ঘরে শেয়ালের খুব বাড়বাড়ন্ত। হবেই না বা কেন? দেশে বহু বছর বর্ষা নেই, বান-বন্যা নেই। শেয়ালের বাড়বাড়ন্ত হবারই কথা। সেই কারণেই গাঁ-ঘরে কুকুর নেই। আগে ফাজুকে হাতে একটা লাঠি রাখতে হত কুকুরের ভয়ে। এখন রাখতে হয় শেয়ালের ভয়ে। ওই সব শেয়ালেরা কুকুরদের সাবাড় করে এখন মানুষের পেছনে লেগেছে। শুধু কি তাই, আজকাল মানুষকেও একলা পেয়ে ঘিরেও ধরছে। এই তো কিছুদিন আগে মুলির বাগানে গণেশপুরের একজনকে ঘিরে ধরে ক্ষতবিক্ষত করেছে। যদিও লোকটা এখনও বেঁচে আছে, তবে হাসপাতালে ভর্তি। তাহলে কি সে-ও এই মুহুর্তে শেয়ালের ঘেরা খেয়েছে?
পেটে ভুখ, শরীরে ধকল। ফাজুর মাথা কাজ করছে না। একটা বিড়ি ধরালে কেমন হয়? ভাবল সে। যদি মগজ খোলে! যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। প্রথমে ফাজু মাথা থেকে বিড়ির পাতা-মশলার পুটলিটা নিচে নামিয়ে রাখে। ডান হাতে ধরা লাঠিটা বাম বগলে চেপে ধরে নিজের বরগুঞ্জি থেকে একটা বিড়ি বের করতে গিয়ে দেখে চারপাশের ঘন অন্ধকারে জোড়া জোড়া জ্বলন্ত চোখ তাকে যেন ভয় দেখাচ্ছে। তার মনে একের পর এক প্রশ্ন তুলছেঃ
কলি তাকে সন্ধ্যাবেলা বাড়িতে থাকতে দেয় না কেন?
মহাজনের কারখানায় বিড়ি পৌঁছানোর অছিলায় বাজার পাঠিয়ে দিয়ে বাড়িতে সে একা একা কী করে? নতুন করে কারও সঙ্গে আবার ভালবাসাবাসিতে জড়িয়ে পড়েনি তো?
না, এর বেশি কিছু ভাবতে পারে না ফাজু, সে দেখতে পায় চারপাশের অন্ধকার থেকে জোড়া জোড়া জ্বলন্ত চোখের পাপদৃষ্টি নাকি অগ্নিবাণ তুমুল বেগে তার দিকে ধেয়ে আসছে। ফাজু কেমন অসহায় বোধ করে। প্রতিরোধের কথা ভুলে যায়। সেই সুযোগে একের পর এক পাপদৃষ্টি কিংবা অদৃশ্য অগ্নিবাণ ফাজু ওরফে ফাজু সেখের অন্তর পুড়িয়ে রাখ্ করতে থাকে।