সমুজ্জল দরোজা ও রুবাই । আশিক আকবর
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ, | ৩৩৮ বার পঠিত
রুবাই
জোটছে না ভাত জোটছে না রুটি
তবুও কবিতা নেয় না তো ছুটি
কি যে এই এক মহা মহাঘোর
জীবন কে করে রহস্যময় ভ্রুকুটি
বয়েত
আত্মরতির আনন্দ
আকাশ সমান
সঙ্গম যেন
সগাত সলিলে ভাসা
পদ্য
আজকে মাথায়
খুন চেপেছে
মনের বনে রঙ লেগেছে
নারী রে চাই
নারী রে চাই
নারী লৈআ শীতের ঘরে
আগুন জ্বালাই আগুন জ্বালাই
আগুন জলে
স্নানটি করে
গেড়ে বসা শীত রে তাড়াই, তাড়াই তাড়াই
ওরে নারী
আর কতো দিন
বুকটি চেপে উরু চেপে অন্ধকারে থাকবে বসে
নিজের সাথে
নিজকে দিয়ে
মনানন্দে মদন খেলে রসে বশে ঘষে ঘষে
বেরোও দেখি
খুলে মনের
খুলে দেহের খুলে প্রাণের সব দরজা
আপন মনের
ইচ্ছেটারে
ধরে নিয়ে লক্ষ্যমুখের আসল রওজা
শীতনিদ্রাধ্যানে : বিশ
ঘুমিয়ে যাবার আগে রেলপথে হাঁটতে হাঁটতে, দুই চাইরটা তরুণ পাথর কুড়াতে কুড়াতে, নদী জলে ছুঁড়তে ছুঁড়তে …
গাঙ চিলটিকে দেখা,
পুঁতে রাখা পাড়ে বড়শি কে দেখা,
দেখা, নৌকা করে যাইতে থাক না একলা কিশোর,
হাতের বৈঠার আগু পিছু।
ও পাল উড়ানো গয়না নৌকা হে, পাট ভরা ভুলে গেছো? গুণটানা কাল কি হৈছো বিস্মৃত? আহা, আহা, একটা বোটের দুই বা তিনটে পাল, মধু, মধু
সমুজ্জল দরোজা
অ্যাকুরিয়ামের মাছগুলি
জোড়া জোড়া কবুতরগুলি
হাঁসগুলি
মুরগীগুলি
এবং শীতে ফুলে উঠা বকরিটি
থাকুক বা না থাকুক, ঐ চিন্তা থেকে মুক্তি নিয়েছি
মুড়ি খাই
চানাচুর খাই
কফি করেও পান করলাম আজ
কেক খাইছি
কাঁচা ডিমও গিলে খাইছি
বাচ্চাদের দিতে দিতে খাইছি ক’টা বিস্কুট
এবং ফেইস বুকে বিজ্ঞাপন দিছি রান্না করতে পারা মানুষের
যদি সে আসে
কিংবা যদি শে আসে
আকাশে আকাশে ঘুড়ি উড়াবো লাল
কবিতার
রাজনীতির
অর্থ উপার্জনের
এবং এবং সর্বপরি আলস্যের
আরাধ্য আলস্য পেতে খুলে যাচ্ছে শুকনো খাদ্যের সমুজ্জল দরোজা
একটি আত্মহত্যা
একটি আত্মহত্যা
আকাশের অনেক দরোজা খুলে।
সেটি কবির হলে,
কোকিলেরা ঋতু ভুলে শুরু করে গান।
সৌরভের আত্মহত্যার দায়,
সর্বহারা মাওবাদীরাও কিঞ্চিৎ কাঁধে নিলে,
পেটি বূর্জোয়াপনা বলে পাশ না কাটালে,
আত্মহত্যার আকাশের তারাগুলি খুঁজে খুঁজে বের করলে,
সারবস্তুর সারসংকলের পরেও,
সারফেসের মাথা মোটাদের গালে চটকনা মেরে যদি বলা যেতো,
ওরে বাঞ্চোত মাওবাদী,
তগো কবি আত্মহত্যা করে ক্যান?
চার চারটে বৎসর কবির সাথে মার্চ করে,
তোরা ওকে আত্মহত্যা শিখালি?
বিপ্লবী আত্মদান আকাশের
শাদা মেঘে,
কালো মেঘে ঢাকতে ঢাকতে!
তাহলে আসন্ন আত্মহত্যাকারী কবি ফিরে তাকাতেন,
প্রিয় কলমের মুখ থেকে অজস্র কবিতার গুলি ছুঁড়ে দিতেন,
যাতে কার্ল মার্কস,
আবার জেনির জন্য কবিতা লিখতে পারেন।
এবং স্বগর্বে বলতে পারেন,
গৃহপরিচারিকার কোলের কন্যাটি আমার।
প্রলাপ
আমার ক্ষুধা,
আমার আলস্য,
আমার বাস্তবের কবিতা,
আপনাকে ক্ষুদ্ধ, বিক্ষুদ্ধ, ক্রোধান্বিত করতে পারে।
করতে পারে কান্না কাতর, বিমর্ষ, দুঃখিত ও ব্যথিত।
আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, ঘেন্না করুন, এবং এবং ভালোবাসা থেকে দূরে থাকুন।
ভালোবাসলে কবি মরে যায়।
ভালোবাসলে কবি আত্মহত্যা করে।
ভালোবাসলে কবিদের পৃথিবী অন্য কারো হয়ে যায়।
তারচে’ কবিকে জেলে পুরে দিন।
তারচে’ কবিকে ক্রসফায়ারে হত্যা করুন।
তারচে’ তাকে নিরুদ্দেশের শিরোপা দিয়ে নাই করে দিন।
কবি মরুক।
না খেয়ে, না ধেয়ে, না প্রেমে মরুক।
মরুক. অর্থ বিত্ত পদ পদবী পুরস্কারে মরুক।
ত্যাগে
মরুক
কবি,
ভোগেও মরুক।
কবিরা এ পৃথিবীর নয়, অন্য পৃথিবীর।
তারা ওখানেই যাক। তাদের ওখানেই যেতে দিন।
ক্ষুধা থাকুক,
অপ্রেম থাকুক,
থাকুক বাস্তবের চাছাছোলা কবিতা।