বহ্নি ও বিষাদ বিষ । আসমা অধরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ অক্টোবর ২০১৬, ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ, | ২০৮৬ বার পঠিত
বস্তুত দৃশ্যের সাথে ক্রমাগত কল্পনা মিলিয়ে দিলেই লাগোয়া ব্যালকনি কেমন স্থির সমুদ্রের ততোধিক স্থাণুসম জাহাজ বলে মনে হয়। মাস্তুলের ঠিক ওপরেই চাঁদ বিমূর্ত, অথচ কি ভীষণ মিথ্যে কলঙ্ক নিয়ে স্থির। সেইখানেই লিপিবদ্ধ থাক ঔদ্ধত্যের একরোখা আঙুল, যা দেখে কি প্রচণ্ড কুঁকড়ে যাওয়ার স্মৃতি নিয়ে দৌড়ে বেড়াই চেনা রাস্তায়, পরিচিত ভঙ্গিমায়। এখানে কে কার প্রাথমিক স্মৃতি বলে বিবেচিত, মাস্তুলের জন্য চাঁদ – নাকি চাঁদের জন্য মাস্তুল?
সে যার যা কিছুই হোক, স্বর্গের রাস্তায় মাটির পরিচিত সোঁদা ঘ্রাণমাখা না হলে ও পথে ডেকোনা। বৃষ্টির পরের নবান্ন সুবাসের মতো ভেজা মাটি মাখিয়ে রাখা হৃদয়, প্রলম্বিত কংক্রিট জানে নাই কোনদিন। গাছের গা থেকে কুঁচকে উঠে আসা বাকল ডাকে আয় আয়, এই তো বাড়ী- এই তো বিশ্রাম। কুঁচো বাতাস ভাসিয়ে আনে ঘণ জ্বালের দুধএলাচ সুবাস, আধখানা চন্দ্রের ম্লান জোছনা মিলিয়ে আসে মায়ের ফিকে হয়ে আসা কোলের মতো, সারেঙ যেমন দীর্ঘযাত্রার ক্লান্তিরে ভুলে ভাবে মলিন শাড়ির আঁচল। ঝাঁ ঝাঁ উৎসবে রাজ্যের অঙার নিয়ে পাথর খুঁড়ে যাওয়া আর আঙুলের মুদ্রায় ভরে রাখা মৃৎপাত্র।
এমন কাঙ্ক্ষিত দিনে শতায়ু হয় বিষম সেই মুদ্রাক্ষর। প্রথম ঈশ্বর কিঞ্চিত বাঁকা চোখে তাকিয়ে থাকে দ্বিতীয় ঈশ্বরের দিকে যার ব্যস্ত হাতে খোদাই হচ্ছে তৃতীয় ঈশ্বরের ডান চক্ষু আর ছোঁ মারার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অপেক্ষায় শ্যোণ ঈগলথাবা। আজ বৃদ্ধাশ্রমের পাশে শ্মশান ঘাটে খুনখুন হেসে লুটোপুটি লাল মাছের দল।
আহা ক্ল্যাপস ক্ল্যাপস!
এই মেঝেতে লুটোপুটি খায় রক্তমাখা কবি।
আহা ক্ল্যাপস ক্ল্যাপস!
বিসমিল্লাহ্র সানাই ভুলে ট্রাম্পেটে মগ্ন সবই।
আহা ক্ল্যাপস ক্ল্যাপস!
ঈশ্বরের চোখ খুবলে খাবে ঈগল,শিল্পী আঁকবে ছবি।
আহা ক্ল্যাপস, আহা ক্ল্যাপস!
এই নগরে থিতু আঁধার, ডুবছে ক্লান্ত রবি।
ভুলে যাও হাততালি, ম্যামথ জানে না নেপথ্যে কে হাসে, ছড়ায় ধুতুরার বিষ। পাতার ফাঁক গলে যে অনাচারী চোখ সর্বভুকের মতো দৃশ্য গিলে খায়, সে জানেনা বিপন্ন ঈশ্বরের চোখের বিনিময় উপঢৌকনের খোঁজে এ তল্লাটের বনভূমি উজাড় করছে নরকের জল্লাদ। বাঁশী গো, দুলে দুলে সুর করে বেজে ওঠো, কেশর নাচিয়ে হাসো ধুতুরার ফুল…