শামশাম তাজিল । অণুকাব্য
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ডিসেম্বর ২০১৩, ৩:২৮ পূর্বাহ্ণ, | ২৮৩৮ বার পঠিত
অণুকাব্য
১ শুধু ফুল নয়, খোঁপাও বাসি হয়ে যায়।
২ ভুল পথে চলার অভ্যাস। তাই, রাস্তাটাকে পকেটে পুরে চলি হারিয়ে যাবার ভয়ে।
৩ কেমন তোমার চুম্বন? আলজিভ ছোঁয় না।
৪ তোমাকে দেখলেই পেট ভরে যেতো। কোন অনাহারী তোমার প্রেমে পড়ুক।
৫ আমি নই; পথই হারিয়ে গেছে। নারীর পদছাপে খুঁজেছে সময়ের ঘন্টা, অন্যকে ভালোবেসে।
৬ সর্বত্র আমি ঠোঁট বিছিয়ে রাখি। তুমি কোথায় পা রাখবে?
৭ শামুকের স্বভাব নিয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখি। তবু নাকি কারো কারো কেটে যায় পা। চোখে ঔত্সুক্য ছিল, ভেজা প্রেম-ঠোঁটের ঔদার্য কারো চোখে পড়লো না।
৮ সিগারেট শেষ হয়ে গেলে দেশলাই খাবো। প্রেমিকা বদলে যাবে? তবে প্রেমের কাছে যাবো।
৯ চলার পথ সোহাগের শরীর পালকে ভরে দিয়েছি; প্রমত্ত হবে তোমার স্বামী। আমাকে পুড়িয়ে দাও বাহিরের অগ্নিতে, অন্তর্গত আগুনে জ্বালিয়োনা নিশিদিন। চিন্তায় আমি দুরূহ-বহুগামী।
১০ কেমন প্রেমিক আমি? ভালবেসে আজো হইনি উন্মাদ।
১১ একা একা কোথায় যাচ্ছো? কেন, রাস্তাটাকে এগিয়ে দিচ্ছি।
১২ . নিজেকে নিজের জিজ্ঞাসা: কী হতে চাও? অনেক কিছুই। কবি, প্রেমিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, জননেতা এমন কী পিতা। গোপনে কালোবাজারি হতেও আপত্তি নেই।
আশ্চর্য উপলব্ধি: সত্য বলছি, কখনো মানুষ হতে চাইনি।
১৩ . সম্ভোগ উত্তর শুধাল কবোষ্ণ প্রেমিক, ‘গতকাল রাতে কেমন ছিলে?’ ‘জাবর কাটছো কেন পুরুষ?’ বলল নারী, ‘আমি তো নীচেই থাকি মিলনে মিছিলে।’
১৪ . মিলনে আসে না তৃপ্তির অবসাদ সঙ্গম তাই হানে প্রতিবাদ ভোগের উঠোনে পড়ে থাকে জীবন্ত শব।
হাত ছুঁয়ে স্মৃতিতে বসে থাকা, এক ফোটা জল টলমল সোনা। করতলে তবু পাবার বাসনা- এই সত্য। প্রেম স্বপ্ন প্রতিশুনি সব মিথ্যে, কলরব।
বিপরীত কামশাস্ত্র
ভরাপেটে মিলন হানিকর;
বলেছেন বাত্স্যায়ন।
একথা শুনে কলিমুদ্দিন কয়:
আমাগো ঘরে ভাত নাই,
তাই
বউরে ঠাপাই।
হাড়জিরজিরে বউ আমার,
একান্ত আহার।
খোঁপা খুলে দাও
খোঁপা খুলে দাও।
অলক অরণ্যে খুঁজি অলৌকিক সোনা
নিঃশব্দ নির্ঝরে নিবিড় ডুবিয়ে পা হোক মিথ্যের জালবোনা
সাংসারিক আগুনে পুঁড়ে গেল হরপ্পামনোদারো
জ্বেলেছি অগ্নি-আমিও পুড়েছি ঘর অন্য কারো
ভালবেসে মাটি হবো; পোড়ামাটি ছাই
বিবিক্ত মনে-দ্বিধান্বিত পদসঞ্চালনে তবু প্রেম আছে
—তোমাকেই চাই
অনুধ্যান স্বপ্নে ফলে না শ্রমের সম্মান
কাঁকন মাটি হলে ফলাতাম সোনামুখী ধান
ধানের শীষে নাচে পুরনো বোধ-স্বপ্ন, বঙ্কিম তাকায় নারী
তিনবেলা আহার্য-জল গ্রহণ করি; তবু আটাশের অনাহারী
তোমাকে পেলে শরীরে খুজে নেবো মাটি-সোনা-জল
তোমার দৃষ্টি রাঁজহাস, পায়ে চলা পথে জ্বলুক
শিশির টলমল।