এইসব বেদনার কোনো নাম রাখিনি আমি । মিসবাহ উদ্দিন
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:১০ অপরাহ্ণ, | ১০৩৪ বার পঠিত
এইসব বেদনার কোনো নাম রাখিনি আমি,
তুমি জানো, তোমারই জানার কথা।
দেয়ালের ওপাশ বলে কিছু নেই, জেনেও তো
ভীষণ বাঁচে, বাঁচতে চায়, কোনো কোনো লতা।
চলো, নাম
চলো, আত্মার জলধারা অবিরাম
চলো, সহজ পতনের মতোন
জাগতিক ছন্দে,
হাতে ঠোঁটে ফোটে থাকা
কুসুমানন্দে,
অগোচরে ঝোপ হয়ে রই
চলো, নাম
চলো, আত্মার জলধারা অবিরাম
চলো জুঁই, চলো, এই একবেলা ছুঁই
একটা একলা ডাকতে থাকা বিষণ্ণ চড়ুই
চলো, নরোম মাটির মতোন
মেঘেদের রাতটুকু টিমটিমে বুঁদ হয়ে রই
চলো, মেঘ
চলো, আকাশের দেহে জমা অসহ্য আবেগ
চলো, এই পতনের কালে
নরোম কোমল কোনো মায়াঝরা গালে
রঙ হয়ে, আভা হয়ে রই
চলো, রঙ
চলো, নয়নের মণিদীপা অনুক্ষণ
আজ এই অবেলাটুকুন
আবছা স্মৃতিতে আসা গানের মতোন
মৃদু হয়ে, মিহি হয়ে রই
চলো, নাম
চলো, আত্মার জলধারা অবিরাম…
…………………… ## ……………………
রেশম গুটির মতোন
গুটিয়ে থাকতে পারতাম যদি ফের,
মৃদু ভাসা মৃদু ডোবা,
কোনো অনন্ত জগতে খেয়ালের!
এই আলোহাওয়ার জীবন,
এই অলেখ্য লেখার জীবন,
এই প্রচণ্ড প্রকাশ্য জীবন,
রেশমের নয়।
তার ভোজ হবো বলে,
আমাকে সে নিশিদিন কানেকানে বলে,
ছোট গুটি, ছোট গুটি,
চোখ মেলে দেখো,
আমি আশ্চর্য জীবন।
ডানা মেলো, ঝাপটাও, উড়ে আসো,
দেখো এই অসীম আকাশ,
দেখো তার সুগভীর নীল।
অথচ, আমি তো চিরকাল চেয়েছি
রেশমের ঘুমের ভেতর গুনগুনিয়ে
গাইতে থাকা কোন এক সন্ধ্যায়
ঘরেফেরা মিহিসুর, সুরের স্নিগ্ধতা।
এই আলোহাওয়ার জীবন,
এই অলেখ্য লেখার জীবন,
এই প্রচণ্ড প্রকাশ্য জীবন,
রেশমের নয়।
এই অসহ্য দহনের জীবন
রেশমের নয়।
রেশমের গুটির মতোন
গুটিয়ে থাকতে পারতাম যদি ফের…।
…………………… ## ……………………
প্রিয় মানুষরা দূরে সরে গিয়ে আরো প্রিয় হয় আমাদের– মানব-মস্তিষ্ক এভাবেই তৈরি। এই বিজ্ঞান জেনেও তো আমরা যেসব জাহাজ বন্দর ছেড়ে গেছে নিযুত-বর্ষ আগে তাদের ঘিরে বুনতে থাকি বিষণ্ণ সব উপকথা-রূপকথার মালা, চিরকাল মানুষ তার ন্যারেটিভেই জীবন বা মৃত্যুর রহস্য খুঁজে বলে।
দ্যাখো, আরো তো ম্যামাল আছে, আছে তাদের মা ও প্রিয়তমার মতোন নিরাপদ আশ্রয়, আছে প্রেম ও অপ্রেমের মৌসুম। অথচ, নিদ্রাহীনতা কেবল মনুষ্যসুলভ, এ কি এক আশ্চর্য রহস্য নয়?
তোমাদের বাড়ির পথে যেসব বৃক্ষ আজো আমাদের পিতামহ-প্রপিতামহদের বয়সী, তাদের পত্রপল্লবে আঁকা আছে পথ-ভোলাদের ইতিহাস, ইতিহাসের সামষ্টিক স্মৃতি।
হায়, পাতাদের ভাষা তবু লিপিতে থাকে না।