ম্যাজিক ফার্মগেট ও অন্যান্য কবিতা / ফয়সাল আদনান
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ৫:১০ অপরাহ্ণ, | ২৩৮৭ বার পঠিত
শোক প্রস্তাব
তারপর তারা বাতাসে ছড়িয়ে দিল যৌন বর্ণনা, শিশ্নের দৈর্ঘ্য ও যোনির গভীরতা।পাঠ হলো
সমবেত শোক প্রস্তাব। সেই সম্মোহিত প্রেমিকাদের ভাবি, যারা স্কুল পালানো শিশুদের চুমু
খেত অননুযোগে। রাত্রিকালে এমন সব স্বপ্নে বাতাস ভারী হয়ে উঠে। পুষ্পগন্ধ আড়াল হয়ে
যায়। সকাতর সব মাস্টারবেশন খুলে খুলে পড়ে প্রেমিকাদের শরীরে – আমার মাঝেই যারা
সমাহিত ও সম্মোহিত, যাদের উদ্দেশ্যে এই স্তোত্র পাঠ, এই সমবেত শোক প্রস্তাব।
মীনযুদ্ধ
শুনেছি পৃথিবীর তর্কযুদ্ধ সব জিতেছে মিনের দল, আর তাই ছোট ছোট চোখে রুপালী মাছের ঝাঁক –
জলের তলে – কি নীরবে হাসে। কথা ও কবিতা তারা বলে না বা লেখে না, প্রাচীন প্রাচীন প্রাণ লিখেছে
এমন অনেক গান, জলেও স্রোতের দাগ লেগে থাকে। আর তাই কোলাহল থেকে দূরে, আমিও মিউট
মাছের সাথে – শুয়ে থাকি, পৃথিবী উলটে গেছে, আমি কানকো ও লেজে – বিজয়ীর বেশে, মিউট হেসে,
জল ও স্রোতের দাগ গায়ে মেখে, হেটে গেছি পেছনের দিকে।
ফার্মগেটের (অ)কবিতারা
ম্যাজিক ফার্মগেট-২
নিজেকে নিয়ে আমি বহুবার হারিয়ে গেছিগো রিদিমনি
তুমি মহিলা হোস্টেল, তুমি কিশোরী যুবতী ছাত্রী
আজকাল অসংকোচ উঁকিঝুঁকি
তোমার ব্যলকনিতে পায়রা, তাদের জোড়ায় জোড়ায় গুনতি
তাদের শরীর এখন বাড়তি, রেণু এখন ঘাটের ধারে পুতুল পুতুল
তুমি ব্যালকনিতে দাঁড়ায় থাকা পরী, তোমার গায়ে বৃষ্টির ফোঁটা
ম্যাজিক ফার্মগেট-১
সিনেমা দাঁড়িয়ে আছে ফার্মগেট মুখী,
প্যাচপ্যাচে কাঁদা মেখে
কিছুটা বিরক্ত কি
দাঁড়িয়ে থাকে
লাগে রমনীসঙ্কুল
মাগে শ্বাপদের খোঁজ
আছে যৌন অসুখ
যেন ম্যাজিক ম্যাজিক
যেন পতিতার সুখ।
কিছু সমাপ্ত বা অসমাপ্ত কবিতা
১.
এমনকি যৌন শব্দটাও যথেষ্ট যৌন নয়,
আর তাই আমাদের, হাইফেন টেনে সেক্স লিখে দিতে হয়
২.
রোদ এসে তোর ঘাড়ে ভিজে গেছে ঘামে
আয়নার ভিড়ে হারিয়েছে পারদ, বাষ্পের রং
চোখ জুড়ে তাই কাজলের বল গলে গেছে
ফার্মগেট ছেড়ে চলে গেছে ছয় নম্বর
৩.
পৃথিবীতে আলো নেই পাখি নেই, আছে কিছু মিথ।
একদিন সব গল্প হয়ে যায়, তোমার চুলের ক্লিপ-
তাতে লেগে থাকা চুল-চুলে থাকা গোপন ঘ্রান,
এইসবও মিথ মনে হয়।
মনে হয় বনের ময়ুর চেনে চিড়িয়াখানা।
৪.
সময়ের দৈর্ঘ্য কত – তোমার উদর থেকে শুরু করে আর না
ফেরার মতো। আমাদের সীমানা দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে আর দেখি
তোমার ঘাম-কাপড়-আদর নিয়ে ছবির ভাঁজ – অসীমে এঁকে দেয়া
যায়। ভাবি তোমার চুড়িগুলো এখনো কি বেজায় শব্দ করে, সকাল
হলে? মেঘকে পাঠাই তবে পুকুর পাড়ের দোতলা বাড়ির সামনে,
সেখানে চল্লিশোর্ধ বিষন্নতা ভীষন রোদে পোড়ে – তাদের ছায়া
হোক। আমার এখানে কেউ নেই তবু এখানেই আছি সময়ের
দৈর্ঘ্যের শেষে, তার কতবা একক পড়ে তোমার ঠিকানা হবে?
৫.
কানে কানে ফুটেছে যে ফুল,
বিধে আছে কাটা,
রক্তে গন্ধে তার পানে,
ছুটে এসে খসে যাবে তারা
পাখিদের কান্না তখন
বিজন বনে তোমাকে মনে করে
তেতুলের ছায়া হয়ে
শূয়ে রবে আর বেনোজলে ভেসে যাবে
মনস্তাপ
সাথী হবে পাহারের চূড়ো
তুমি তার কততম পুত্র
তুমি তার কতটুকু জীবন
আঘাতের ভয়ে পেরিয়েছ শীতল নদী
জমে গেছে ব্লিজার্ড
শীতরাতে তোমাকে ভেবেই ঘেমে যাবে
খসে যাবে তারা
বারোয়ারী প্রভু বারোবার জেনে যাবে
তোমাকে না ভেবে তার চলে যাবে
আকাশের থেকে খসে যাবে তারা
তোমার কানের ফুলে
কাটা হয়ে বিধে
রক্তে গন্ধে তাঁরে
ডেকে নিবে…