স্টিভেন স্মিথ : দ্য নিউ ক্যাপ্টেন গ্রাম্পি
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ডিসেম্বর ২০১৫, ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ, | ২৮৪৮ বার পঠিত
ইকরা ইশতিয়াত্ : ৯৬’র বিশ্বকাপে শ্রীলংকার স্থূল গড়নের রাবন অর্জুনা রানাতুঙ্গা ক্রিকেটের একটা পরিবর্তন ঘটান। একদিনের ক্রিকেটে। তখন দেখতাম, এক পাল আনঅর্থোডক্স রাবন কেমন কইরা প্রতিপক্ষরে খেলার শুরুতেই দুমড়াইয়া মোচরাইয়া দিতেছে। ক্রিকেট মাইন্ড গেইম। রাবনদের আক্রমনে প্রতিপক্ষের মাইন্ড বলতে কিছু থাকত না!
সীমিত ওভারের মত টেস্ট ক্রিকেটেও একধরনের পরিবর্তন আসে। আরো পাচঁ বছর পর। অস্ট্রেলিয়ান গ্রেইট স্টিভেন রোজার্স ওয়াহর হাত ধইরা। বডার্র-টেলরের যোগ্যতম উত্তরসূরী। বরং বলা যাক, এই ওয়াহ তাদের থেইকাও ভাল। নেতা। দার্শনিক। ইন্সপায়ারার। এই ওয়াহর নেতৃত্বেই বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা কিছু ক্রিকেটার খেইলা গেছেন একই সময়ে। রিকি পন্টিং এডাম গিলক্রিস্ট শ্যান ওয়ার্ন গ্লেন ম্যাক গ্রা ম্যাথু হেইডেন। মার্টিন বেভান লি ম্যাকগিল স্লাটার ল্যাঙ্গার অনেকেই। এই ওয়াহ তার শিষ্যদের শিখান, টেস্টেও এমন কী, প্রতি ওভারে গড়ে সাড়ে তিন থেইকা চার রান করতে হইবো।
আজকে এই লেখায় যারে নিয়া বলতেছি, সে আরো দুই প্রজন্ম পরের। রিকি পন্টিং অবসর নেয়ার পরে আমার নিজের ভিতরেই একটা শূন্যতা তৈরি হইছিল। মনে হইতেছিল, শেষ নক্ষত্রটাও আলো নিভাইয়া দিলো। এরপরে কে?
মাইকেল ক্লার্করে কোনদিনই আমার ভাল ক্যাপ্টেন মনে হয় নাই। ওয়াহ-পন্টিংয়ের ধারাবাহিক ত প্রশ্নই ওঠে না। ক্লার্ক জাস্ট ইউজড টু বি আ গুড ব্যাটসম্যান। টস অল। ক্লার্ক এর ক্যাপ্টেন হওয়া মূলত অস্ট্রেলিয়ান একটা স্বর্ণযুগের অবসান বুঝায়। এবং অবশ্যই স্টিভেন স্মিথ দিয়া এই যুগের ফের সূচনা।
স্মিথের অভিষেক হয় ২০১০সালে। লর্ডসে। এশেজ সিরিজে। জাত চিনান স্মিথ। এরপরে একটা বিরতি। ২০১৩সালের ওভালে ফের ইংল্যান্ড। ছক্কা মাইরা উদযাপন করেন মেইডেন সেঞ্চুরি। আর পিছে ফিইরা তাকাইতে হয় নাই। দলে আসছিলেন একজন ইয়াং স্পিন অল রাউন্ডার হিসাবে। যে দরকারে ভালো ব্যাট করতে পারে। আর এই পাঁচ বছরে শুধু দলেরই না, বলা যাক, সারা বিশ্বেরই সেরা ব্যাটসম্যান।
স্টিভেন স্মিথ মোটেও কপিবুক ক্রিকেটার না। টোটালি আনঅর্থোডক্স। এইটা আপনে তার ফুটওয়ার্ক দেখলেই বুঝবেন। কত দ্রুত পায়ের অবস্হান বদলায় আর আনস্পেকটেড শট। তার রিস্ট খুব স্ট্রং। এশিয়ার বাইরে আপনে যেইটা সাধারনত দেখবেন না। সবচেয়ে দক্ষ স্ট্রেইট ফরওয়ার্ডে। মূলত ফ্রন্ট ফুটের প্লেয়ারে। ব্যাকফুটেও সমান কার্যকর। আর নেতা হিসাবে?
আমার মনে হয়, স্মিথ নতুন লয়েড। নতুন ইমরান খান। নতুন বর্ডার। দ্য নিউ ক্যাপ্টেন গ্রাম্পি। বিশ্বাস না করলে, এমন কী স্মিথের ক্যাপ্টেন না থাকা অবস্হায় টেম্পোরারিলি নেতৃত্ব দেয়া টেস্ট ম্যাচগুলাই দেখেন!