বাংলা হাইকু / ফাহিমা আল ফারাবী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১:২২ পূর্বাহ্ণ, | ৩৫৬৯ বার পঠিত
[হাইকু- জাপানি কবিতার একটি ফর্ম। সাধারণত তিন-লাইনের, ৫-৭-৫ মাত্রাবিশিষ্ট। তবে বর্তমানে ফ্রি-স্টাইলেও লেখা হয়।]
১
ত্রস্ত শব্দ-স্ফটিক
বিপন্ন কার্নিভ্যালে শব্দের কাদা-ছোড়াছুড়ি
উৎসুক, একবার ডুব দেব কি?
২
অদূরে এঞ্জিনের গর্জন
ফ্যানের শিথীল বর্তন
লোহার পাতে নতুন ভাতের আগমন।
৩
শাখার সবুজ লহরী
তীক্ষ্ণ নীল চিরে ঝটিকা উদয়
কালো ডানা ধলা চিল!
৪
জলাশয়ের আর্দ্র শরীর,
ডিঙোয় হালকা পায়ে ঘেঁটুকাদা
লেজ তিরতির ছোট নথজির।
৫
বাতাসে অজানা কম্পন
সুদূরে ব্যস্ত হুইসেল-
রাত্রির রাজত্বে ছন্দপতন।
৬
কলমের গুঁতো-
পাতাগুলো সশব্দে হাই তোলে
চেষ্টার অপচেষ্টা।
৭
ঘাসের বেদনায় বিগ্রহ
কিভাবে সবুজ হয়ে ওঠে-
শ্যাওলাই জানে তা।
৮
ক্রমশ ময়দান ফাঁক
শুনিয়া হরবোলাদের ডাক-
কানায় আঁধারে তালি মারে।
৯
এ বিম্বিসার আগুনের ঢলে
একমাত্র শান্তি, জলাশয়ে থির
আমার ছোট নথজির।
১২
তবুও জীবনের ভিড়-
ক্ষণিকের বিলাসী শিষ,
মৃত্যুর অনিঃশেষ দিনে।
১৩
লেজ তিরতির নথজিরিয়া
দূরন্ত বেগে পার হয়
হঠাত কাদাটে প্যাকাটে জলাশয়।
১৪
ভীতি-বিবর্জিত নষ্ট সময়
সময়ের দাবি বলে স্বান্তনা,
নথজিরিয়ার পায়ের পাতার জল।
১৫
বয়ে যাওয়া নষ্ট আঁধার
জোনাকের ফিকে আলোতে
সহসা কোনঠাসা দেখায়।
১৬
পোড়া ছাই অঙ্গার-
টুকরো কথা-বাক্যে
জল ঢেলে দেয় নিঃশব্দে।
১৭
ঘুমের তেষ্টা জল হয়ে পড়ে-
ভাঙাতে পারে না তবু নিরীহ পণ,
আজ আবার সকল শান্তির নির্বাসন।