মৃত্যু ও ছায়া বিষয়ক কবিতা । মহসীন চৌধুরী জয়
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:৪০ অপরাহ্ণ, | ৭৬৪৭ বার পঠিত
জীবন
লিখেছে ক্ষুধার্ত কলম জীবনকাহিনি। মর্মস্থলের বর্ণনায় বই বৈচিত্র্যময়। ইতিহাসের বয়ানে রক্তের নীরব আর্তনাদ। পৃথিবী শাদাকালো রঙের খেলায় সবচেয়ে নিপুণ। আর আমি? লাশের বাড়িতে বসে ভাবি জীবনের মানে?
ছায়া
প্রতিটি পদক্ষেপে দেখে নেই ছায়ার অভিনয়
নদীতে স্নান, আকাশ হতে নেমে—পাহাড়ে গিয়ে মিশে ছায়ার অভিমান
শীতের ছায়াতেও কি কেঁপে ওঠে ফুলের মুকুল?
নারী—তোমার ছায়াতেও আমি বিমুগ্ধপ্রায়
ছায়াসঙ্গিনী ভেবে রাতে বিছানায় উবু হয়ে শুই…
নারী
প্রতিদিন কবিতায় এসে হাসো স্তনের মতো, অবাক দুটি নয়নে। কবিতা ছেড়ে তোমাতেই মিশি—শুয়ে থাকো বুকের লোমে, চোখের ঘুমে। বলছি সানুনয়ে…
কবিতাই তো আয়না তোমার—দেখি অঙ্গের সৌন্দর্য, উষ্ণ নাভিতল। পায়ে পায়ে হাঁটে তোমার শৈশব, বয়ঃসন্ধি—যৌবনে বিশ্রামে হাসে নারীলাবণ্য।
মিথুন প্রশ্রয়ে উৎসাহী পঙ্ক্তিমালা—তোমার দেহে সুর। তুমি আছো, কবিতা আছে—জঘনেই ফুটে কথামুকুল…
মায়ের মতো প্রেমিকা
প্রেমিকার কাছে আসলেই ওর গোলাপী ঠোঁটে চুম্বনের ঘ্রাণ পাই—তীব্র
তখন শরীর খুঁজে ফিরে সঙ্গমের আবহ
একটি পরিচিত ভালোবাসার গান আমার ভেতরে অনুশীলন শেষে বের হতে চায়—সুর আর কথার আবেদন আমাকে উৎফুল্ল করে উত্তেজনার আদরে
ক্লান্ত-বিভ্রান্ত, পরিচিত-অপরিচিত, আড়ষ্ট, সংশয়ী আমার আমিকে লক্ষ করতে করতে বুঝতে পারি—প্রেমিকার শরীর-ঢাকা পরিপাটি শাড়িও আমাকে উস্কে দেয়
শাড়ি না থাকলে কে উস্কে দিত তাও ভাবি—ঘাসের পাশে বসে চোখ দিয়ে মাটি আদর করতে করতে
আমার পুরুষ হওয়ার পেছনে নারীর অবদানই কি সবচেয়ে বেশি?
মা আর প্রেমিকা দুজনের কাছেই আমি এক পরিচিত নাম!
প্রেমিকা, তোমাকে মায়ের মতোই ভালোবাসব। মা-ই শিখিয়েছে তোমার শরীরে হাঁটার মন্ত্র!
মৃত্যু
দিন-সমাপ্তিতে শুরু হয় মৃত্যুর আয়োজন।
বাতাসে মিশে থাকে পাখির বিরহ সংগীত। পাথরের গায়ে পড়ে কালো ছায়া। নিস্তব্ধ ভূমিতে শিশির শুয়ে পড়ে শরীর ছেড়ে। শব্দরা ভ্রমণ করতে করতে নৈঃশব্দে রূপ নেয়।
দৃশ্যমান চোখে আলো কমে এলে মৃত্যু কাছে চলে আসে।
নক্ষত্র কিংবা পাথরের মতো নড়ে উঠে জীবনের ভিত। কবর থেকে ভেসে আসে মৃতদের হাহাকার মিছিল। সময়ের দূরত্ব কমে আসে মৃত্যুর কাছে। গন্তব্য নির্দিষ্ট, অস্থির জীবন স্থির হয় মৃত্যু-গানে।