পাণ্ডুলিপি থেকে একগুচ্ছ কবিতা । রাতুল রাহা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ২:৩৪ অপরাহ্ণ, | ২০৬৪ বার পঠিত
চুরি
এই প্রার্থিত ফুলের সময়ে, বন্ধু শুয়ে বসে থেকোনা তুমি আর ওঠো, দ্যাখো
সূর্যের তাপে কী করে গলে যাচ্ছে মুখ !
কারা যেন এই পৃথিবীর জাদুঘর থেকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে মাঠ-ঘাট,
কফিন ও পরাগরেণু, তুমি কি শুনেছো? যে নারী দিয়েছে মালা পৌরুষের
গলে—এইসব জ্যৈষ্ঠ বিকেলে, তাদের করোটিভরা হয় না নিঝুম কোনো দ্বীপ,
নিঝুম শহর; নিরালা ও রহস্যময় গ্রামোফোন সুরের মাধুরী শোনো চারিদিকে
যাচ্ছে বিলিয়ে
ক্লাউডিয়াস রিগাদ
আমি তোমাকে হিবিলো লাসকিন
তুমি আমাকে নিরেদা কিয়েভানো
ড্রাই লং থেকে আমাদের মধ্যবর্তী পাহাড় চুড়োয়
নতুন এক সূর্য
সাবলীল ট্যালকম খাঁদ । আমি একদিন অইখানে
নিয়েরাদের শহরে এলোভেরার ঘ্রাণ
তুমি একদিন অইখানে চুপ করে গোরস্থান
বানিয়ে বসেছিলে
রিগাদ রেডিও থেরাপি রুম । নিরাপদ ঘুম
কতোদিন ধরে
অপরাহ্ণে গিয়েছে আলোক
কতো অভিমান শাপলার ভিতর জুড়ে
কতো অভিমান এই বিশ্ব চরাচরে জমে আছে?
কখন ঘুমিয়ে গেছে
নিরাপদ ঘুম
রিগাদ রেডিও থেরাপি রুম
হিবিলো লাসকিন বলে উঠে এসেছি ভাঙা পা নিয়ে
রহস্যময় পৃথিবীতে আমরা
চলমান অনাদি
আমরা
আমি
তুমি
স্যাডিস্ট পয়ার
বেজিস্ট বাজাচ্ছে একমনে—সুরাসক্ত অন্ধকার বনে, আর যারা ড্রামে আছে
তারা যেন আজব বাওবাব । আহা অট্টহাসি ! তুমি আশেকিন ভাইয়ের কাঠি—
হন্তারক, মমিচাষ করো
লাল এক নতুন দেশ—নতুন করে ফুলের যন্ত্রণা মেলে ধরো—জর্জ লিংকন তোমার
শহর—মৃত্যুফিউম নিয়ে ঘুরাচ্ছে কপিকল, ছুঁড়ে মারছে স্টেজভর্তি নাইটরাইডারদের
শ্যাডো । রক গায়কের—কপালে ক্রুশের চিহ্ন,অদৃশ্য; এই ক্রুশে সমাহিত সর্বময়
সুরের দেবতা ।
সে-ও কি কংকালদ্বীপে একা নাগরিক?ঝুলে যাওয়া চামড়া থেকে সন্ধ্যার মাইনফিল্ড
এবং জাহাজ? ইচ্ছামৃত্যু তবে তার-ও কি আকাঙ্ক্ষিত?এমন অনেক প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা
ইনহারমোনিক—ওঠে আসে ড্রামারের মনে এসব প্রশ্ন সমাধিস্থ করে তারা যেন আজীবন
রকফেস্টে লিখে যেতে পারে, গোপন অট্টহাসি, স্যাডিস্ট পয়ার—আমরা সে প্রার্থনা করি
মায়াবাজার
মায়াবাজার—ঢুকেই দেখি পিংপং বল নিয়ে ক্রীড়ারত শিশুদের মুখ
রক গায়কের কফিনের পাশে অযত্নে পড়ে আছে মিউজিক সিডি ।
প্রতিটি বর্ণনাই সহজাত সাবলীল নয়, এ’কথা নিশ্চিত আজ জানি
অথচ ম্যাজিকম্যান যদি ট্রিকে ভুল করে বসে, তবে মুহূর্তে উধাও
হবে পুরোনো হাতঘড়ি, ড্রামসেট এবং শহর
একটা নিষ্কলুষ কাঠি একটানা ড্রাম বাজাচ্ছে, অথচ শো শেষ আর
হলরুমে দর্শক নেই
রবিবার কেটেছে মেটাফোরে
রবিবার, কেটেছে মেটাফোরে
বলতে পারিনি, দাঁড়াও; বলতে পারিনি, এসো
তবে কি ভোজবাজি? চোখের পলকে তো উধাও
হয়ে গেলো, দাঁড়ালো না । পড়ে রইলো ছাই
হাওয়া লেগে উড়ে গেলো কিছু, এইসব গাওয়া
গান মৃদু শব্দে তখনও কড়া নাড়ে
রবিবার কেটেছে মেটাফোরে
বলতে পারিনি, দাঁড়াও; বলতে পারিনি, এসো
শহর থেকে দূরে
শহর থেকে দূরে কিছু কিছু ব্রিকফিল্ড আছে
কিছু কারখানা এবং আরও কিছু কারখানা
সেইসব ব্রিকফিল্ড এবং কারখানা থেকে
প্রতিদিন বিষাক্ত ধোঁয়া ও বর্জ্য পদার্থ নির্গত হয়
যা নিঃসন্দেহে প্রকৃতি ও সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর
তবে শহর থেকে দূরে, সবচেয়ে দূরে থাকে কবি