শাহবাগনামা ও অন্যান্য কবিতা । সালমান সাদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মার্চ ২০১৮, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ, | ১২৩৩ বার পঠিত
বন্য
আপনার শ্যামকালো বর্ণ চামড়ার উঠোনে পোড়াটে রঙের খাবলা খাবলা
আলপনা আল্লাহই এঁকে দিলেন আপনাকে ও মহিলা!
আপনার মুখের ওই ভয়ংকর সৌন্দর্যকে অস্বীকার করি কীভাবে মহিলা।
আপনাকে কুৎসিত বলা যায় তবে
তবে আপনি তো নন ওরকমটি!
এ কেমন বন্য আবেদন আপনার চেহারায় মহিলা।
এ কেমন কুহকজালে পেঁচিয়ে রেখেছেন আপনার চুল ? ও মহিলা!
আমার ভয় করে। কাছটিতে ভিড়তে ইচ্ছে করে।
বলিবার সাধ
নিরিবিলি ছাদ।একথাল চাঁদ।জোসনার হাট।পিরিতের ঘাট। ওই এক পাশে। দু’জনায় হাসে।বালিকার চুল।চোখাচোখি ভুল।টবের কাছে।একা এক গাছে। চুপিচুপি ডাকে। পাতার ফাঁকে। ফুলে কথা কয়। মরা হাওয়া বয়। এশার আজান।রাত্রির গান। সুরের কী টান।সুমধুর তান। উড়ায় মানুষ।ওই যে ফানুশ। মিটিমিটি জ্বলে।কোথা যে চলে।ধীরেধীরে ভেসে। তারাদের দেশে।
কত কিছু রাখি।চোখেরো পাতায়। কত ছবি আঁকি।মনেরো খাতায়।আপন জীবন।কত না স্বপন।পাঠ করি কায়া। নিজেরো ছায়া।বলিবার সাধ।সালমান সাদ।
ইচ্ছেডানা
সরলরেখা চুইয়ে জীবন নেমে যাচ্ছে সমান্তরালে
এমন একটা উপন্যাস হয়ে যেতে আমার ইচ্ছে করে।
রুপকথার অরণ্যে আমার দুপুরবিলাস করার আকুতি জাগে।
আমায় নিয়ে কি যাবে দুপুরের শহর?
কবিতায় সাজানো শব্দমালা হয়ে যেতে আমার ইচ্ছে করে।
আমার গতরে আছলে পড়ুক এক সমুদ্র শিল্প
তার মুগ্ধ বিমুগ্ধ ঢেউ।
পিয়াসে পোড়া প্রাণে কবিতার ব্যাকুল চুমো
আমি তার স্বাদ হয়ে যেতে চাই।
শাহবাগনামা
রাতের বিশে টেলিগ্রাম এলো
নকল কবিতা লেখার দায় আপনাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো কবি!
রাত্রির চল্লিশায় আপনি আসুন শাহবাগ থানা।
ফাসির উত্তরীয় গলায় বেধে আধঘণ্টা ঝুলে অতঃপর বাসায় চলে যান।
আমি হৃদয়ের কাঁচা পিণ্ডটা চাবাতে চাবাতে পাবলিক লাইব্রেরীতে
হাঁটতে থাকি বইয়ের পাপোষের ওপর।
গণশৌচাগার ভেবে ঢুকে পরে দেখি এ যে ঢাকা ভার্সিটি। শাস্তি মোতাবেক
আমি এক যৌবনবতীকে খুলে দেই গায়ের কাপড়।
যাদুঘর দর্শনার্থীর একটা চোখ খুলে নিয়ে মুখের ভেতর পুরে দেই
লিচির মতো। ইতিহাসের শাঁস ক্যালসিয়ামের মতো লাশা লাশা।
শিশুপার্ক থেকে কচি রক্তভাজা খেয়ে কাকরাইলের হাউজে গিয়ে মুখ ধুই।
দুই ঘোড়ার সোনালী ভাস্কর্যটার পিঠে চড়ে বসে চাবুক শানাই ফলে
মূর্তির পাথরেরা আর্তনাদ করে কাঁদে ব্যথায়।
রমনাপার্কে ব্যভিচারের দন্ড স্বরুপ একটা বদমাশ জননাঙ্গ ও
ক্ষতবিক্ষত যোনিপথ চাক চাক করে কেটে পুড়িয়ে দেই। সেই পোড়াগন্ধ
বাতাসে ছড়িয়ে গেলে শহরের শরীর উষ্ণ হয় উষ্ণতর হয়।
ঢাকার শক্তনরোম কলিজার গোশতে শাবলের
ঘাই দিতে থাকি ঘাই দিতে থাকি আর ঘাই দিতে থাকি।
মহাকাব্য
আমার বুকের ভেতর হঠাৎ জেগে ওঠে একটা নদী।
আমি ততক্ষণাৎ নদীটাকে কলমের নিবে তুলে ফেলতে থাকি।
তারপর একদিন
শুষে নেয়া হয়ে গেলো সব প্রেমিকার বুকের ভেতর সকল নদী
আমি মহাকাব্যর প্রথম পাতায় বিসমিল্লাহ করবো।